ইনসাইড পলিটিক্স

‘কোনো জাতি এক ব্যক্তি দ্বারা সৃষ্টি হয়নি’


প্রকাশ: 12/03/2022


Thumbnail

কোনো জাতি এক ব্যক্তি দ্বারা সৃষ্টি হয়নি জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধকে আমরা এক ব্যক্তির ইতিহাসে পরিণত করেছি। কিন্তু কোনো জাতি এক ব্যক্তি দ্বারা সৃষ্টি হয়নি। দেশ স্বাধীনের পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যারা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন সবার অবদান রয়েছে। প্রবাসী এডভাইজার তাজউদ্দীন আহমেদ, মাওলানা ভাসানী, মুজাফফর আহমেদসহ সবারই অবদান রয়েছে।

আজ শনিবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ স্মৃতি পরিষদ সভাটির আয়োজন করে।

জাফরুল্লাহ বলেন, যখন আমি আগরতলায় ফিরে আসতাম তখন তাজউদ্দীন ভাই বলতেন, এ দেশ যখন স্বাধীন হবে তখন হয়তো আমি থাকবো না। এটাই হলো জাতির দুর্ভাগ্য। যারা জাতিকে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা সব সময় স্মরণযোগ্য হয় না। সেই একই অবস্থা হয়েছে আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মওদুদের এবং আমাদের প্রবাসী সরকার তাজউদ্দীন আহমেদের ক্ষেত্রে। আমাদের তাদের মনে রাখা উচিত।

তিনি বলেন, মানুষের মস্তিষ্ক সবসময় সব কিছু মনে রাখতে পারে না, অনেক কিছুই ভুলে যায়। তাই দেশের ইতিহাস নিয়ে বার বার বলতে হবে। ১৯৭৪ সালে দুঃশাসনের কারণে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। অমর্ত্য সেন তার বইয়ে লিখেছেন। সে বছর সবচেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভিক্ষ হওয়ায় সেখানে তিন লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি আবারও শোনা যাচ্ছে। অনাহারে মারা যাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু অর্ধ আহার ও অপুষ্টিতে আছে।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্মরণে জাফরুল্লাহ বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ইংল্যান্ডে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে যারা ইংল্যান্ডে যেত তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা নিয়ে সেখানে তিনি আন্দোলন করছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যারিস্টার মওদুদ এবং আমিনুল ইসলাম প্রবাসী সরকারকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।

মওদুদ আহমদকে স্মরণ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আমরা দুজন দুই দল করতাম। কিন্তু সম্পর্ক ছিল আন্তরিক ও পারিবারিক। মওদুদ আহমেদ ৫২ সালে ঢাকা কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ছাত্র রাজনীতি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এখন কেউ কেউ অস্বীকার করতে চাইছে। ৭৪ সালের জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরশাদের আমলে কারাগারে ছিলেন, বিএনপির আমলেও গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি কারাবাস নিয়ে বই লিখেছেন।

তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি একজন দক্ষ মানুষ ছিলেন। আমরা তাকে সম্মান দিতে পারিনি। বর্তমান সরকার তাকে অসম্মান করেছে। এ সরকার কারও অবদান মূল্যায়ন করে না। কাউকে মর্যাদা দিতে রাজি নয়। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ও ভাষা আন্দোলনের সমস্ত ইতিহাস একটি পরিবারের কাছে বিলিন করা হচ্ছে। কারও একক অবদানে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রায়ই দেখি বড় বড় দলের নেতারা তাদের নেতাদের নেতৃত্বের ওপর সন্তুষ্ট না। কিন্তু সেই নেতা যখন মঞ্চে উঠে, তখন তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো কথা বলে না। একটা দেশ এরকম করে গড়ে উঠতে পারে না।

স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি মো. আবদুল মতিন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭