বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের প্রথম সংলাপে দেশের ৩০ জন শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাদের মধ্যে আমিসহ ১৩ জন উপস্থিত ছিলাম। যেহেতু গত ৩০ বছর ধরে নির্বাচন নিয়ে আমি গবেষণা করে আসছি, ফলে এ সংলাপের ব্যাপারে আমার আগ্রহ ছিল প্রবল। গত ৫০ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর যতগুলো সংলাপ হয়েছে, এবারই প্রথম বারের মতো শিক্ষাবিদ ক্যাটাগরিতে স্টেকহোল্ডার হিসেবে চিহ্নিত করে শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এটি একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে আমি মনে করি। ভবিষ্যতে এ ধারাটি অব্যাহত থাকবে, এটি আমাদের প্রত্যাশা।
শিক্ষাবিদদের সাথে ইসির বৈঠক, ৩০ জনের মধ্যে ১৭ জনের অনুপস্থিতি, নতুন সিইসির চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। পাঠকদের জন্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।
ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, আমাদের সমাজে যারা শিক্ষা পেশায় আছেন, তাদেরকে সমাজে সবসময় অপাঙ্ক্তেয় করে রাখার একটি চেষ্টা আছে। চীনা সমাজে ঐতিহাসিকভাবেই আমরা দেখেছি জ্ঞানী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ মূল্য দেয়া হয়। তবে বাংলাদেশে শুনতে হয়তো কটু মনে হবে কিন্তু আমাকে বলতেই হবে জ্ঞানী ব্যক্তিরা অনেকাংশেই করুণার পাত্র। সেজন্য ইসির এই আমন্ত্রণ আমাদের জন্য একটি নতুন সংস্কৃতি চালু হলো, এতে কোনো সন্দেহ নেই এবং এজন্য নবগঠিত ইসির প্রতি রইলো আমাদের কৃতজ্ঞতা।
৩০ জন শিক্ষাবিদের মধ্যে ১৭ জনের অনুপস্থিতি নিয়ে ড. কলিম উল্লাহ বলেন, এই ১৭ জনের মধ্যে দুই জনের কথা আমি জানি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, এ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে যদি এ ধরণের ধারা চালু থাকে, তাহলে কেউ যদি দেশে বা দেশের বাইরে অবস্থান করে থাকেন তাহলে তাকে অনলাইনে সংযুক্ত করা যেতে পারে।
শিক্ষাবিদদের সঙ্গে ইসির বৈঠকটি একটু আগে আগে শুরু হয়ে গেল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে রোজা চলে আসছে। রোজার সময়ে আমরা জানি যে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণেই দিন ছোট হয়ে আসে। কর্মঘণ্টা কমে যায় এবং এ ধরণের কার্যক্রমগুলো সাধারণত ঈদের পরই হয়ে থাকে। যেহেতু কিছুটা সময় হাতে আছে, সেহেতু ইসি কিছু একটা দিতে চাচ্ছেন। সেই কারণেই বোধহয় তারা এ উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন।
ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, আমাদের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা নির্বাচন কমিশনের জন্য। বিগত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে এই নির্বাচন। কারণ এই কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্কালে এবং দায়িত্ব গ্রহণের পর পর সিইসি সাংবাদিকদের বলেছেন যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাই হবে তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি তিনি সঠিকভাবেই উপলব্ধি করেছেন। এই কাজটি যদি না করতে পারেন, অর্থাৎ ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো যদি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন পর্যবসিত হয়, তাহলে কপালে খারাপই আছে।