ইনসাইড টক

‘বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকার একক আধিপত্য থাকবে না’


প্রকাশ: 15/03/2022


Thumbnail

চতুর্থ বারের মতো ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার বৈঠক প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, প্রথম দিকে মনে হচ্ছিল রাশিয়া খুব তাড়াতাড়ি ইউক্রেন দখল করে নিবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে রাশিয়া চেষ্টা করছে সমঝোতার মাধ্যমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ করতে। এখানে যেহেতু অনেক দেশ জড়িত, বিশেষ করে আমেরিকা কি চায় এটিও একটি বড় বিষয়।

রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার বৈঠক, চলমান সংঘাত, সমঝোতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে শেষ পর্যন্ত রাশিয়া এবং ইউক্রেনকেই ভুগতে হবে। কারণ তারা প্রতিবেশী দেশ। অন্যরা যতই হইচই করুক না কেন, রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন কেউই তো প্রতিবেশী পরিবর্তন করতে পারবে না। তারা যখন মিলিত হবে, সমঝোতায় আসবে তখনই সমাধান হবে। আমাদের নজর রাখা দরকার যে, ইউক্রেন এবং রাশিয়া আবার কখন বৈঠকে বসবে এবং কি ধরণের সিদ্ধান্ত নিবে, সেটার উপরই নির্ভর করবে এই যুদ্ধ কতদিন থাকবে।

তিনি আরও বলেন, যে কোনো দেশেই বিভিন্ন ধরণের ফোর্স বা শক্তি থাকতে পারে এবং ইউক্রেনের ভেতরেও অনেকগুলো শক্তি আছে। ইউক্রেনের অনেকগুলো অঞ্চল রুশ ভাষাভাষী এবং মনস্তাত্বিকভাবে রাশিয়ান। যেসব জায়গায় রাশিয়া যুদ্ধ করছে, সেটি ওই পরিপ্রেক্ষিতেই হচ্ছে। ইউক্রেনের কিছু জায়গায় রাশিয়া ইতোমধ্যে কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে, কিছু জায়গায় এখনও পারেনি বা সময় নিচ্ছে। যেকোনো যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য এটি অস্বাভাবিক নয়।

রাশিয়া-বেলারুশের ব্যাংক লেনদেন বন্ধের প্রভাব নিয়ে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, রাশিয়া-বেলারুশের ব্যাংক লেনদেন বন্ধে সাময়িক ঝামেলা হতে পারে। আমি মনে করি রাশিয়া-বেলারুশের ব্যাংক লেনদেন বন্ধ করা বাইডেন প্রশাসনের একটি ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ এ সিদ্ধান্তের ফলে একাধিক সুইফট তৈরি হবে। ইতোমধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। ফলে বিভিন্ন সুইফট তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। কেননা একটি সুইফট থাকলে আমেরিকা ইচ্ছা করলেই বন্ধ করে দিতে পারবে। তারা করেছেও। এসব কারণে একাধিক সুইফট হবে।

তিনি আরও বলেন, ভারতও এখন সুইফট বানিয়ে ফেলবে। চীনেরও না বানানোর কোনো কারণ নেই। রাশিয়া ২০১৪ সালেই বানিয়েছে। তারা জানতো যে এই ধরণের একটি অবস্থা হবে। তারা ইতোমধ্যে তাদের নিজস্ব সুইফটে লেনদেন করছে। তাদের সুইফট ব্যবহারকারী সদস্য সংখ্যা এতদিন কম থাকলেও এই সংকটের কারণে বিভিন্ন ব্যাংক বিভিন্ন সুইফটের সাথে যোগাযোগ রাখবে। ফলে আমি মনে করি আমেরিকার সুইফটের যে আধিপত্য ছিল এতদিন, সেটাই কমে যাবে ভবিষ্যতে। সব মিলিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার পর বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকার যে একক আধিপত্য ছিল, সেটি আর থাকবে না।

নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে বৈঠকে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অন্য কোনো কারণে নয়, বৈঠকের দিন আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ কনফারেন্স ছিল। আগে থেকেই এটি নির্ধারিত ছিল এবং আমি অংশগ্রহণ করবো বলে আগেই জানিয়ে ছিলাম। এ জন্য আমি ইসির বৈঠকে থাকতে পারিনি। বিষয়টি আমি ইসিকেও জানিয়েছিলাম। এখানে বয়কট করা বা অন্য কোনো কারণ নেই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭