ইনসাইড পলিটিক্স

‘অযোগ্য মন্ত্রীদের বাদ দিন’


প্রকাশ: 15/03/2022


Thumbnail

দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আজ ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ১৪ দলের শরিকভূক্ত দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জাসদসহ বাকি সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচনা বক্তব্য রাখেন। এরপর ১৪ দলের নেতারা তাদের নানা রকম অভাব-অভিযোগ, আবেগ-অনুভূতির প্রকাশ ঘটান। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তারপর প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের নেতাদের সাথে আর বৈঠক করেননি। এমনকি ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি যে মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল, সেই মন্ত্রিসভাতেও আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো মন্ত্রীর জায়গা হয়নি। ১৪ দলের নেতারা একটু মনঃক্ষুণ্ণ ছিলেন, একটু আবেগ আপ্লুত হয়েছিলেন এই বৈঠকে। তাদেরকে গুরুত্ব না দেওয়া এবং তাদেরকে সরকার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়ার বিষয়টি ১৪ দলের কোনো কোনো নেতা উচ্চারণ করেন। তবে পুরো বৈঠকজুড়ে আলোচনায় এসেছিল অযোগ্য মন্ত্রীদের প্রসঙ্গটি। কিছু কিছু মন্ত্রীর লাগামহীন বক্তব্য এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন ১৪ দলের বেশকিছু নেতৃবৃন্দ। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন, অযোগ্য মন্ত্রীদের বাদ দিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এই বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে, সে প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন ১৪ দলের সব নেতা। ১৪ দলের একজন নেতা বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ করুন। এখন তেল এবং বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন অন্য একজন নেতা। ১৪ দলের একজন প্রবীণ নেতা দ্রব্যমূল্য নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তার প্রসঙ্গ তুলে বলেন যে, এ সমস্ত মন্ত্রীরা জনগণকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে এবং অপমান করছে। এই সমস্ত মন্ত্রীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন ১৪ দলের কোনো কোনো নেতা। ১৪ দলের নেতাদের কয়েকজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাই দেশ চালাচ্ছেন, তার জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং তিনি দেশকে সঠিক পথেই নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কিছু কিছু অযোগ্য মন্ত্রী সর্বনাশ ঘটাচ্ছে। এই সমস্ত কর্মহীন অযোগ্য মন্ত্রীদেরকে অবিলম্বে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেন। তারা ১৪ দলকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রিসভায় ১৪ দলের অন্তর্ভুক্তের বিষয়টি উল্লেখ করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এই বৈঠকে দীর্ঘদিন ধরে তাদেরকে না ডাকা এবং সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্যক্রমে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দকে গুরুত্ব না দেওয়ার প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়। তবে সবকিছু মিলিয়ে ১৪ দল যেন ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং ১৪ দলের কার্যক্রমের পরিধি যেন বৃদ্ধি পায়, সে প্রসঙ্গটি উঠে আসে। ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ দেশের বিরুদ্ধে দেশে-বাহিরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন এবং এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন। তারা বলেন যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি যদি বিভক্ত হয়ে যায় তাহলেই সরকার দুর্বল হয়ে যাবে এবং সেটি হতে দেয়া যায় না। সামগ্রিক আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে ১৪ দলকে আরও সক্রিয়, কার্যকর করা এবং ভবিষ্যতে ১৪ দলের কার্যক্রমের পরিধি আরো বৃদ্ধি করার জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭