ইনসাইড বাংলাদেশ

আমলাদের কারণে বিতর্কিত হচ্ছে সরকার


প্রকাশ: 18/03/2022


Thumbnail

নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে সরকার। আর এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করছে আমলারা। গত কয়েক বছর ধরেই আমলাদের দ্বৈরত্ব এবং দাপট বেড়েছে। আমলাতন্ত্র জাঁকিয়ে বসেছে ক্ষমতাসীনদের চারপাশে। আর এই আমলাদের কিছু কিছু সিদ্ধান্তের কারণেই বিতর্ক তৈরি হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে। অতি সম্প্রতি স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তিতে আমলাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

একাধিক সূত্রগুলো বলছে যে, এই স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদান করা হচ্ছে আমলাদের নিয়ন্ত্রণে। আমলারা যেভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেভাবেই এই পুরষ্কার ঘোষণা করা হচ্ছে এবং একটি বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। আমির হামজাকে এবার স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে। অথচ তিনি তার জীবনে উল্লেখযোগ্য কোনো সাহিত্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে একজন আমলা সুপারিশ করেছিলেন বলে জানা যায়। শুধু স্বাধীনতা পুরষ্কার নয়, বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ক্ষেত্রেও আমলাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা দ্রব্যমূল্যের এ পরিস্থিতিকে ক্রমশ নাজুক অবস্থায় নিয়ে গেছে।

সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক মন্ত্রী বলছেন যে, আমলারা একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যার পরিণতি হচ্ছে জিনিসপত্রের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। টিসিবি নিয়েও আমলাদের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে এবং সেই দায়িত্বহীনতার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে, আমলাদের মধ্যে এক ধরণের বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেখা যাচ্ছে। আমলারা যেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে, এরকম একটি মনোভাব জনগণের মধ্যে স্পষ্ট হচ্ছে এবং এটির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সরকারের ওপর। আমলাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা বলা হলেও গত এক বছরে আমলারা এখন পর্যন্ত সম্পদের হিসাব দেয়নি এবং এ ব্যাপারে তারা নানা রকম অজুহাত দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ আমলাদের বিরুদ্ধে উঠলেও সে অভিযোগগুলোর তদন্ত যথাযথভাবে হচ্ছে না বলেও কোনো কোনো মহল অভিযোগ করেছেন। আমলাদের কারণে সরকারের সমস্যা যে বহুমাত্রিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে, তার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় পর্যায়েও। জেলা প্রশাসকরা এখন সর্বেসর্বা হয়ে গেছেন। নির্বাচনের আর বাকী আছে দুই বছরেরও কম সময়। অথচ এখন পর্যন্ত এমপিদেরকে কোনো ধরণের ভূমিকায় রাখতে চাচ্ছে না মাঠ প্রশাসন। ফলে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের দূরত্ব বৃদ্ধি হয়েছে। এছাড়া পৌরসভাগুলোতেও এখন আমলাদের কর্তৃত্ব কায়েম হয়েছে। ফলে রাজনীতিবিদদের মধ্যে এক ধরণের আমলা বিরোধী মনোভাবে তৈরি হচ্ছে। 

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু বিএনপি-জামায়াত মনোভাবাপন্ন ব্যক্তির পদোন্নতি হচ্ছে। তারা প্রশাসনের কেন্দ্র বিন্দুতে আসছে। আগামী নির্বাচনে এদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তাছাড়া, এখন তারা এমন সব কর্মকাণ্ড করছেন, যেগুলো সরকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে জনগণের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরি, জনগণকে সরকার থেকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে আমলাদের একের পর এক সিদ্ধান্ত দায়ী বলে অনেকে মনে করছেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, নির্বাচনের আগে আমলাদের কর্তৃত্ব থেকে সরকারকে মুক্ত হতেই হবে এবং একটি রাজনৈতিক অবয়ব নিয়ে বাকিটা সময় কাজ করতে হবে। না হলে আমলা নির্ভরতার মাশুল সরকারকে দিতে হবে বলেই অনেকে মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭