ইনসাইড টক

‘সরকারের পক্ষে জোর করে দাম কমানো মুশকিল’


প্রকাশ: 21/03/2022


Thumbnail

বাংলাদেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ। নিজ কর্মগুণে তিনি পৌঁছে গেছেন সফলতার অনন্য শিখরে। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে তিনি এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। কাজ করছেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট হিসেবে। এর আগে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে কর্মরত ছিলেন ড. নাজনীন আহমেদ। চাকরি থেকে লিয়েন নিয়ে তিনি ইউএনডিপির দায়িত্বে এসেছেন। বিআইডিএসের গবেষক হিসেবে সামষ্টিক অর্থনীতি, শ্রমবাজার, শিল্প খাত, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, আঞ্চলিক সহযোগিতা, জেন্ডার ইত্যাদি বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন ড. নাজনীন। তিনি সরকারের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে পরিচালকসহ বিভিন্ন সময়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্যক্রমে সক্রিয় অংশ নিয়েছেন। তিনি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নে গঠিত অর্থনীতিবিদ প্যানেলের সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে গণশুনানি, বাংলাদেশের বাড়ন্ত মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে কথা হয় ড. নাজনীন আহমেদের। পাঠকদের জন্য ড. নাজনীন আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মো. অলিউল ইসলাম


বাংলা ইনসাইডার: প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে গণশুনানির বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

ড. নাজনীন আহমেদ: গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি-কমের বিষয় না, গ্যাসের ক্ষেত্রে একটিই দাবি হওয়া উচিত। সেটি হলো মিটারে গ্যাস ব্যবহার করা। যে যতটুকু ব্যবহার করবে, সে অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করবে। এখন গ্যাসের ফিক্সড মিটার না থাকার ফলে আমি যে কম-বেশি ব্যবহার করবো, সেই ব্যবস্থা নেই। সুতরাং গ্যাসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দাবি হওয়া উচিত সবার জন্য গ্যাসের মিটার সিস্টেম করা এবং প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করা। এটাই আসল কথা। এই যে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ, কিছুদিন পর পর মূল্য বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দিনশেষে সাধারণ মানুষেরই ভোগান্তি বাড়ে।

বাংলা ইনসাইডার: বাড়ন্ত মূল্যস্ফীতি কীভাবে আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে?

ড. নাজনীন আহমেদ: পণ্যের দাম বাড়া মানেই মূল্যস্ফীতি। পণ্যের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতির প্রবাহ বাড়তে থাকবে। এটি আলাদা করে বলার তেমন কিছুই নেই। মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের কষ্ট তো বাড়ছেই।

বাংলা ইনসাইডার: বাংলাদেশের বাড়ন্ত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার?

ড. নাজনীন আহমেদ: মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করছে। ওএমএসের দোকানের সংখ্যাও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। 

বাংলা ইনসাইডার: সরকার দাম কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন?

ড. নাজনীন আহমেদ: আন্তর্জাতিক বাজারে  পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে সরকারের পক্ষে জোর করে দাম কমানো মুশকিল। আবার অনেক বেশি প্রণোদনা দেওয়াও সম্ভব না। কারণ সে প্রণোদনার ভার তো আপনার-আমার, আমাদের সকলকেই বইতে হবে। সুতরাং এই সময়ে অল্প আয়ের মানুষকে সরাসরি সাহায্য করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বাংলা ইনসাইডার: সরকারের কার্ডের মাধ্যমে রেশন দেওয়ার সুফল কী প্রন্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়া পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে?

ড. নাজনীন আহমেদ: সরকার কার্ডের মাধ্যমে রেশন দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বিতরণ প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। তবে প্রন্তিক পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগবে। কারণ আমাদের তো বিশাল জনগোষ্ঠী। এখন যেভাবে আগে ওএমএসে সস্তায় বিক্রি করছিল, সেটির আওতা পর্যায়ক্রমে বাড়াতে হবে। তবে সবার কাছে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে। হঠাৎ করে জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে, বিষয়টি এমন নয়। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সেই কারণে স্থানীয় বা দেশিয় বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে। 

বাংলা ইনসাইডার: এই সংকট কীভাবে মোকাবিলা করবো?

ড. নাজনীন আহমেদ: এটি মোকাবিলা করতে হলে যেসব জায়গায় আমাদের অপচয় হচ্ছে, সেগুলো কমাতে হবে। যেমন আলু চাষীরা এবার দাম পায়নি। এটি হতে দেওয়া যাবে না। সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হবে এবং একই সাথে এ ব্যবস্থাটিকে উন্নতর করতে হবে।

বাংলা ইনসাইডার: আপনাকে ধন্যবাদ।

ড. নাজনীন আহমেদ: আপনাদেরও অসংখ্য ধন্যবাদ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭