ইনসাইড হেলথ

বেড়েই চলেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে শয্যা খালি নেই


প্রকাশ: 27/03/2022


Thumbnail

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই তীব্র গরম, বিশুদ্ধ পানির অভাবসহ নানাবিধ কারণে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ জেলায় জেলায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক রোগী। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জানিয়েছে, ডায়রিয়ার রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। খাদ্যাভ্যাসে গাফিলতি, বাহিরের ভেজালযুক্ত খাবার খাওয়াসহ আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এ বছর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

আইসিডিডিআরবি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। হাসপাতালের বাইরে সাতটি তাঁবুতেও রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। রোগীদের বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্ক। তবে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়ে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। এর মধ্যে জরুরি বিভাগের সামনে রোগী ও স্বজনদের ভিড় বেশি। রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে ভর্তি করতে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও দৌড়ঝাঁপ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইসিডিডিআরবির এক চিকিৎসক গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ঘণ্টায় ৬০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। আইসিডিডিআরবির ৬০ বছরের ইতিহাসে এত রোগীর চাপ তারা দেখেননি। ফলে হাসপাতালের শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় তাঁবু টানিয়ে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে আইসিডিডিআরবি। এখন আইসিডিডিআরবিতে প্রায় ১৩০০ রোগী ভর্তি আছেন।

আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন) এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানান, হাসপাতালে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসাসেবা বিষয়ে আজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন চিকিৎসকরা।

আইসিডিডিআরবি সূত্র বলছে, সারাবছর দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে রোগীর সংখ্যা কিছু বাড়ে। সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।

ডায়রিয়া প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, কখনোই বাইরের খাবার খাওয়া যাবে না। পানি ফুটিয়ে খেতে হবে। শিশুদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। খাওয়ার আগে অবশ্যই সুন্দর করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। ঘরেও বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। ঘরের খাবারও স্বাস্থ্যকর হতে হবে। খাবার দীর্ঘক্ষণ বাইরে রেখে তারপর ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে না। খাবার রান্নার পর ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। 

ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার বিষয়ে ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ডায়রিয়া হলে শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দেয়। ফলে এ সময় স্যালাইন ও ডাবের পানি খেতে হবে। তা না হলে ডিহাইড্রেশনের কারণে কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ডায়রিয়া হলে নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। আর ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে বারবার মায়ের বুকের দুধ খেতে দিতে হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭