কালার ইনসাইড

বহুরূপী নিপুণ


প্রকাশ: 27/03/2022


Thumbnail

চলচ্চিত্রের শিল্পী সমিতির নির্বাচকে ঘিরে জল কম ঘোলা হয়নি। 'টক অব দ্য' কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও চিত্রনায়িকা নিপুণের দ্বন্দ্ব। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা। জায়েদ খান নাকি নিপুণ কে, বসতে যাচ্ছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে? এনিয়ে বেশ কয়েকবার শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নির্দেশ দিয়েছেন  দুজনের কেউই পরবর্তীর নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে পারবে না।


তবে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে কার্যক্রম চালান ভোটে পরাজিত নিপুণ আক্তার। এমন অবস্থায় আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছিলেন ভোটে বিজয়ী চিত্রনায়ক জায়েদ খান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থার আদেশ কঠোরভাবে পালন করতে জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তারকে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

১৪ মার্চ (সোমবার) নিপুণের বিরুদ্ধে আনা আদালত অবমাননার অভিযোগ শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। কিন্তু তারপরও ১৭ মার্চ শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে দেখা গেছে। সর্বশেষ শনিবার (২৬ মার্চ) চেয়ার বসা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন সহ-সাধারণ সাইমন সাদিক। এ সময় সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে মিটিং করেছেন।



বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার তৈরি হলে নিপুণ নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি আদালত অবমাননার মতো কিছুই করিনি। আমি সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নয়, এক সাধারণ শিল্পী ও সমিতির সদস্য হিসেব সমিতির কার্যক্রম চালাচ্ছি।


নিপুণের ভাষ্য, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ এখনো অমীমাংসিত। কিন্তু সমিতির কার্যক্রম তো থেমে থাকবে না। প্রতিমাসে সমিতির স্টাফদের বেতন পরিশোধ, সমিতির পক্ষ থেকে নানা আয়োজন শিল্পীদের সাহায্য সহযোগিতা  সবই তো চলছে। এগুলো আমার নিজের টাকায় নিজে উদ্যোগী হয়ে করছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে অতীতের সবচেয়ে বড় আয়োজন করলাম এবার। এখানেও শিল্পী সমিতির বিশাল অবদান রাখছে।

এদিকে কিছুদিন আগে নায়ক সাইমন গণমাধ্যমকে বলেন, জায়েদ খানের করা আদালত অবমাননার মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে কিন্তু তা আদৌও সত্য নয়। পাশাপাশি গতকাল ২৬ মার্চ নিপুণকে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসিয়ে এক ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেছেন সাইমন। যেখানে সাইমন নিপুণকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে নানা প্রশ্ন করেছেন। শুধু তাই নয় টেবিলে থাকা নেমপ্লেটেও দেখা গিয়েছে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণের নাম।

এদিকে নিপুণের একি মুখে দুই ধরণের কথা শোনা যাচ্ছেন। কিছুদিন আগে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে তাঁর বসতে বাঁধা নেই বলে জানিয়েছেন। কিন্তু আজ বলছেন ভিন্ন কথা। কিন্তু তাঁর বেশ কিছুদিনের কার্যক্রমে সহজেই বোঝা যাচ্ছে আদালতের নির্দেশ তোয়াক্কা না করেই তিনি তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি গণমাধ্যমকে নিপুণের দেয়া, নিজের টাকায় নিজে উদ্যোগী হয়ে কাজ করছি এমন মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পূর্বে শিল্পী সমিতিতে তেমন ভাবে সক্রিয় ছিলেন না তিনি। তবে করোনার সময় শিল্পী সমিতির মাধ্যমে তিনি বেশ কিছু কাজ করেছেন। তবে সেই মুহূর্তেই তাঁর মাথায় আসে নির্বাচন করার কথা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আলাদা হয়ে কাজ শুরু করে। অবশেষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েও নানা যুক্তি দেখিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

এদিকে অনেকেই বলছেন নিপুণের টার্গেট জাতীয় নির্বাচন। শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে তাঁর যে জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে সেটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই হয়তো জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার পায়তারা করছেন বলে অনেকের ধারণা।

আদালতের এমন নির্দেশের পর নিপুণের বাড়াবাড়িতে বিরক্ত সাধারণ জনগণও। নির্বাচনের শুরুতে দেশের মানুষের কাছে নিপুণের যে গ্রহণযোগ্যতা ছিলো তা দিনে দিনে কমতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখলেই তা দেখা যায়।

কিছুদিন আগে নিপুণের বেশ কিছু সংবাদের নিচে অনেকেই নানা ধরণের নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। ওয়াহিদ ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, নিপুণকে ভালো ভেবে ছিলাম কিন্তু তাঁর বর্তমান কর্মকাণ্ডে উল্টো মনে হচ্ছে। আবার রাশেদুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, নিপুণের তো লজ্জা নেই। হেরে গিয়েও কিভাবে চেয়ারে বসতে চায়।


নিপুণের বর্তমান কর্মকাণ্ডে বেশ বেপরোয়া হয়ে ওঠার পরিচয় পাওয়া যা কিনা তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা সৃষ্টি করছে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। ২৮ জানুয়ারি (শুক্রবার) চলচ্চিত্র শিল্পীদের দ্বিবার্ষিক এই নির্বাচনে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর আপিল বোর্ড জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে একই পদে জয়ী ঘোষণা দেয়। তাই পদটি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তারা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭