ইনসাইড পলিটিক্স

হারিছ চৌধুরীকে নিয়ে নতুন ধুম্রজাল


প্রকাশ: 01/04/2022


Thumbnail

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর রহস্যজট এখনো যেন খুলছে না। হারিছ চৌধুরী মাহমুদুর রহমান নামে পরিচয় পত্র নিয়েছেন, পাসপোর্ট নিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাহমুদুর রহমান নামেই এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, গাজীপুরে তাকে দাফন করা হয়েছে। ইত্যাদি বক্তব্য অনুসন্ধানী রিপোর্টের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু ইন্টারপোল এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়। বরং তারা মনে করছে, এটি একটি নতুন পরিকল্পনা নিজেকে ইন্টারপোলের লাল তালিকা থেকে সরানোর জন্য হারিছ চৌধুরীর একটি কূটকৌশল। হারিছ চৌধুরী মারা গেছে, এমন কোন তথ্য-প্রমাণের সাথে একমত নয় ইন্টারপোল। আর এ কারণেই ইন্টারপোল তার লাল তালিকায় আবার হারিছ চৌধুরীর নাম উঠিয়েছে।

একাধিক সূত্র বলছে যে, ইন্টারপোল হারিছ চৌধুরীর পুরো ঘটনা অনুসন্ধান করে দেখতে পেয়েছে যে এখানে প্রচুর ফাঁকফোকর আছে এবং একটি সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে হারিছ চৌধুরীকে মৃত বানানোর চেষ্টা করছে এবং এর সঙ্গে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে, বিএনপিপন্থী কিছু সাংবাদিক এবং আরও কিছু মহল জড়িত রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইন্টারপোলের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, ২০১০ সালে হারিছ চৌধুরীকে ভারতে দেখা গেছে এবং সে সময়ে ভারতের একটি গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টারপোলকে নিশ্চিত কত দেয় যে, হারিছ চৌধুরী সিলেটের একটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এমনকি ভারতের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সে সময় হারিছ চৌধুরীর সাথে কথা বলেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রশ্ন হলো যে, হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর পর যেসব অনুসন্ধানে খবর বিএনপি মনোভাবপন্ন একটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে সেই খবরে বারবার বলা হয়েছে হারিছ চৌধুরী কখনোই ঢাকার বাইরে যাননি। আওয়ামী লীগের কথা বাদ দেওয়া হোক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় হারিছ চৌধুরী ঢাকায় থাকবেন এটি অসম্ভব এবং অবাস্তব একটি ভাবনার বিষয়। এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাছাড়া ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এরকম তথ্য পাওয়া গেছে যে, হারিছ চৌধুরী ভারতে অবস্থানকালে সেখানে আধার কার্ড এবং নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেছিলেন। সেখানে তার নাম তিনি পাল্টে শুভাশিস রেখেছিলেন।

ইন্টারপোলের অনুসন্ধানে তৃতীয় যে বিষয়টি পাওয়া গেছে তা হলো, হারিছ চৌধুরী যে লন্ডনের ছিল এ সংক্রান্ত একাধিক ছবি এবং ভিডিও ইন্টারপোলের কাছে এসেছে। হারিছ চৌধুরী তারেকের নেতৃত্বে অন্তত দুটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এমন নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সেটি নিশ্চিত করেছেন লন্ডনে থাকা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। হারিছ চৌধুরী মৃত্যুর গুজব যখন ছড়ানো হয় তখন প্রথম বলা হয়েছিল যে হারিছ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছে। পরবর্তীতে এটি বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। কারণ, লন্ডনে একজন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার পরিচয় জানা যাবে না এটি অবাস্তব এবং অসম্ভব ব্যাপার। আর এই কারণেই হারিছ চৌধুরী যে লন্ডনে মারা যাননি, তিনি বাংলাদেশে মারা গেছেন এটি প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। সেই চেষ্টা হিসেবে মাহমুদুর রহমান নামটি নিয়ে কাজ চালানো হয়।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, এভারকেয়ার হাসপাতালে সত্যি সত্যি মাহমুদুর রহমান নামে একজন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। সেই সময় তিনি পান্থপথে থাকতেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন যে, বিএনপি-জামায়াত এই ধরণের বানোয়াট গল্প বানাতে ওস্তাদ। তারা যেমন ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল নিপুণভাবে, ঠিক তেমনিভাবে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর নাটকও সাজিয়েছে। যদিও হারিছ চৌধুরীর পরিবার দাবি করছে তিনি আসলেই মারা গেছেন। কিন্তু হারিছ চৌধুরী আসলে মারা গেছেন নাকি তিনি অন্য পরিচয় নিয়ে এখন অন্য জায়গায় রয়েছেন, এ নিয়ে রহস্যের জট এখনও খুলছে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭