ইনসাইড বাংলাদেশ

ঢাকা সাথে অংশীদারিত্ব আরো শক্তিশালী করতে আগ্রহী ওয়াশিংটন


প্রকাশ: 05/04/2022


Thumbnail

বাংলাদেশের সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করতে এবং সামনের দিনগুলোতে ঢাকার সাথে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ বাড়াতে আহ্বান করেছে ঢাকা।

সোমবার (৪ এপ্রিল) ঢাকা-ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এই প্রত্যাশ এবং আগ্রহের কথা  জানায় উভয় দেশ। 

ওয়াশিংটন সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো। ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটে হওয়া বৈঠকে স্থান পায় ঢাকা-ওয়াশিংটনের ৫০ বছরের সম্পর্কের পর্যালোচনা, সামনের দিনগুলোতে একসঙ্গে পথ চলা, বিনিয়োগ, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, খুনি রাশেদকে ফেরত, রোহিঙ্গা ইস্যু, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, ধর্মীয় স্বাধীনতা, কোভিড সহযোগিতাসহ শ্রম অধিকার নিয়ে আলোচনা।

ড. মোমেন বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ সত্যিই অনেক অর্জন করেছে। আমাদের চলার পথে যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে সঙ্গে ছিল। সবসময় মার্কিন সহযোগিতা আমাদের সঙ্গে ছিল। বাংলাদেশ এখন আর সেই তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। সম্ভবনাময় অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশে জ্বালানি খাতের বাইরেও মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর সময় এসেছে। আমরা ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরও উন্নত ও দৃঢ় সম্পর্কের অপেক্ষায় রয়েছি।

মোমেন- ব্লিঙ্কেনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও জোরদারে একসঙ্গে কাজ করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র আনন্দিত। আমরা পরবর্তী ৫০ বছরের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। সেখানে আলোচনার বিষয়ে মোমেন জানান, যুক্তরাষ্ট্র অবকাঠামো খাতে তেমনভাবে বিনিয়োগ করেনি। আমি ওনাদের অনুরোধ করেছি এখানে যুক্ত হওয়ার জন্য। বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইটি খাতে তাদের বিনিয়োগের আহ্বান করেছি। ভ্যাকসিন সহায়তা করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।

শ্রম অধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, তারা বাংলাদেশের শ্রম অধিকার আরও উন্নত করার সুপারিশ করেছেন। আমরা তাদের শ্রম অধিকার বিষয়ে বাংলাদেশে যেসব উন্নতি করেছে সেসব বিষয় সম্পর্কে জানিয়েছি। তাদের বলেছি, আমরা আইএলও এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পরামর্শ করে শ্রম অধিকার খাতের উন্নয়ন করছি। জবাবে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আইএলও'র সঙ্গে কাজ করলেই সেটিকে আমরা মোটামুটিভাবে মানদণ্ড হিসেবে মেনে নেই।

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে র‌্যাবে লোকজন কাজ করতে আগ্রহ হারাবে। আমি খুব খুশি হব যদি আপনার পুনর্বিবেচনা করেন। জবাবে ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, এর একটি প্রসেস আছে এবং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি হবে।

খুনি রাশেদ চৌধুরীকে প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় তোলা হয়েছে বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, বৈঠকে রাশেদ চৌধুরীর বিষয়টি তুলেছি। আমি বলেছি, একজন খুনিকে আশ্রয় দেওয়াকে আমেরিকান জনগণ পছন্দ করবে না। এটা নিয়ে আপনাদের চিন্তা করা উচিত। এ প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করার কথা বলেছি।

বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে বিষয়গুলোতে গুরত্ব দিয়েছেন সেগুলো ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেন দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। সেখানে বলা হয়, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় চলমান সহযোগিতা, গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের চাহিদা মেটাতে এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তার কথা তুলে ধরেন। সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং ধর্মের স্বাধীনতা রক্ষায় গুরুত্ব দেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তরাষ্ট্র অনু বিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক ইসলাম শাতিল উপস্থিত ছিলেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭