ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার ভিশনারী নেতৃত্বের কারণেই দক্ষিণ এশিয়ায় এগিয়ে বাংলাদেশ


প্রকাশ: 07/04/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ SAARC (সার্ক) ভুক্ত একটি দেশ। সার্কভুক্ত দেশসমূহের আর্থসামাজিক উন্নয়ন বা অবনতি উভয়েই আমাদের মনে নাড়া দেয়। সম্প্রতি সার্কভুক্ত দুটি দেশ শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সমস্যা জটিলতর হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে অচল হয়ে পড়া শ্রীলঙ্কায় মন্ত্রীসভার সকল সদস্য পদত্যাগ করেছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে দেশটির প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার পর রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণের ভার সুপ্রিম কোর্টের উপর পরেছে। দুটি সমস্যাই নেতৃত্বে ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ।

নেতৃত্ব হল এমন এক "সামাজিক প্রভাবের প্রক্রিয়া যার সাহায্যে মানুষ কোনও একটি সার্বজনীন কাজ সম্পন্ন করার জন্য অন্যান্য মানুষের সহায়তা ও সমর্থন লাভ করতে পারে।"

নেতৃত্বে সফলতা ও ব্যর্থতা দুটোই রয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা নেতৃত্বে সফলতার একটি বড় গুন। এছাড়া অভিষ্ঠ লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে সঠিক পরিকল্পনা করার মত ‘দুরদর্শীতা‘ থাকা নেতৃত্বের একটি বৈশিষ্ট্য। 

ব্রিটিশ শাসিত দ্বিপরাষ্ট্র ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত 'সিলন' ১৯৭২ সালে শ্রীলঙ্কা নামকরণ হয়। ২০১৯ সালের গননা অনুযায়ী ২ কোটি ১৮ লক্ষের কিছু বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটি ২০০৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ আয়ের দেশ ছিল। দুই দশক আগে পর্যটন, ক্রিকেট, বন্দর ইত্যাদি ছিল শ্রীলঙ্কার ব্র্যান্ড। দেশটি ছিল সমৃদ্ধ। দুই দশক বাদে এখন শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হওয়ার পথে। দেশটিতে খাবারের অনিশ্চয়তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নানা সংকট। কাগজের অভাবে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধের মতো’ বিরল ঘটনার অবতারণা হয়েছে। দেশটিতে এখন শুধু হাহাকার। ঘরে চাল কেনার টাকা নেই, পাম্পে তেল নেই, হাসপাতালে ঔষধ নেই, ঘরে বাতি জ্বালানোর বিদ্যুৎ নেই। এই নেই আর নেই এর মাঝে সারা দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভ আন্দোলনে একে একে সব মন্ত্রীই করেছেন পদত্যাগ।

মূলত বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে বেসামাল করে তুলেছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে পর্যটন খাত ও প্রবাসী আয় ধাক্কা খাওয়ায় শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে। বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত দেশটির বিভিন্ন দেশের ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না তারা। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে, তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করার মতো বৈদেশিক মুদ্রা তাদের কাছে নেই।
বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে ২৫ বছর মেয়াদী মেগা প্রকল্প সমূহ গ্রহণ, দুর্নীতির কারণে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি অর্থব্যয়ের তুলনায় কম, বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে পর্যটন শিল্পে ধস এবং ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়ার কারনে রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায় প্রভাব পরেছে অর্থনীতিতে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘ ২৬ বছর গৃহযুদ্ধ থাকলেও অর্থনীতি এতটা ভেঙ্গে পড়েনি। করোনায় শ্রীলঙ্কার আশপাশের সব দেশকেই অর্থনৈতিক টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, কিন্তু কেউ তাদের মতো বেসামাল হয়নি। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের উৎসে রয়েছে নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা ও দুর্নীতি। 

১৯৪৭ সালে স্বাধীন ২১ কোটিরও অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত প্রায় ৮.৮১ লক্ষ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রাষ্ট্র পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত তার কার্যকাল সম্পূর্ণ করতে পারেননি। ২০১৩-এর দশক ধরে সামাজিক অস্থিতিশীলতার পরে, রেল পরিবহন এবং বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন, যেমন মৌলিক পরিসেবায় ম্যাক্রোম্যানেজমেন্ট এবং ভারসাম্যহীন সামষ্টিক অর্থনীতিতে গুরুতর ঘাটতিগুলি বিকাশ লাভ করেছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করা হয়েছে। টেলিভিশন টকশোতে বাংলাদেশের উন্নয়নের উদাহরণ দেখিয়ে বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চড়া মূল্যস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাড়তে থাকার কারণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকার তাদের জনসমর্থন হারিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি তালেবান নিয়েও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে দেশটি। এছাড়া ইমরান খান ও তাঁর দলের কর্মকাণ্ডের কারণে জোটসঙ্গীরাও তাদের জোট ছেড়ে যাচ্ছে। আর এই সুবিধায়  বিরোধীরা ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব আনলে এই জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার জেরে রাষ্ট্র হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে পশ্চিম এশিয়ার দেশ লেবানন। রাজনৈতিক নেতাদের তৎপরতায় প্রাথমিক পর্যায়ে উল্লম্ফন ঘটলেও পরবর্তীতে সীমাহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলে ধস নামে লেবাননের অর্থনীতির। ইতিমধ্যে দেশটির মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ডের ৯০ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটেছে। ফলে খাদ্য, খাবার পানি, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার মতো অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকছে দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলের মানুষ।

১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত মাত্র ৫৬ হাজার বর্গমাইলেরও কম এই ক্ষুদ্রায়তনের দেশ বাংলাদেশ। প্রাক্কলিত (২০১৮) ১৮ কোটির বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ যার অর্থনীতি কৃষি নির্ভরশীল। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী চক্র কতিপয় উচ্চাভিলাসী সেনাকর্মকর্তাদের দ্বারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী নেতা বাঙ্গালী জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। ভিশনারী নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন, জাতিকে স্বপ্ন দেখান এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে দিবানিশি নির্ঘুম পরিশ্রম করেন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ্যকন্যা শেখ হাসিনা  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। মমতাময়ী এবং মানবকল্যাণে ব্রতী এক অনন্য দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাষ্ট্রনায়ক তিনি। অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা, মেধা, বিচক্ষণতা, আত্মপ্রত্যয় ও দূরদর্শিতার কারণে জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেত্রী।

স্বাধীনতার পর আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে ব্যঙ্গোক্তি করেছিল। দূরদর্শী ভিশনারী নেতৃত্বের যাদুকরি স্পর্শে সে সময়ের ব্যঙ্গোক্তিকে মিথ্যা প্রমান করে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বের উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ এ পরিনত করেছেন শেখ হাসিনা।

২০০৮ সালে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন শেখ হাসিনা। ভিষন ২০২১ এবং ২০৪১ প্রনয়ন করে জাতিকে স্বপ্ন দেখান। এছাড়া আগামী ১০০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনাও প্রনয়ন করেন। গতবছর ২০২১ সালে, ভিষন ২০২১ সফলতার সাথে বাস্তবায়িত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (Least developed countries, LDCs) থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তোরণ হয়েছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর শোসনহীন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাতে ঘাতকের বুলেটে শহীদ হলেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান নিশ্চিতকরণে আত্মনিয়োগ করেছেন। নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন। 

দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরিকল্পনা মোতাবেক রেল সংযোগসহ পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল,  কর্নফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ,  ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, ঢাকা মহানগরীর উপর দিয়ে ইলিভেটেড হাইওয়ে নির্মাণ, দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ধুমধুম মেগাপ্রকল্পসহ অসংখ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শুরু করেন। প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেই ক্ষ্যান্ত হননি, সময় ও অর্থব্যয়ের সাথে কাজের অগ্রগতি মনিটরিং করেন তিনি। এরই মাঝে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু উত্তরবঙ্গের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। তাই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দক্ষিণবঙ্গের জেলা সমূহের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। আগামী জুন‘ ২০২২ মাসে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। 

২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার সময় বাংলাদেশে ২৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হইতো। লোড শেডিং  লেগেই থাকতো। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বের কল্যাণে আজ দক্ষিণ এশিয়ায় শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত একমাত্র দেশ, বাংলাদেশ।

মানুষের মাথাপিছু জিডিপি, সামাজিক সমর্থন, স্বাস্থ্যকর জীবন ব্যবস্থা, সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা, উদারতা, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশন নেটওয়ার্ক কর্তৃক তৈরী ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস‘ রিপোর্টে বাংলাদেশ সুখী দেশ হিসেবে গত বছরের তুলনায় সাত ধাপ এগিয়ে ৯৪তম অবস্থানে পৌঁছেছে।

২০২০ সালে বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটকালে বিভিন্ন দেশ করোনা নিয়ন্ত্রনে মরিয়া হয়ে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। কিন্তু সেভাবে সাফল্য পায়নি।  করোনা সংকটকালে শেখ হাসিনার সরকার নিম্নআয়ের মানুষের কাছে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কৃষি ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ায় ধান উৎপাদন বাম্পার হয়েছে। ফলে ‘খাদ্যসংকট’ হবে বলে ডব্লিউএফপির ভবিষ্যত বানি ভুল প্রমাণিত করে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন, ‘করোনা ও বন্যা যাই হোক না কেন, বাংলাদেশে খাদ্য সংকট হবে না’। প্রকৃত পক্ষে তাই হয়েছে ।

যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ফোর্বস ম্যাগাজিন করোনা মোকাবেলায় বিশ্বের দুইশতাধিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ ৭টি দেশের গৃহিত পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়েছে।

বাংলাদেশে তৃণমূলপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা চালু, সর্বসাধারণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বিশ্বের দরবারে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপনের জন্য ২০১৪ সালের ২১শে নভেম্বর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘের ‘সাউথ-সাউথ ভিশনারি’ পুরষ্কারে ভুষিত করা হয়।

কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। কৃষিজমি কমতে থাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর চাল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে। বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশের নাম।

ক্ষুদ্র আয়তনের জনবহুল একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণে তার ভূমিকা, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন নিয়ে নবম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ জেফ্রি স্যাক্স বলেছেন, ‘পৃথিবীর দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের অগ্রগতি বিশ্লেষণ করি, যা প্রতি বছর জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্ক করে থাকে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অগ্রগতিতে বিশ্বে প্রথম হয়েছে’।

জঙ্গিদমনে শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ ‘জিরো টলারেন্স‘ নীতি সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। 

সারাবিশ্বে প্রান্তিক, দরিদ্র ও বিপর্যস্ত মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন শেখ হাসিনা, তিনি পরিণত হয়েছেন হতদরিদ্র, বঞ্চিত মানুষের একক নেতায়। আর এভাবেই নিজেকে বিশ্ব নেতা হিসেবে আলোকিত করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা আজ জাতিসংঘ তথা বিশ্ব পরিমণ্ডলে শান্তি ও ন্যায়ের এক মূর্তপ্রতীক। ত্যাগ, দয়া-মায়া, ক্ষমা ও সাহসের মহিমায় শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের এক অপার বিস্ময়। 

রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং সাফল্যের জন্য আন্তর্জতিকভাবে তিনি অনেক সম্মানসূচক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে শেখ হাসিনা শুধু জাতীয় নেতাই নন, তিনি আজ তৃতীয় বিশ্বের একজন বিচক্ষণ বিশ্বনেতা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। অসাম্প্রদায়িকতা, উদার প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক বিজ্ঞানমনস্ক জীবন দৃষ্টি তাঁকে এক আধুনিক, অগ্রসর রাষ্ট্রনায়ক করে তুলেছে। একবিংশ শতাব্দির অভিযাত্রায় তিনি দিন পরিবর্তন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাণ্ডারি। এ অভিযাত্রায় তিনি বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং ভরসাস্থল।

বাংলাদেশের পরম সৌভাগ্য যে, এমনি একজন মহিয়সী নারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। 

মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির সম্মান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭