ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কমিউনিস্ট বনাম জাসদের লড়াই


প্রকাশ: 07/04/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন বাংলাদেশের রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয় না, রাজনীতির মেরুকরণ হয় এবং রাজনীতির একটি পথপরিকল্পনাও তৈরি করা হয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হয়। এই কাউন্সিল যেমন একদিকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বুঝতে শেখায় তেমনি আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ বিন্যাসও পুনর্নির্ধারিত হয়। আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল এবং পঁচাত্তরের পর এই দলটির পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় বিভিন্নভাবে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকেছে। কখনো কমিউনিস্টরা আওয়ামী লীগে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সংহত করার জন্য, কখনও জাসদ এসেছে তাদের ভুল বুঝতে পেরে। ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে মূল আওয়ামী লীগ ছাড়াও নানা রকম রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রবেশ দেখা যায়। তবে মূল আওয়ামী লীগের বাইরে কমিউনিস্ট এবং জাসদরাই ক্রমশ আওয়ামী লীগে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন।

২০০৮ এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগে কমিউনিস্টদের প্রভাব বেড়ে যায়। কারণ ওই সময়ে বেগম মতিয়া চৌধুরী, আবদুল মান্নান খান, নূহ-উল-আলম লেনিন এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আসারাই সংস্কারপন্থীদেরকে রুখে দিয়েছিল এবং শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্য দেখেছিল। তবে সেই জায়গায় আস্তে আস্তে ভারসম্য এসেছে। গত কাউন্সিলে জাসদ থেকে আসা শাহজাহান খান প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর জাসদের শক্তিও বেড়েছে। অবশ্য এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারুজ্জামানও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আখতারুজ্জামান গত কমিটিতেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। গত কাউন্সিলে কমিউনিস্টদের প্রভাব আওয়ামী লীগের মধ্যে বেড়েছে। এখন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের অন্তত তিনজন কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আসা। এরা হলেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং আব্দুল মান্নান খান। অন্যদিকে উপদেষ্টামন্ডলীতে নূহ-উল-আলম লেনিন ছিলেন। নূহ-উল-আলম লেনিন এক সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। 

তবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে তিনজন কমিউনিস্ট থাকলেও একমাত্র মতিয়া চৌধুরী ছাড়া বাকি দু'জনকে তেমন সক্রিয় দেখা যায় না সাংগঠনিক বিষয়ে। সাংগঠনিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই আছেন। আওয়ামী লীগের গত কাউন্সিলের চমক ছিল শাজাহান খানের প্রেসিডিয়ামের সদস্য হওয়া এবং শাজাহান খান প্রথম প্রেসিডিয়ামের বৈঠকেই জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে এখনো জাসদের বেশ কিছু নেতা আওয়ামী লীগে আছেন এবং যারা আওয়ামী লীগের ভেতর একটা শক্ত অবস্থান নিতে চান। এদের মধ্যে সাবেক জাসদ ছাত্রলীগের নেতা শফি আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসুন না আসুন, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী। এছাড়াও জাসদের নেতাদের সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। তবে এবারের আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কমিউনিস্ট এবং জাসদের লড়াইটা অন্যবারের চেয়ে একটু জমজমাট হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে শাহজাহান খানের প্রেসিডিয়াম হওয়ার পর জাসদ থেকে আসা আওয়ামী লীগের দৌড়ঝাঁপ আরও বেড়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭