সর্বোচ্চ আদালতে পার্লামেন্ট পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের পর থেকে পাকিস্তানের রাজনীতি আবারাও নতুন মোড় নিয়েছে। আগামীকাল শনিবার (৯ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে খারিজ হয়ে যাওয়া অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হবে। আর এই অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের বিদায় একরকম নিশ্চিত ধরে নিয়েই সম্ভাব্য নতুন ফেডারেল সরকার গঠনের আলোচনা শেষ করেছে বিরোধী জোট। নতুন এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের সভাপতি শাহবাজ শরিফ। সূত্র- দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
বিরোধী জোটের সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি আরও বলছে, জাতীয় সরকারের মতো নতুন ফেডারেল সরকার গঠন করা হবে। এতে আনুপাতিক হারে শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব থাকবে। নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এর মেয়াদ ছয় মাস অথবা এক বছর রাখার বিষয়টি বর্তমানে বিবেচনায় রয়েছে। এই মেয়াদের মধ্যে নির্বাচনী সংস্কার ও জবাবদিহি–সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলো পাস হতে পারে। সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে নির্বাচন কমিশনকে যৌক্তিক সময় দেওয়া হবে।
জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী। শপথ নেওয়ার পর তিনি সম্ভাব্য সরকারের অগ্রাধিকারগুলো ঘোষণা করবেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। এসব অগ্রাধিকারের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রুপির দরপতন ঠেকানোর মতো অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন থাকবে। যুদ্ধ নয়, শান্তির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সব দেশের সঙ্গে সমানভাবে সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন আনবে সম্ভাব্য নতুন সরকার। নিপীড়নের উদ্দেশ্যে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর কার্যক্রম বন্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে।
নতুন প্রেসিডেন্ট এবং চারটি প্রদেশে নতুন গভর্নর নিয়োগে সাংবিধানিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইমরান খান সরকারের সব সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা ও পরিবর্তন করা হতে পারে বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে। সরকার গঠনের পরপরই পরামর্শ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকে দেশে ফেরানোর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নওয়াজ শরিফ বর্তমানে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির আদেশ দেন। গত ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। ফলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান রয়েছে। তার আগে ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের এখতিয়ার আদৌ আছে কি-না সেটি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছেন।