ইনসাইড গ্রাউন্ড

আঙুল না তোলার পণ করেই কি মাঠে নেমেছেন দ. আফ্রিকার আম্পায়াররা?


প্রকাশ: 09/04/2022


Thumbnail

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে হারের স্বাদ পাইয়ে দিয়েছে খুব ভালোভাবেই। ওয়ানডের পর বাংলাদেশ টেস্টেও ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামলেও বাজে আম্পায়ারিং তাদের ইতিহাস গড়তে দেয়নি প্রথম ম্যাচে। তাই তো প্রথম টেস্টের বিতর্কিত আম্পায়ারিং নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা। তারা বলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে আম্পায়ারিং চোখে লেগেছে। সেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি যেনো শুরু হয়েছে দ্বিতীয় টেস্টেও। একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে আবারও বিপদে ফেলার অবস্থায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের ১১ জনের বিপক্ষে লড়ছে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা। এ কারণে ক্রিকেট প্রেমীদের মনে প্রশ্ন জাগছে বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের আবেদনে আঙুল না তোলার পণ করেই কি মাঠে নেমেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস ও আলাহুদেন পালেকার?

প্রথম টেস্টে আম্পায়ারদের অনেকগুলো সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন বাংলাদেশ দলে ক্রিকেটাররা। খোদ বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আম্পায়ারদের নেওয়া সিদ্ধান্তে ধারাবাহিকতা ছিল না। আম্পায়াদের সম্মান রয়েছে। তারা মাঠে বিচারক। আমাদের মেনে নিতে হবে সব সময়ই। অবশ্যই আমি মনে করি আম্পায়ার একটা বড় ভূমিকা পালন করেন একটা টেস্ট ম্যাচের জন্য। একটা সিদ্ধান্ত অনেক কিছু নির্ভর করে। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বাংলাদেশ দলের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, আমার মনে হয় আইসিসির আবারও নিরপেক্ষ আম্পায়ারে ফিরে যাওয়া সময় হয়েছে। যেহেতু করোনা পরিস্থিতি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে অনেকটাই ঠিকঠাক। সে সময় নিজের অসন্তুষ্টি চেপে রাখতে পারেননি ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। ফেসবুক বার্তায় ফাহিম লিখেছেন, ‘আম্পায়ারদের নেওয়া সমস্ত সিদ্ধান্ত স্পষ্টতই স্বাগতিকদের পক্ষে। লজ্জা!!!’

বাংলাদেশের বিপক্ষেই যে এই ধরনের বাজে আম্পায়ারিং হয়েছে তাই নয়, বাংলাদেশ সফরের আগে ভারতও দক্ষিণ আফ্রিকায় বাজে আম্পায়ারিং এর শিকার হয়েছিল। এসময় বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরাট কোহলিরাও। ঠিক যেনো সেটারও ধারবাহিকতা ধরে রাখছেন দক্ষিণ আফ্রিকার আম্পায়াররা। পোর্ট এলিজাবেথ দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই দুইবার রিভিউ নিয়ে উইকেট আদায় করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। দুইবারই বোলার তাইজুল ইসলাম। প্রথমবার কেগান পিটারসেনকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলার পর রায়ান রিকেলটনকে করেছেন ক্যাচ আউট। তাইজুলের করা ইনিংসের ৮২তম ওভারের তৃতীয় বলে রিভার্স সুইপ করেছিলেন রিকেলটন। বল তার গ্লাভসে লেগে চলে যায় প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো ইয়াসির আলি রাব্বির হাতে। কিন্তু তাইজুল-ইয়াসিরের জোরালো আবেদন নাকচ করে দেন এরাসমাস। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউয়ের জন্য অধিনায়ক মুমিনুল হককে তাড়া দেন ইয়াসির-তাইজুলরা। মুমিনুলও রিভিউ নিতে ভুল করেননি। রিপ্লে দেখে রিকেলটনকে আউট দিতে বাধ্য হন এরাসমাস। সাজঘরে ফেরার আগে ৪২ রান করেন এ বাঁহাতি ব্যাটার। এই যদি হয় আম্পায়ারিং এর অবস্থা, তাহলে পুরো খেলা নিয়েই প্রশ্ন উঠে। 

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, বাজে আম্পায়ারিং এর বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টেও একই চিত্র। একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে এই ধরনের বাজে আম্পায়ারিং মেনে নেওয়া যায় না। দেখে মনেই হচ্ছে আম্পায়ারাও বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে খেলছেন। আবারও যেনো সেই প্রথম টেস্টের পুনরাবৃত্তি। বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের আবেদনে আঙুল না তোলার পণ করেই যেনো নেমেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস ও আলাহুদেন পালেকার। অগত্যা রিভিউ-ই ভরসা। তাহলে রিভিউ নিয়েই যদি খেলতে হয় তাহলে মাঠের আম্পায়রা কি করছেন? যেহেতু এখনও ৪ দিন খেলা বাকি আশা করছি আম্পায়াররা তাদের ভুলগুলো সুধরে নিয়ে ভালো আম্পায়ারিং এর দিকে অগ্রসর হবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭