ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণপদত্যাগের শঙ্কা


প্রকাশ: 10/04/2022


Thumbnail

সংগঠনবিরোধী একের পর এক তৎপরতার কারণে বিএনপির মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। জনপ্রিয় নেতাদের বেছে বেছে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে, অনেককে বহিষ্কার করা হচ্ছে, কথায় কথায় শোকজ দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি রাজনৈতিক দল না অন্যকিছু, এ নিয়ে বিএনপির মধ্যেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সিনিয়র নেতারা হাত-পা গুটিয়ে বসে আছেন, কদিন আগেও যারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে সবর ছিলেন তারা এখন হতাশ হয়ে কোন কর্মসূচীতে যাচ্ছেন না। দলের ভিতর একমাত্র কথা বলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিনিয়র নেতারা সবাই যে যার মতো মানসম্মান রক্ষার জন্য নিরাপদ দূরত্বে রয়েছেন। আর এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপিতে গণপদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অগঠনতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক এবং একনায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গণপদত্যাগ করতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির মধ্যে। সাম্প্রাতিক সময় বিএনপিতে একের পর এক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া, বহিষ্কার, কারণ দর্শানোর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাগুলোর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলা হয়েছে যে, দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্যই এটি করা হয়েছে।

বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, আগে এই সমস্ত বিষয়গুলোকে একটু হালকা হবে দেখা হতো, বেগম খালেদা জিয়া মাতৃত্বসুলভ আচরণ করতেন, তিনি নেতাকর্মীদের অনেক দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দিতেন এবং সেটি গায়ে মাখতে না। কিন্তু তারেক জিয়া তেমনটি নন। তিনি যেকোনো পদস্খলন এবং দলের নেতাকর্মীদের বিচ্যুতিকে অত্যন্ত কঠোরভাবে দমন করতে চান। বিএনপিতে যেন দলের পরিচয় বহন করে কেউ অন্যায় করতে না পারে, সে ব্যাপারে তিনি এক ধরনের কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। কিন্তু তারেকের এই কঠোর অবস্থান বিএনপিকেই অশান্ত করে তুলেছে। কথায় কথায় কারণ দর্শানো, কথায় কথায় পদবঞ্চিত করা, কাউকে পদাবনতি করে দেওয়া ইত্যাদি একটি রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না বলে অনেকে মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, একটি রাজনৈতিক দল কোন গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরি না যে দেরিতে এলে বেতন কাটা হবে, কাজ করতে না পারলে, একটু অনিয়ম হলে চাকরি চলে যাবে। তারেক জিয়া কি বিএনপি’র নেতাকর্মীদেরকে কর্মচারী মনে করেন? কর্মচারী মনে করেন কি করেন না সেটা ভিন্ন বিষয়, কিন্তু তারেক জিয়া দলের নেতাকর্মীদের সাথে কর্মচারীর মতোই আচরণ করছেন।

এমনকি তারেক জিয়ার কথায় যিনি সব কাজ করেন সেই বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও প্রকাশ্যে সবকিছু মেনে নিলেও আড়ালে-আবডালে এনিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনিও মনে করেন যে, দলটি এ ধরনের অবাস্তব সিদ্ধান্ত এবং হঠকারী পদক্ষেপের জন্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাবে। তারেক জিয়ার এই বহিষ্কার এবং গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করে শাস্তিমুলক ব্যবস্থার প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বিএনপিতে। বিএনপি’র নেতারা বলছেন যে, কোন নেতা যদি অন্যায় করে তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। সে পদ্ধতিগুলো গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে। কিন্তু তারেক জিয়া গঠনতন্ত্র অনুসরণের না করে তার খেয়াল খুশিমতো যাকে ইচ্ছা তাকে বহিষ্কার করেছেন, যাকে ইচ্ছা তাকে পদাবনতি করাচ্ছেন। এটি কোন রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। আর এ কারণেই বিভিন্ন এলাকার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন। তারেক জিয়ার এই সমস্ত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গণপদত্যাগ করতে পারেন বলে একাধিক সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে এবং এরকম গণপদত্যাগের ঘটনা যদি ঘটে তা হবে বিএনপি’র জন্য শেষ সর্বনাশ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭