বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই কথাটি যেনো এখন একদম প্রচলিত একটি কথায় পরিণত হয়েছে। আর তা হলো যারা বোলিং করে তারা ব্যাটিং জানে না। এই কথাটি প্রচলিত হবেই না বা কেনো। আসলে তো তারা সত্যিই ব্যাটিং জানে না। তাদের ব্যাট হাতে মাঠে নামা দেখলেই মনে হয়, জীবনে কোনোদিন ব্যাট হাতে নেয় নি। তাদের জন্য প্রতিপক্ষের বোলারদের ২-১টি বলই যথেষ্ট। এই ২-১টি বলই যেনো তাদের কাছে অনেক কিছু। বাংলাদেশ দলে কোনোভাবে ৬ টা বা ৭টা উইকেট পড়ে গলেই ধরে নেওয়া হয় যে, আর বেশিদূর আগাতে পারবে না। রানের খাতা এখানেই স্টপ। মানে তাদের দ্বারা কোনো আশা নেই। সবাই জানে এরা ব্যাট করতে পারে না। শুধু বলই এদের ভরসা।
প্রতিটি দেশেই ব্যাটার, অলরাউন্ডার, বোলার এইভাবেই দল সাজানো হয়ে থাকে। কিন্তু অন্যান্য দেশে দেখা যায়, তাদের শেষে যে বোলারগুলো ব্যাটিং করতে মাঠে নামে তারাও যেভাবে ব্যাটিং করে তাতে কিছু কিছু সময় মনেই হয় না তারা বোলার। তাদের ব্যাটিং নৈপূণ্য অনেকেরই মন কাড়ে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও বোলাররা একেবারে খারাপ খেলেন না। অন্তত দলের রানের খাতায় কিছু না কিছু যোগ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই কেন যানি বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। বাংলাদেশের আগের সময় থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত একই অবস্থা। বোলাররা ব্যাটিং করতে জানে না। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, বোলারদের শুধু বলই করানো হয়। কিন্তু তারাও যে দলের একটি অংশ এবং তাদেরও যে ব্যাট করার জন্য মাঠে নামতে হয়, সেই বিষয়টি আমরা ভুলেই যাই।
এই অবস্থা দেখা দেখে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেও। টেস্টে টপ অর্ডার, মিডিল অর্ডাররা ব্যার্থ আর বরাবরের মতো লোয়ার অর্ডার ব্যাটিং জানে না। সেই কারণে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩ রানে লজ্জাজনক অলআউট। আর দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রানে অলআউট। এর মানে হলো ব্যাটিং এর সব দায়ভার ব্যাটারদের ওপর বলাররা কিছু করতে পারবে না। কোনো সময় করার চেষ্টাও করে না।
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন, তাদের ব্যাটিং না জানার পেছনে কোচিং প্যানেলের যেমন ঘাটতি রয়েছে ঠিক তেমনি তাদেরও চেষ্টার ঘাটতি রয়েছে। কোচিং প্যানেল মনে করে সে বোলার তাই তাকে বোলিংই শুধু করাতে হবে। আর বোলাররাও মনে করে আমি বোলার, আমি কেনো ব্যাটিং করবো। দুই দিক থেকেই গাফিলতির জন্য বোলারটা উইকেটে বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারে না। সবাই আউট হয়ে যায়। কিন্তু তাদের একটু চেষ্টা থাকলে এমনটা নাও হতে পারতো। এখন যখন সব জায়গায় অলরাউন্ড পারফরমেন্সের সময় এসেছে তখন ক্রিকেটে কেনো নয়? সবাই সব কিছু জানবে। দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও ভালো করবে। এমনটাই হওয়া উচিত। শুধু বোলার হয়ে থাকার দিন শেষ হয়ে আসছে।