ইনসাইড পলিটিক্স

ড. রাজ্জাক প্লাস ৫, মাইনাস ৫


প্রকাশ: 14/04/2022


Thumbnail

আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি ইস্যু। এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হবে তা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের নানারকম আলাপ-আলোচনা গুঞ্জন চলছে। এটাই আওয়ামী লীগের এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তাদের সম্ভাব্যতা এবং তাদের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বাংলা ইনসাইডার ধারাবাহিক প্রতিবেদন আয়োজন করেছে। সেই ধারাবাহিক প্রতিবেদনে আজ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে প্রতিবেদন। ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তিনি প্রেসিডিয়ামের সদস্য এবং মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন হাতেগোনা নেতা দল এবং সরকার দুটোর মধ্যে আছেন তার মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক অন্যতম। তার রাজনীতিতে উত্থানটাও এলাম দেখলাম জয় করার মতে। আর সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম ড. আব্দুর রাজ্জাক। 

ড. আব্দুর রাজ্জাক শেষ পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন কিনা সেটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই চূড়ান্ত করবেন। কিন্তু তার ব্যাপারে অনেকগুলো ইতিবাচক দিক রয়েছে। অনেকগুলো নেতিবাচক দিক রয়েছে। আসুন দেখা যাক তার প্লাস ৫ অর্থ্যাৎ ইতিবাচক ৫টি দিক।

১. মার্জিত নেতা: আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্বে মধ্যে মার্জিত, রুচিশীল, সদালাপী নেতাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে ড. আব্দুর রাজ্জাকের নাম প্রথমদিকে আসবে। মিষ্টভাষী এবং শান্তশিষ্ট, হাসিখুশি মানুষ হিসেবে তিনি সর্বমহলে প্রশংসিত।

২. শিক্ষিত: ড. আব্দুর রাজ্জাক একজন শিক্ষিত নেতা। তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন, পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন এবং দীর্ঘদিন সরকারি চাকরি করেছেন। একজন শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে তিনি দলের ভেতরে-বাইরে পরিচিত।

৩. দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যতা: ড. আব্দুর রাজ্জাকের গ্রহণযোগ্যতা আওয়ামী লীগের চেয়ে আওয়ামী লীগের বাইরে বেশি। আওয়ামী লীগের বাইরে তাকে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে মানুষ মনে করে এবং রাজনীতিতে উগ্র আক্রমণাত্মক কথাবার্তা না বলে তিনি শিষ্টাচার সম্মত যে কথাবার্তা বলেন সেটি দলের বাইরে বেশ প্রশংসিত হয়। 

৪. সুশীলদের পছন্দ: ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে সুশীলদের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের পছন্দের ব্যক্তি তিনি। দীর্ঘদিন প্রকৃচির আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন। তাছাড়া তার সুশীলদের সঙ্গে এক ধরনের ওঠাবসা রয়েছে। এজন্য তিনি সুশীলদের পছন্দের ব্যক্তি। 

৫. দক্ষ প্রশাসক: ড. আব্দুর রাজ্জাক দু'দফা মন্ত্রী ছিলেন। প্রথম ২০০৯ সালে তিনি খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। আর এবার তিনি কৃষিমন্ত্রী হয়েছেন। দুই দফায় মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের কাজে তার দক্ষতা প্রশংসিত।

মাইনাস ৫ 

ড. আব্দুর রাজ্জাকের যেমন ইতিবাচক দিক রয়েছে তেমনি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ক্ষেত্রে তার নেতিবাচক দিকগুলো আলোচিত হচ্ছে।

১. পেশাজীবী থেকে রাজনীতিবিদ: ড. আব্দুর রাজ্জাক ছাত্রলীগের রাজনীতি করলেও তিনি পরবর্তীতে মূলধারার রাজনীতিতে থাকেননি। তিনি সরকারি চাকরি গ্রহণ করেছিলেন এবং পরে প্রকৌশল কৃষিবিদ এবং চিকিৎসকদের যে সংগঠন প্রকৃচির নেতা হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনও তিনি সরকারি চাকরি করতেন। তারপর তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী পাসপোর্ট জটিলতায় নির্বাচন করতে না পারায় তিনি টাঙ্গাইল আসন থেকে নির্বাচন করেন এবং এমপি হন। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেই পরিচিত। এটি তার একটি নেতিবাচক দিক। 

২. বিভক্ত কৃষিবিদ: ড. আব্দুর রাজ্জাক কেবল একজন রাজনীতিবিদই নন, একজন কৃষিবিদও বটে। কিন্তু কৃষিবিদ এখন বিভক্ত। এখানে দুটি কক্ষ রয়েছে। ড. রাজ্জাক একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন। এটিই তার সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পথে একটি নেতিবাচক দিক বলে বিবেচিত হবে। 

৩. দলে গ্রহণযোগ্যতা কম: দলের ড. আব্দুর রাজ্জাকের গ্রহণযোগ্যতা কম। বিশেষ করে দলের সিনিয়র নেতা এবং তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতাদের কাছে তিনি তেমন গ্রহণযোগ্য একজন নেতা নন।  
  
৪. তৃণমূলে জনপ্রিয়তা কম: তৃণমূলে ড. আব্দুর রাজ্জাকের জনপ্রিয়তা অনেকটা কম। তিনি তৃণমূলের চেয়ে সুশীল এবং নাগরিক সমাজেই বেশি আদৃত এবং প্রশংসিত। তৃণমূলের সঙ্গে তার সম্পর্কটা অত দৃঢ় নয় বলেই অনেকে মনে করেন।  

৫. ক্যারিশমাটিক নেতা নন: ড. আব্দুর রাজ্জাক শান্ত, স্বল্পভাষী, মিষ্টভাষী। কিন্তু রাজনীতির মাঠে যে ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব দরকার, জনগণকে জাগানো দরকার, তেমনটি তার নেই এবং সেক্ষেত্রে তার অনেক দুর্বলতা রয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭