ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সত্যি কি ‘হার্ট অ্যাটাকের’ শিকার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী?


প্রকাশ: 15/04/2022


Thumbnail

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর। তার উপরই ন্যস্ত ছিলো যুদ্ধের সকল গুরু দায়িত্ব। যুদ্ধের শুরুতে বেশ ভালোই সাফল্যর দেখা পেলেও দিন যত গড়িয়েছে ততই শক্তিশালী প্রতিরোধের মুখে পড়েছে রুশ বাহিনী। সাথে চাপ বেড়েছে শোইগুর উপরও। এর পর হুট করেও বেশ অনেক দিন যাবত কোন প্রকার দেখা মিলছে না রুশ এই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। 

পশ্চিমা বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবর বেশ বড় ধরনের ‘হার্ট অ্যাটাকের’ শিকার হয়েছেন সের্গেই শোইগুর। তবে তার অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি আরো বেশি চাঞ্চল্যর জন্ম দেয় যখন গণমাধ্যমগুলোর খবর স্বাভাবিক কারণে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হননি তিনি। এর পিছনে রয়েছে অন্য কারণ। রাশিয়া-ইসরায়েলি এক ব্যবসায়ী লিওনিড নেভজলিনের দাবির বরাত দিয়ে এ ধরনের এ তথ্য তুলে ধরেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল অনলাইন’।


ছবি: রাশিয়া-ইসরায়েলি ব্যবসায়ী লিওনিড নেভজলিনের

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসলে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তেমন কোন সফলতা পায়নি রাশিয়া। যুদ্ধের দেড় মাসের (৫১ দিন) বেশি সময় পেরিয়েও কবজায় আনা যায়নি অবাধ্য কিয়েভকে। এই কারণেই পুতিনের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে চিড় ধরেছে তার ঘনিষ্ঠ সেনানায়ক ও পরামর্শদাতাদের। মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতির চাপেই নাকি এই অবস্থা রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর।

কারণ, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নেতা হিসাবে, শোইগুই সম্ভবত প্রথম ব্যক্তি যিনি রাশিয়ান রাষ্ট্রপতির ক্রোধের সম্মুখীন হয়েছিলেন যখন তিনি ইউক্রেনে সেনাবাহিনীর ব্যর্থতার সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন।

তবে শোইগুর হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি নিয়ে রুশ কর্তৃপক্ষের কোনও উদ্ধৃতি দিতে পারেনি ডেইলি মেইল। এমতাবস্থায় রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সত্যিই ‘হার্ট অ্যাটাকের’ শিকার হয়েছেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। কেউ কেউ এটিকে কেবলই গুঞ্জন মনে করছেন।

পুতিন এবং শোইগুর সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে শুরু করে ২০১২ সাল থেকেই। সেই সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হয় যখন শোইগুর দিক নির্দেশেই রুশ বাহিনী ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নেয়। তার সঠিক নেতৃত্ব রুশ বাহিনী আরো পরিপক্বতার পরিচয় দেয় সেই সময়। এছাড়া পুতিনের ইচ্ছা অনুযায়ী রুশ বাহিনীর আধুনিকায়নে বেশ ভালো সময় ব্যায় করেন এই রুশ। 


ছবি: কন্যা কেসনিয়ার সাথে শোইগু

তবে সব কিছুই যেনো ভোজবাজির মত হাওয়ায় উড়িয়ে গেলো ইউক্রেন যুদ্ধেই। পুতিনের চাওয়া অনুযায়ী দ্রুতই কিয়েভ দখলে রুশ বাহিনীর ব্যর্থতার সাথে সাথে দিন যত গড়িয়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশ বেশ ভালো রকমের মার খেয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। পশ্চিমা অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞের মতে ক্রিমিয়া দখল আর ইউক্রেন অভিযান দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি। ক্রিমিয়া সহজেই দখল করে নিয়ে রুশ বাহিনী অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছে ইউক্রেনের মাটিতে। যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে পিছু হঠে। সঠিক পরিকল্পনার অভাব, রসদের ঘাটতি এবং রুশ বিভিন্ন বাহিনীর মাঝে সমন্বয়হীনতার রাশিয়াকে বেশ বেকায়দায় ফেলেছে ইউক্রেনে মাটিতে। 

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী দাবি অনুযায়ী ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০,০০০ রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে। এমনকি রক্ষণশীল পশ্চিমা অনুমান অনুসারে এই সংখ্যা ১০,০০০ কাছাকাছি।

আর এখানেই শোইগুর উপস্থিতি। এই সবকিছুর দায়ভার অনেকটাই গিয়ে বর্তায় এই নেতার উপর, যার উপর পূর্ণ আস্থাভাজন ছিলেন পুতিন। ইউক্রেনে যখন পরিকল্পনা সঠিকভাবে কাজে আসছে না তখনই পুতিনের সাথে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে শোইগুর।  

রুশ-ইসরায়েলি ওই (লিওনিড নেভজলিন) ব্যবসায়ীর দাবি, পুতিনের সঙ্গে এই মুহূর্তে সম্পর্ক একেবারেই ভাল নেই তার ঘনিষ্ঠদের। তাদের মধ্যে রয়েছেন শোইগু নিজেও। 

দেড় মাস পেরিয়ে দু’মাস হতে চলল রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধের। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি সেই লড়াইয়ের। এই পরিস্থিতিতে চাপ বেড়েছে পুতিনের উপর। আর তাতে আরো বেশি চাপে পড়েছে সের্গেই শোইগুর।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭