মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে গত দুই বছরে বড় ধরনের আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিল ব্যবসায়ীরা, লকডাউনের ফলে বন্ধ রাখতে হয়েছিল দোকানপাট। ফলে ওই সময় কেনাকাটার প্রধান এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠে ই-কমার্স। কিন্তু বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে পুরো ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা মুখ থুবড়ে পড়ে এবং ক্রেতাদের মধ্যেও আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়। তবে ঈদকে ঘিরেই আবারও জমে উঠেছে ই-কমার্স প্লাটফর্ম। ই-কমার্সের আড়ালে প্রতারকদের বিচারেরে আওতায় আনতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় এবং নীতিমালা প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে মানুষ আবারও ই-কমার্সমুখী হয়েছে, অর্ডারও বেড়েছে চার-পাঁচগুণ।
বিতর্কিত কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে ই-কমার্সে যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল সেটা থেকে মানুষ বের হয়েছে। এ কারণে ই-কমার্সে ঈদ কেনাকাটা বেড়েছে। ক্যাশ অন ডেলিভারির পাশাপাশি কার্ডেও গ্রাহকরা টাকা পরিশোধ করছে। তবে ক্যাশ অন ডেলিভারির সংখ্যাটা বেশি। রমজান ও ঈদের কারণে অনলাইনে পণ্যের অর্ডার ও ডেলিভারি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।
জানা গেছে, প্রতারিত গ্রাহকদের অভিযোগে এরই মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিরুদ্ধে ৪১টি মামলা করেছেন গ্রাহকরা। এসব মামলায় আসামি হয়েছেন ১১০ জন আর গ্রেফতার হয়েছেন ৩৬ জনেরও বেশি।
গত বছরের শেষে গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে কাজ শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্স খাতসংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে গ্রাহকদের অর্থ ফেরৎ প্রদান, ই-কমার্স ব্যবসার জন্য নিবন্ধনসহ বেশ কিছু উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে কিছু মামলার মধ্যে অর্থপাচারের অভিযোগও রয়েছে। মামলা থাকার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে থাকা গ্রাহকের অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যমতে (ইক্যাব) দেশে ওয়েবভিত্তিক অনলাইন শপ প্রায় পনেরশ’র মতো। ফেসবুকভিত্তিক ই-কমার্স বা এফ-কমার্স আছে ১০ হাজারেরও বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে এ খাতে। প্রতি মাসেই দুই থেকে আড়াই লাখ অর্ডার থাকছে। আগামী বছরের মধ্যে দেশের ই-কমার্স খাত ২৫ হাজার কোটি টাকার ওপর পৌঁছাবে।