ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি’র জাতীয় সরকারের টোপে সাড়া নেই কারো


প্রকাশ: 19/04/2022


Thumbnail

বিএনপি রাজনৈতিক শক্তিকে তাদের পক্ষে আনার জন্য নতুন কৌশল নিয়েছে। বিএনপির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কর্মসূচিতে যেন সব রাজনৈতিক দল শামিল হয় সেজন্য তারা নতুন টোপ দিয়েছে, সেই টোপটি হলো জাতীয় সরকারের টোপ। বিএনপি বলছে যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করবে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম কৌতুকের তৈরি হয়েছে। বিএনপির নেতারা অবশ্য বলছে যে, জাতীয় সরকারের রূপরেখা নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। বিএনপির একজন নেতা বলছেন যে, সকল বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।

তারপর তারা একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করবে। এই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এবং যে নির্বাচন আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। বিপুল বিজয়ের পর ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁরা সরকার গঠন করবে এবং একটি জাতীয় সরকার গঠিত হবে যে সরকারে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো থাকবে। বিএনপি নেতারা এটাও বলছেন যে, এই জাতীয় সরকারের রূপরেখা নিয়ে তারা কাজ করছেন এবং খুব শীঘ্রই চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে এসময় সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কৌতুক হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তারা বলছেন যে, এটি কেবল অবাস্তবই নয়, রাজনীতিতে এক ধরনের যুক্তিহীন কল্পনাবিলাসী চিন্তাভাবনা। জাতীয় সরকারের আগে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রশ্ন হলো যে, বিএনপি বলছে যে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবে। এখন কথা হলো যে, বিএনপি কি পারবে সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে? বিএনপি নেতারা বলছে এজন্যই জাতীয় সরকারের টোপ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাতীয় সরকারের টোপ দিয়ে কি রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির সাথে গাঁটছড়া বাঁধবে?

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে এনিয়ে কথা বলে দেখা গেছে যে, জাতীয় সরকারের তামাশা নিয়ে কেউই আগ্রহী নয়। বরং রাজনৈতিক নেতারা বলছেন যে, জাতীয় সরকার তো পরের কথা বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের নীতিগত সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন যে, বিএনপিকে সুস্পষ্টভাবে জামায়াত এবং ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে, না হলে বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক ঐক্যে যাওয়া সম্ভব নয়। কাজেই ক্ষমতার হালুয়া-রুটি ভাগ করার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে যে বিএনপি একটি রাজনৈতিক চমক সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে। বিএনপির নেতারা বলছেন যে, আওয়ামী লীগের পতন ঘটানো হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে। তো আওয়ামী লীগের পতন সম্পর্কে কি তারা নিশ্চিত হলেন? যে বিএনপি ১৩-১৪ বছরেও আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে পারেনি। ২০১৪-১৫ সালে আন্দোলন করেও তাঁরা সরকার পতন ঘটাতে পারেনি। হঠাৎ করেই তাঁরা আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়ে ফেলবে? এরচেয়ে আশ্চর্য আর কি হতে পারে।

জাতীয় সরকার মানে সব রাজনৈতিক দল থাকবে। সেখানে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এবং তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই যে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনের সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করবে তারপরও বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারা অন্যতম বৃহত্তর দল হিসেবে থাকবে। তাহলে আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে জাতীয় সরকার কিভাবে গঠিত হবে? কাজেই, জাতীয় সরকারের যে ধারণা সেই ধারণাটি একটি অবাস্তব এবং বাস্তবতা বিবর্জিত বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এবং এই অপরিপক্বতার কারণে শুরুতেই জাতীয় সরকারের টোপে কেউ সাড়া দিচ্ছে না বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭