ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেন নয়, ইউরোপের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ


প্রকাশ: 21/04/2022


Thumbnail

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমশ বিপর্যস্ত করছে ইউরোপের দেশ গুলোকে। আর এই যুদ্ধের প্রভাবে এখন নাস্তানাবুদ হচ্ছে ইউরোপ। তাই সমর বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার যুদ্ধ কৌশলের কাছে আসলে পরাস্ত হচ্ছে শুধু ইউক্রেন নয় পুরো পশ্চিমা বিশ্বই। অনেকেই মনে করেছিলেন যে, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করবে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে ইউক্রেন দখল করে নেবে কিন্তু রাশিয়া সেটি করেনি। রাশিয়া ইচ্ছে করেই যুদ্ধকে প্রলম্বিত করেছে। এর ফলে ইউক্রেনের নেতা জেলেনস্কি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং পশ্চিমা বিশ্ব মনে করেছে যে, রাশিয়া বোধহয় চাপে পড়েছে, রাশিয়া যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া এই যুদ্ধের মাধ্যমে অনেক কিছু অর্জন করতে চায়।

প্রথমত, বিশ্ব ডলার বাজারের যে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব সেই কর্তৃত্ব নষ্ট করতে চায় এবং বিনিময় মূল্য হিসেবে ডলারকে তারা বাদ দিতে চায়। দ্বিতীয়ত, তারা ইউরোপকে সংকটে ফেলতে চায় এবং দীর্ঘমেয়াদি সংকটে ফেলে ইউরোপকে পর্যুদস্ত করতে চায় যেন ইউরোপে ন্যাটো অকার্যকর হয়ে যায়। তৃতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের মাধ্যমে তারা আবার বিশ্ব মেরুকরণের যুগে ফিরে যেতে চায় অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব সেই কর্তৃত্ব নষ্ট করতে চায়। সর্বশেষ, চীন-রাশিয়া মিলে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা বিনির্মাণের কাজ করতে চায়। আর এই চারটি লক্ষ্য অর্জনের জন্যই পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করছেন বলে অনেকে মনে করেন। আর এই দীর্ঘস্থায়ী করার প্রাথমিক অর্জন যেটি তিনি করতে চান তাহলো ইউরোপকে কাবু করে ফেলা।

রাশিয়া তার নিজস্ব শক্তি, অস্তিত্ব এবং শান্তির জন্যই দুর্বল ইউরোপ চায়। তারা মনে করেন ইউরোপে ন্যাটো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় ধরনের হুমকি। আসলে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধে জড়ানোর প্রধান কারণই হলো ন্যাটো। এখন পুতিন চাচ্ছেন পুরো ইউরোপের সামরিক শক্তিকে খর্ব এবং দুর্বল করতে। এ কারণেই ইউক্রেনের যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করছেন। ইউক্রেনের যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করার মধ্য দিয়ে তিনি অন্তত ৫০ লাখ শরণার্থীকে ইতিমধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছেন। এই শরণার্থীদের চাপ মোকাবেলা করা এখন ইউরোপের জন্য এক কঠিন বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার প্রভাব শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই ইউরোপে খাদ্য সংকট দেখা দিবে। কারণ ইউরোপ মূলত রাশিয়া এবং ইউক্রেনের গমের উপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে দিয়ে একটা বিপর্যস্ত ইউরোপের অবয়ব এঁকেছেন পুতিন। আর এটি যদি তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেন তাহলে ইউরোপে রাশিয়া হবে সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ। আর ইউরোপে রাশিয়া যদি সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ হয়, চীনকে যদি তাঁরা পাশে পায় তাহলে বিশ্ব ব্যবস্থাপনায় মার্কিন কর্তৃত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যেই কি যুদ্ধ করছেন পুতিন? সেটি ক্রমশ যেন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭