ক্লাব ইনসাইড

‘চিকিৎসকদের অনৈতিক কাজের পেছনে আছে মুষ্টিমেয় লোকের লোভ’


প্রকাশ: 26/04/2022


Thumbnail

অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ বলেন, চিকিৎসকদের অনৈতিক কাজের পেছনে আছে মুষ্টিমেয় লোকের লোভ এবং পেশাগত স্বাধীনতার অভাব। উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকরা স্বাধীনতা ভোগ করেন এবং মানবাধিকারকে সর্বোচ মর্যাদা দিয়ে থাকেন যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে পরিলক্ষিত হয় না।

গত বুধবার (২০ এপ্রিল) বিকাল চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের আয়োজনে কলাভবন সংলগ্ন লেকচার থিয়েটার বিল্ডিংয়ে অবস্থিত আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে এক পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠিত হয়। চিকিৎসকদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শপথনামার মূল বক্তব্য ও নীতিগুলো উপস্থাপন করে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে নৈতিক কিছু প্রশ্ন উত্থাপন এর পাশাপাশি চিকিৎসক সমাজের বিভিন্ন সমস্যাগুলোকে তুলে ধরেন তিনি। এই পাবলিক লেকচারের বিষয় ছিল-চিকিৎসকদের শপথ ও সেবাদানের নীতিমালা-প্রেক্ষাপটে কোভিড-১৯।

অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ মনে করেন, কোভিড মহামারীর মত দূর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমলাতন্ত্রের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে অংশীজনের মতামত নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরী করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি, শিক্ষার্থী, অনুষদ সদস্য এবং সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য উপস্থাপন করেন দর্শন বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ। বিজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য  প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। বক্তৃতা পর্ব সঞ্চালনা করেন নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের পরিচালক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন।

আলোচনায় অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চিকিৎসকরা যদি সেবা প্রদান করেন তবে অর্থাৎ ধনীদের সেবা দেয়ার পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্যও সেবা নিশ্চিত করা প্রযোজন, তবেই তখন সেবা প্রদান নৈতিক বিবেচিত হয় এবং স্বাস্থ্য ন্যায্যতা নিশ্চিত হয়।

অধ্যাপক ডা কামরুল হাসান খান বলেন, নৈতিক বিষয়গুলো দেখার জন্য যে সংস্থাটি আছে তা কার্যকরী নয়। চিকিৎসকরা সেবা প্রদানে রোগীর সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিচয়ে গুরুত্ব না দিয়ে সমতার নীতি অনুসরণ করে সেবা প্রদান করলে অনৈতিক কার্য কলাপ বন্ধ হবে।চিকিৎসকরা যে সামাজিক পরিবেশে কাজ করেন তা সহায়ক নয়। তাদের প্রকৃত স্বাধীনতা নেই। আমাদের দেশে যেভাবে মেডিকেল কলেজ হচ্ছে তাতে  ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, যারা প্রশাসনে আছেন তারা এই পেশা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন না।  তিনি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদেরকে দায়ী করে দাবী করেন চিকিৎসকরা ওই ব্যবস্থাপনার কারণে সমাজের চোখে শপথ ভঙ্গকারী হিসেবে পরিগণিত হন। আমলারা সিভিল সার্জনের উপর খবরদারী করবার কারণে কোভিড মহামারীর সময় স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন সামাজিক কাঠামো পরিবর্তন ছাড়া স্বাস্থ্য ন্যায্যতা বন্টন সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন সংবিধানে যেখানে প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ লেখা আছে সেখানে সেবকের ভূমিকা পালন না করে আমলারা শাসকের ভূমিকা পালন করেন বলে স্বাস্থ্য খাত সহ সকল ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা ও অধিকার বঞ্চনার ঘটনা ঘটে।  যখন আমলারা সেবকের ভূমিকা গ্রহণ করবেন তখন স্বাস্থ্য ন্যায্যতা অর্জন সম্ভব হবে। অধ্যাপক বারকাত মনে করেন আমাদের স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ অপ্রতুল। আর সংবিধানকে অনুসরণ করে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সেবার আওতায় আনতে হবে এবং এজন্য সামাজিক বিপ্লব প্রয়োজন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭