আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল দেশের উপকূলীয় জনপদ। এদিন প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত এবং ৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস তছনছ করে দিয়েছিল উপকূলীয় জনপদ। সেদিনের ঘটনায় দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়। ১ কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়।
ওই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গিয়েছিল কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালীসহ দেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলার শত শত ইউনিয়ন। ঘণ্টায় ২০০ থেকে ২৫০কিলোমিটার গতিবেগের প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় এবং ২৫ থেকে ৩০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে দেশের উপকূলীয় এলাকা পরিণত হয়েছিল বিরাণভূমিতে।
ঘূর্ণিঝড়ে দেশে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ প্রায় হারিয়েছেন এবং প্রায় ১ কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারিয়েছেন। প্রলয়ংকরী এই তাণ্ডবের ৩১ বছর পরও উপকূলীয় এলাকাগুলোতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ হয়নি। অরক্ষিত উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের খবর শুনলে এখনও নির্ঘুম রাত পার করেন।
আনোয়ারা রায়পুরে এখনও স্থায়ী বেড়িবাঁধ হয়নি। রায়পুর ইউনিয়নের বারআউলিয়া, বাইঘ্যার বাড়ি, গলাকাটার ঘাট অংশে ব্লক দেওয়া হয়েছে। ছত্তার মাঝির ঘাট ও পারুয়াপাড়া এলাকার কিছু অংশে ব্লক দেওয়ার কাজ চলমাল রয়েছে। উপজেলার গহিরা এলাকা পুরোটাই বেড়িবাঁধের আওতায় আসছে।
কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারিসহ উপকূলীয় এলাকায় গত ৩০ বছরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে কয়েক’শ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁশবাড়িয়ার বোয়ালিয়াকূল বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন পর সংস্কার হলেও এর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
দীর্ঘ ৩১ বছরে এপর্যন্ত উপকুলে নির্মিত হয়েছে শত শত আশ্রয় শিবির। কিন্তু এখনো নির্মিত হয়নি টেকসই বেড়ীবাঁধ। টেকনাফ থেকে কুতুবদিয়া পর্যন্ত বেড়ীবাঁধ দিয়ে বর্ষা মৌসুমে এখনো পানি ঢুকে লোকালয়ে। মহেশখালীর ধলঘাটার মানুষ এখনো মানববন্ধন করে টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য।