ইনসাইড পলিটিক্স

ড্রাইভিং সিটে আসছে রাজনীতিবিদরা


প্রকাশ: 29/04/2022


Thumbnail

রাজনীতিবিদদেরকে আবার ড্রাইভিং সিটে আনা হচ্ছে। অথবা অন্যভাবে বলা যায়, রাজনীতিবিদরাই তাদের কর্মকাণ্ড দিয়েই ড্রাইভিং সিটে আসছেন। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে বোঝা যাচ্ছে যে, সরকার এখন আমলাদের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনে রাজনীতিবিদদের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ক্ষমতার বাইরে থাকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখন সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং কার্যক্রমে পরামর্শ দিচ্ছেন এবং সেই সমস্ত পরামর্শগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এটি সরকারের একটি বড় রাজনৈতিক পক্ষপাত বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার চাপে থাকার ফলে আমলাদের নয়, রাজনীতিবিদদের গুরুত্ব বেড়েছে বলেই অনেকে মনে করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে আমলাদের পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতিবিদদের ওপর নির্ভরশীল হয়েছেন এবং রাজনীতিবিদরা সেই সংকট মোচনে সফল হয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাটি আমলাদের দিয়ে সমাধান করা হয়নি, ক্ষমতার বাইরে থাকা কয়েকজন রাজনীতিবিদ এই সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তারা ড. জাফর ইকবালকে নিয়ে যেয়ে অনশন ভাঙ্গিয়েছেন। একইভাবে সাম্প্রতিক সময়ে খেলার মাঠ নিয়ে ঘটনাতেও রাজনৈতিক নেতৃত্বের গুরুত্ব লক্ষ্য করা গেছে। জানা গেছে যে, এখানে আমলারা যেকোনো অবস্থায় মাঠ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকার পক্ষে ছিল এবং তারা এ মাঠে থানা নির্মাণে বদ্ধপরিকর ছিল। আমলাদের এই চিন্তা ভাবনার প্রতিফলন ঘটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি দুদিন আগেই বলেছিলেন যে, এখানে কোন মাঠ কখনোই ছিলো না, এটা থানার জন্য নির্ধারিত এবং থানা হবে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার পরপরই পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, কয়েকজন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে এই পরামর্শ দিয়েছেন এবং এই পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে বেগম মতিয়া চৌধুরীর একটি বড় ভূমিকা ছিল বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এই পুরো বিষয়টি যখন প্রধানমন্ত্রী জেনেছেন তখন তিনি থানা নয়, খেলার মাঠের পক্ষে সম্মতি দিয়েছেন। এখানেও আমলাদের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক বিজয় সংঘটিত হয়েছে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক জেলা পরিষদগুলো আমলাদের কর্তৃত্বে নেয়ার একটি পরিকল্পনা ছিল। পৌরসভায় ইতিমধ্যে নিবার্হী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেই ধারায় জেলা পরিষদগুলোকে বিলুপ্ত করে সেখানে জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন আমলারা এবং নির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে বাদ দিয়ে সেখানে আমলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাজনীতিবিদদের হস্তক্ষেপে এই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বরং রাজনীতিবিদদের কারণেই জেলা পরিষদগুলোতে আগের চেয়ারম্যানদেরকেই প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কোন্দল এড়াতেই প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং সেই প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেন। ফলে এটি আমলাদের ওপর রাজনীতিবিদদের আরেকটি বড় ধরনের বিজয় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। আগামী দিনগুলোতে সরকারকে বিরোধী দলের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আর ওই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরকেই ড্রাইভিং সিটে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে এখন সরকার কাজ করছে বলে অনেকে মনে করেন এবং সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই এখন রাজনীতিবিদদেরকে ড্রাইভিং সিটে দেখা যাচ্ছে। আর সামনের দিনগুলোতে সরকার পরিচালনায় রাজনীতিবিদদের ভূমিকা এবং কর্তৃত্ব আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭