ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

‘সাগর পথে ইউরোপ যাত্রায় এক বছরে মৃত্যু ৩ হাজার’


প্রকাশ: 30/04/2022


Thumbnail

ঝাঁ চকচকে শহর, নির্মল পরিবেশ, কাজের আবাধ সুযোগের সাথে ভালো পারিশ্রমিক। মোদ্দাকথা একটি নিরাপদ সুন্দর জীবন। ইউরোপ নিয়ে আফ্রিকা এবং এশিয়ার মানুষের এমন চিন্তা থেকেই প্রতিবছর অবৈধভাবে সাগরপথে মহাদেশটিতে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কয়জনেরই বা শিকে ছিঁড়ে এই যাত্রায়। বেশিরভাগ যাত্রীর গন্তব্য হয় মহাদেশটির বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার কিংবা জেলে। খুব কমই এই সব বাধা পেরিয়ে পৌছুতে পারে ইউরোপের মাটিতে আর বাকিদের শেষ পরিণত লেখে বিশাল সমুদ্র। 

অভিবাসনপ্রত্যাশী এইসব মানুষেরা সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢুকার ক্ষেত্রে মৃত্যুভয় জেনেও পাড়ি একটু শান্তির আশায় পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে মহাদেশটিতে। প্রতিকূল এ পথ পাড়ি দিতে সমুদ্রে ডুবে প্রতিবছরই মারা যান হাজার হাজার অভিযাত্রী। তারপরও রুখা যাচ্ছে না ইউরোপে প্রবেশের মরিয়া চেষ্টাকে। বরং দিন দিন তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমাগত।

জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপ যাত্রায় ২০২১ সালে ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে তিন হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।

সেই সাথে গত বছর ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক পাড়ি দিতে গিয়ে ৩ হাজার ৭৭ জন নিখোঁজ হন, যা ২০২০ সালে ছিল ১ হাজার ৫৪৪ জনের বেশি।

শুক্রবার জেনেভায় সংবাদিকদের ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র শাবিয়া মান্টো বলেন, ‘আশঙ্কাজনকভাবে এ বছরের শুরুতে অতিরিক্ত ৪৭৮ জন ব্যক্তি সমুদ্রে মারা যান বা নিখোঁজ হন।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ১ হাজার ৯২৪ জন মধ্য ও পশ্চিম ভূমধ্যসাগরের নৌপথে নিখোঁজ বা মারা যান। কানারি দ্বীপপুঞ্জ হয়ে উত্তর আফ্রিকার আরেকটি নৌপথে মারা গেছেন আরও ১ হাজার ১৫৩ জন।

মান্টো বলেন, ‘সমুদ্রযাত্রার অনুপযুক্ত, রবারের নৌকায় গাদাগাদি করে বেশির ভাগ সমুদ্রযাত্রা হয়েছে যার মধ্যে অনেকগুলো ডুবে গেছে, প্রাণহানি হয়েছে। সমুদ্রযাত্রার বেশির ভাগই হয় মৌরিতানিয়া ও সেনেগালের মতো পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল থেকে। এই দুই দেশ থেকে কানারি দ্বীপপুঞ্জ হয়ে সমুদ্রযাত্রা বেশি বিপজ্জনক।'

মান্টো জানান, এই পথ পাড়ি দিতে কখনো ১০ দিন পর্যন্ত লেগে যায়। ‘এই পথে ইউরোপযাত্রায় অনেক নৌকাই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বা কোনো চিহ্ন না রেখেই হারিয়ে গেছেন,’ বলেন মান্টো।

ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে এই নৌপথকে ‘ভীষণ বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেছে। ইউএনএইচসিআর সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, কোভিড-১৯ মহামারি ও সীমান্ত বন্ধ থাকায় মরিয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বিপজ্জনক যাত্রার পথ বেছে নিতে পারেন।

জাতিসংঘের সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে আরও বলেছে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও যুদ্ধ, জলবায়ু পরবর্তন দেশ ছাড়তে এ বিপজ্জনক পথ বেছে নেওয়ার হার বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশ্ব সংস্থাটি বিপজ্জনক এ যাত্রা থামাতে ও মানব পাচারের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭