ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক বিরোধী কিন্তু বিএনপিতে শক্তিশালী যারা


প্রকাশ: 01/05/2022


Thumbnail

বলা হচ্ছে এখন বিএনপিতে তারেক জিয়াই শেষ কথা। তারেক যা বলছেন সেটি বিএনপির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বিএনপিতে কোন গঠনতন্ত্র নাই, কোন কমিটি নাই, কোন আলোচনা নেই। তারেক জিয়া যেভাবে যা বলবেন সেটিই বিএনপির সিদ্ধান্ত হিসেবে বাস্তবায়িত হবে। সাম্প্রতিক সময়ে দলের এককভাবে এককভাবে কর্তৃত্ব করছেন তারেক জিয়া এবং তিনি বিভিন্ন বিষয়ে লন্ডন থেকে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এভাবে একটি রাজনৈতিক দল চলতে পারে কিনা, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় জেলায় তারেক জিয়া ইফতার পার্টির মাধ্যমে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং সংগঠন গোছানোর জন্য নানা রকম পরামর্শ দিচ্ছেন। আর তৃণমূলে এসমস্ত ইফতারের অনুষ্ঠানগুলো তারেক জিয়ার বক্তৃতাপর্বে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির লাভ-ক্ষতি কি হয়েছে সেই হিসাব আসলে কেউই তেমন খুঁজে দেখেন না। তবে বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে বিএনপিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ক্রমশ পুঞ্জিভূত হচ্ছে এবং আগে যেটা ছিল অকল্পনীয়, এখন প্রকাশ্যেই তারেক জিয়ার সমালোচনা করছেন বিভিন্ন নেতারা। আর এই সমালোচনার মূল বিষয় হলো দল পরিচালনায় তারেক জিয়ার অযোগ্যতা, ব্যর্থতা এবং দায়িত্বহীনতা। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধাচরণ যারাই করছেন তাদের ওপরই খড়গ নেমে আসছে। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা যারা তারেক জিয়ার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এহসানুল হক মিলন তার সর্বশেষ উদাহরণ বলে জানা গেছে। কিন্তু এর মধ্যেও বিএনপিতে কিছু নেতা আছেন যারা প্রকাশ্যে তারেক জিয়ার সমালোচনা করেও বিএনপিতে শক্তিশালী। এদের মধ্যে রয়েছেন-

১. ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন: বিএনপিতে মনে করা হয় ক্রমশ প্রভাবশালী নেতা হয়ে উঠছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তারেক জিয়ার একনায়কতান্ত্রিক দল পরিচালনার বিরুদ্ধে যারা কিছু কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে যারা স্বাতন্ত্র্য অবস্থান গ্রহণ করতে পারছেন তাদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অন্যতম। তারেক জিয়ার বিরোধী হয়েও তিনি বিএনপিতে শক্তিশালী। কারণ, বিএনপিতে তার বিপুল জনপ্রিয়তা আছে, তিনি বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

২. গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও তারেক জিয়া বিরোধী হিসেবে পরিচিত। তারেক জিয়ার হুটহাট বহিষ্কারের তিনি প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন। কিন্তু তারপরও তারেক জিয়া এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। কারণ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও বিএনপিতে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং তৃণমূলে তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে।

৩. রুহুল কবির রিজভী: এই মুহূর্তে বিএনপিতে জনপ্রিয় তাদের অন্যতম রুহুল কবির রিজভী। রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে তারেক জিয়ার বিরোধ প্রকাশ্য। রুহুল কবির রিজভী তার কোন সংবাদ সম্মেলনে তারেক জিয়ার নামই উচ্চারণ করেন না। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করেন, এরকম মন্তব্য প্রকাশও করে বেড়ান। তারপরও রুহুল কবির রিজভীর ব্যাপারে তারেক জিয়া কিছু করতে পারে না। কারণ, রুহুল কবির রিজভীর প্রতি তৃণমূলের বিশ্বাস, আস্থা এবং রুহুল কবির রিজভীর নিজের ব্যক্তিত্ব। 

৪. মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন: বিএনপির আরেকজন জনপ্রিয় নেতা মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিনও তারেক বিরোধী। এটা বিএনপিতে এখন প্রকাশ্য। হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধেও তারেক জিয়া কোনকিছু করতে পারেন না। কারণ, হাফিজ উদ্দিনেরও জনপ্রিয়তা রয়েছে। আরেকটি বিষয় গুলো যে, হাফিজউদ্দিন শুধুমাত্র দলে না, দলেন বাইরেও তার একটি অবস্থান এবং প্রভাব রয়েছে।

এ সমস্ত নেতাদের কারণেই তারেক জিয়ার আধিপত্যের বিরুদ্ধে যেকোনো সময়ে বিএনপিতে বিদ্রোহ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন এবং নির্বাচনের আগে এই মতবিরোধ বিএনপিকে বিভক্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল ধারণা করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭