রাজধানী ঢাকায় দুর্বিষহ যানজট প্রতিদিনের সঙ্গী। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মহল্লার অলি-গলি যানজটে থাকে স্থবির। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কগুলোতে যানজটের চিত্রে অভ্যস্ত রাজধানীবাসী। কিন্তু চিরচেনা যানজটের সেই ঢাকা এখন প্রায়ই ফাঁকা, কোলাহল নেই, যানজট নেই সড়কগুলোতে। নিয়মিত যে পথ পাড়ি দিতে সময় লাগতো ২ ঘণ্টা কিংবা তারও অধিক, সেই পথ এখন মাত্র ১০-১৫ মিনিটেই যাওয়া যাচ্ছে। তবে এর পেছনে নেই কোন যাদু কিংবা চমক। ঈদুল ফিতরের আর একদিন বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করেই রাজধানী ছেড়ে গেছে অর্ধেকের বেশি মানুষ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে গত বুধবার থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করে রাজধানীবাসী। সেই ধারাবাহিকতায় আজ রোববার রাজধানী অনেকটাই ফাঁকা: বিগত ঈদগুলোতে ঈদের আগের দিন পর্যন্তও কিছুটা যানজট পরিলক্ষিত হলেও এবার একদিন আগেই এক অচেনা ঢাকার আবির্ভাব।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকার সড়কগুলোতে এখন নেই যানজট। গুলিস্তান, পল্টন, সচিবালয়, কাকরাইল, মৎস্যভবন, হাইকোর্ট ও শাহবাগ এলাকার রাস্তাগুলো এখন ফাঁকা মাঝে মধ্যে কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ী, রিকশা, মোটরসাইকেল ও গণপরিবহন দেখা গেলেও যানজটের দেখা মিলেনি। গণপরিবহন থাকলেও তা সংখ্যায় অনেক কম। ফলে মোটরসাইকেল, সিএনব্বি ও রিকশার আধিক্যই বেশী দেখা যায়। ফলে রিকশা, মোটরসাইবে। চাপকদের বলেন, সিএনজি ও সিএনজি এবং মোটরসাইকেল চালকদের বেশ ভালো আয় হচ্ছে।
এদিকে, রাজধানীর নিউমার্কেট, পাখপাথর বসুন্ধরা সিটি এলাকাগুলোতে কিছুটা যানজট পরিলক্ষিত হলেও ততটা তীব্র নয়। তবে এখানে রিকশা, সিএনজি, ব্যক্তিগত গাড়ী এবং মোটরসাইবেল ছাড়া তেমন কোন সম্পরিবহন দেখা যায়নি। ঈদের আর ১দিন বাকি থাকায় ঈদের শপিং করতে এখন ব্যস্ত রাজধানীবাসা। তবে শপিংমলে চাপ এএখন অনেকটাই কমে এসেছে। ইতোমধ্যে কেনাকাটা সেরে ফেলেছেন অধিকাংশই। তাঁরা যারা এসেছেন তারা অনেকটাই আন্ততে আছেন যানয়ই নেই বলে এবং একইসাথে তাঁরা প্রত্যাশা করেন যে, সড়কগুলো যেন সবসময় এমন যানজট মুক্ত থাকে। শুধু রাজধানীর রাজপথ ন্যায় অলি-গলিতেও দেখা গেছে ঈদের ছুটির আমেজ। রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলির ছোট মুদির দোকান, চায়ের দোকানগুলোতেও নেই চিরচেনা আড্ডা, গলদ। ফাকা আল-গলিতে খুব জরুরি কাজ ছাড়া কাউকে হতে দেখা যায়না।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, কত মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন বলে রাজধানীর অন্যরূপে আবির্ভূত হলো? ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারেনা দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত চার দিনে ৭৩ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। মোবাইল ফোনের সিমের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে তিনি এ তথ্য দিয়েছেন। আজ রোববার এবং আগামীকাল পর্যন্ত রাজধানীতে যায় মানুষের সংখ্যা ১ কোটির বেশি হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে যারা রাজধানীতেই ঈদ করছেন তাঁরা দেখছেন অন্যরূপে আবির্ভূত হওয়া অচেনা ঢাকা।