ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি পুড়িয়েছে, আওয়ামী লীগ গড়েছে


প্রকাশ: 02/05/2022


Thumbnail

বিএনপির মিথ্যাচারের রাজনীতি নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক করা এবং বৈঠকের পর গণমাধ্যমে বৈঠকের ব্যাপারে ভুল তথ্য উপস্থাপন করার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দলটির মিথ্যাচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের ব্যাপারটির পর দলটির সঙ্গে বৈঠক করার বিষয়ে এক প্রকার অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন দূতাবাস দলটির ব্যাপারে সতকর্তা অবলম্বন করছে। সম্প্রতি এমন আরেক মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে দলটি। মে দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন যে, শ্রমজীবীদের সঙ্গে বিএনপির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। দলটির এই দাবিতে এক ধরনের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে শ্রমিকেরা। তাদের অভিযোগ বিএনপির এই ধরনের বক্তব্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ছাড়া কিছু নয়। বিএনপি ২০১৪ সালের কথা ভুলে গেলেও আমরা সেই তখনকার ঘটনাগুলোর কথা ভুলে যায়নি বলে দাবি শ্রমিকদের। সেই সময় বিএনপির টানা হরতাল অবরোধ আর তাদের জ্বালাও পোড়াও নীতির কারণে হাজার হাজার শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক শ্রমিক তাদের রুটি রুজির একমাত্র অবলম্বন হারিয়েছে। বাসের মধ্যে আগুন দিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে।

এসব কিছু করার পর দলটির শ্রমিকদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক দাবি করাকে অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, শ্রমিকদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কখনোই নিবিড় হতে পারে না। কারণ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে গুণগত একটি পার্থক্য রয়েছে। বিএনপি কোনও প্রথাগত দল নয়। যেভাবে একটি দল গঠন হওয়ার কথা বিএনপি সেভাবে গঠিত হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যা, পরে জাতীয় চার নেতাকেও হত্যা করার পর একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। তখন জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলেন, তারপর তিনি রাজনৈতিক দল গঠন করলেন। আওয়ামী বিরোধী ও স্বাধীনতা বিরোধীসহ সব পক্ষকে এক করলেন তিনি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক দল গঠন করেছে ধাপে ধাপে- তৃণমূল থেকে, সংগ্রাম করে। তারপর তারা ক্ষমতায় গেছে। ফলে দুই দলের দুই ধরনের বৈশিষ্ট্য। সুতরাং আওয়ামী লীগ যেভাবে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য মাঠে থেকে আন্দোলন করছে বিএনপির সে ধরনের রেকর্ড নেই বলে দাবি বিশ্লেষকদের।

সুতরাং শ্রমিকদের জন্য বিএনপি কিছু করতে পেরেছে বা করতে পারবে সেটা ভাবার অবকাশ নেই। অথচ শ্রমিকদের জন্য এ সরকারের অবদান অগণিত। সরকার মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এই তহবিল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো খাতে নিয়োজিত কোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যেও আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে। রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, শ্রম কল্যাণ নিশ্চিতকরণে ‘জাতীয় শ্রমনীতি, ২০১২’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা, ২০১৩’ এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, ২০১১’ প্রণয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি, মানবসম্পদ উন্নয়নে ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল' গঠন করা হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদপ্তরকে সম্প্রতি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত করেছি। নারী শ্রমিকদের নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে এবং নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দুইটি বহুতল শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ বিএনপির ডাকা হরতাল অবরোধের কারণে কত শ্রমিকের ঘরের চুলায় আগুন জ্বলেনি, না খেয়ে দিন যাপন করতে হয়েছে সে হিসেব কি বিএনপির কাছে আছে? ফলে একটি কথা বলাই যায়, বিএনপি দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আর আওয়ামী লীগ সব সময় দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে। তারই প্রতিফলন আজকের বাংলাদেশ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭