ইনসাইড বাংলাদেশ

গওহর রিজভীর কি হয়েছে?


প্রকাশ: 02/05/2022


Thumbnail

ড. গওহর রিজভী প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা। তারচেয়েও বড় পরিচয় হলো তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক, শিক্ষক এবং চিন্তাবিদ। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বই লেখার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। একান্তে নিভৃতে এই গ্রন্থ নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন। আর এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ছুটিও অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে নানা রকম আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে গওহর রিজভীর অনুপস্থিতি ভালোমতো অনুভূত হচ্ছে এবং গওহর রিজভী কেন এই সংকটময় সময়ে নিষ্ক্রিয় এই কথাটা আওয়ামী লীগের মধ্যে তো বটেই অন্যান্য রাজনৈতিক মহলে বার বার আলোচিত হচ্ছে।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পিছনে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের মধ্যে ড. গওহর রিজভী অন্যতম ছিলেন। সে সময় তিনি ছিলেন প্রায় অপরিচিত, বাংলাদেশে এবং আওয়ামী লীগের মধ্যেও তাকে খুব কম মানুষ চিনতো। ২০০৯ সালে যখন শেখ হাসিনা তাকে আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয় তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু দ্রুতই তিনি প্রমাণ করেন যে, তিনি বাংলাদেশের একজন কীর্তিমান ব্যক্তি এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্যতা তৈরির ক্ষেত্রে ড. রিজভী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক বড় বড় ইস্যুগুলোতে রিজভী ছিলেন আওয়ামী লীগের অন্যতম ত্রাতা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যখন সরকার একের পর এক চাপের মুখে রয়েছে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি, র‍্যাবের বর্তমান এবং সাবেক সাত কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করেছে, বাংলাদেশের ওপর একপেশে একটি মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করেছে, সে রকম একটি বাস্তবতা ড. রিজভীকে নতুন করে স্মরণ করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করেন যে, এই সময়ে ড. রিজভীর কূটনৈতিক ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার আলাদা একটা প্রভাব বলয় রয়েছে এবং মার্কিন নীতিনির্ধারক মহলে ড. গওহর রিজভী একটি সম্মানিত নাম।

কূটনৈতিক মহল বলছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের হাতেগোনা যে কয়েকজন নাগরিক তাদের তা সপ্রতিভার জন্য সম্মানিত তাদের মধ্যে ড. রিজভী অন্যতম। তাছাড়া একজন বিচক্ষণ শিক্ষাবিদ এবং কূটনীতিক হওয়ার কারণে যেকোনো বিষয়ে দর কষাকষি করা এবং প্রতিপক্ষকে বোঝানোর ক্ষেত্রে ড. রিজভীর আলাদা একটা গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এই সময় তাকে ভূমিকাহীন দেখা গেছে। চলতি বছরে তিনি মাত্র দুইবার এসেছিলেন, দ্বিতীয় দফায় দেশে এসেছিলেন স্বল্প সময়ের জন্য। প্রথম দফায় জানুয়ারি মাসে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেছিলেন। কিন্তু এই বৈঠকের ফলাফল বাস্তবে লক্ষ্য করা যায়নি। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন যে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যে ঘটনাপ্রবাহ চলছে সেই ঘটনাপ্রবাহে ড. রিজভীর মত একজন স্কলার আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত জরুরী এবং তিনি যদি এই ইস্যুগুলোতে সক্রিয় হন তাহলে সংকটমোচনের ক্ষেত্রে অনেক ইতিবাচক ভূমিকা হতে পারে বলে মনে করা হয়। কিন্তু গওহর রিজভী এই পরিস্থিতিতে নীরব কেন, সেটি অনেকের প্রশ্ন। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জনও আছে। বছরের গোঁড়ার দিকে তার পদত্যাগের গুঞ্জনও শুরু হয়ে গিয়েছিল কিন্তু ড. গওহর রিজভীর এই পদত্যাগ বা অন্য কোনকিছুই সঠিক নয়। গবেষণা কাজে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন এটি নিশ্চিত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সংকটের সময় আরও সক্রিয় দেখতে চায় আওয়ামী লীগ এবং সরকারের লোকজন। ড. রিজভী কি একটু পর্দার আড়াল থেকে সক্রিয় হবেন?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭