ইনসাইড পলিটিক্স

হাজী সেলিম সরকারের নতুন বোঝা


প্রকাশ: 04/05/2022


Thumbnail

অবশেষে হাজী সেলিম ব্যাংককে গেছেন। যদিও তাঁর আইনজীবী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন এবং চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরবেন। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে এটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে বিরোধী পক্ষ বলছে হাজী সেলিমের মতো একজন নেতা দণ্ডাদেশ পাওয়ার পরও বিদেশে যেতে পারেন, অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়না। এটি একটি রাজনৈতিক বিতর্কের অবতারণা করেছে। উল্লেখ্য, দেশের সর্বোচ্চ আদালত দুর্নীতির মামলায় হাজী সেলিমের দণ্ড বহাল রেখেছেন এবং তাকে ৩০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী বলছেন যে, সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের পর হাজী সেলিমের আর সংসদ সদস্য পদ থাকে না। এই অবস্থায় তার বিদেশ যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। আত্মসমর্পণের আগে তিনি অন্য কোথাও যেতে পারে না বলেও দুদকের আইনজীবীরা বলেছেন।

অবশ্য হাজী সেলিমের আইনজীবীরা ভিন্ন কথা বলছেন। তারা বলছেন যে, হাজী সেলিমকে আত্মসমর্পণের একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়সীমা পর্যন্ত তিনি মুক্ত এবং স্বাভাবিক একজন নাগরিক। এই সময়সীমার মধ্যে আদালতের নির্দেশে তিনি প্রতিপালন করবেন বলে হাজী সেলিমের আইনজীবীরা দাবি করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, হাজী সেলিমের দণ্ড যখন সর্বোচ্চ আদালত বহাল রেখেছেন তখন তার সংসদ সদস্য পদ থাকে কি করে? সংবিধান অনুযায়ী এ ধরনের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি যিনি তার দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে দণ্ডপ্রাপ্ত তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকার অযোগ্য। কাজেই, যে মুহূর্তে সর্বোচ্চ আদালত তার দণ্ডের ব্যাপারে রায় দিয়েছেন তখনই তার বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত ছিলো। তার সদস্যপদ বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনকে রায়ের কপি পাঠানোর প্রয়োজন ছিলো। নির্বাচন কমিশন এই রায়ের কপি অনুযায়ী সংসদকে অবহিত করতো এবং সংসদ সচিবালয় হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ শূন্য করতো, যেটি হয়েছিল সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের ক্ষেত্রে যিনি বিদেশে দণ্ডিত হওয়ার কারণে তার সদস্যপদ বাতিল হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে যে, হাজী সেলিমের প্রতি কেন এই মমত্ববোধ এবং কেন বাড়তি মনোযোগ দেখানো হচ্ছে? হাজী সেলিম সরকারের জন্য একটি বাড়তি চাপ হয়ে দেখা দিচ্ছে। এরকম একটি ব্যক্তিকে প্রটেকশন দিয়ে সরকারের কি লাভ হচ্ছে? নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনাগুলো সরকারের ভাবমূর্তি জন্য বড় ধরনের আঘাত হতে পারে বলে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এর আগেও হাজী সেলিমের পুত্র নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে পিটিয়েছিলেন, এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিস্ময়করভাবে তিনি সব মামলা থেকে জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসেন। ইরফান সেলিমের ওই ঘটনা সরকারকে বিব্রত করেছিল। হাজী সেলিমরা সরকার বা আওয়ামী লীগের কোনো ভালো কাজে আসে না বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। বরং তাদের অপকর্মের বোঝা পুরো দলের ওপর বর্তায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, হাজী সেলিমের ব্যাপারে সরকারের আরও কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করা উচিত ছিলো। আওলীগের নেতারাও মনে করছেন যে, হাজী সেলিমের ঘটনা একটি বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর ফলে সরকারের ওপর এক ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ তৈরি হবে, যেটি নির্বাচনের আগে কাম্য নয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭