কালার ইনসাইড

‘ফ্লোর নম্বর ৭’ দশে আট


প্রকাশ: 05/05/2022


Thumbnail

তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফি মানেই ভিন্ন কিছু। ক্যারিয়ারের শুরুতেই ‘পোড়ামন ২’, ‘দহন’ নির্মাণ করে বেশ আলোচনায় চলে আসেন তিনি। তার প্রতিটি কাজেই যেন ভিন্ন কিছু খুঁজে পায় দর্শক। বড় কাজের পাশাপাশি ওটিটি মাধ্যমেও বেশ সাড়া ফেলেছেন। ওটিটি প্লাটফর্ম চরকিতে তাঁর ওয়েবফিল্ম ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘টান’ মুক্তি পেয়েছিলো, যেগুলো মুক্তির পর বেশ আলোচনা তৈরি করেছিলো। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাঁর দ্বিতীয় ওয়েবফিল্ম ‘ফ্লোর নম্বর ৭’। সবকিছু মিলিয়ে বেশ প্রশংসাই পাচ্ছে ছবিটি। নতুন এই ওয়েবফিল্মটিতে অভিনয় করেছেন বুবলী, তমা মির্জা, রাজ, শাহরিয়ার নাজিম জয়, সুমন আনোয়ারসহ অনেকেই। এবার এই আলোচিত কাজটি নিয়ে একটু ময়নাতদন্ত করা যাক।

শুরুতেই আমরা যাবো ছবিটির গল্পের দিকে। বর্তমানে আমাদের মিডিয়া জগতের কিছু অপ্রিয় সত্য তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে দেখানো হয়েছে দেশের নামীদামী তারকাদের কাছে নির্মাতা কীভাবে জিম্মি হয়ে থাকে। একজন পরিচালককে বলা ক্যাপ্টেন অফ দ্যা শিপ। চলচ্চিত্রকে জাহাজের সাথে তুলনা করলে সেই জাহাজের প্রধান নাবিক হলেন পরিচালক। কিন্তু বর্তমান সময়ে যেন বদলে গেছে চিত্র। কোন নায়ক-নায়িকা সুপারস্টার হয়ে গেলে তাঁদের স্যার-ম্যাডাম বলে সম্বোধন করে সব শর্তে মেনে নিতে হয়। পাশাপাশি একজন নতুন নায়িকা কাজ করতে গেলে কীভাবে তাঁকে পদে পদে বিভিন্ন ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তা ছবিটিতে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। শুধু তাই নয়, মিডিয়ায় নায়িকাদের মাঝে যে আভ্যন্তরীণ একটি জেলাসি কাজ করেন তাও গল্পে বাদ যায়নি। পাশাপাশি প্রযোজনার নামে অনেকেই চলে আসেন মিডিয়া জগতে, যেখানে তাঁদের উদ্দেশ্য থাকে ভিন্ন। সবকিছু মিলিয়ে কিছু অপ্রিয় সত্য নির্মাতা বেশ সুন্দর ভাবেই তাঁর গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে গ্রাম থেকে আসা একজন মেয়ে কীভাবে এত দ্রুত পরিবর্তন করেন নিজেকে তা তেমন ভাবে ফুটে উঠেনি।

এবার আসা যাক ছবির বিভিন্ন চরিত্রের দিকে। ওয়েবফিল্মটিতে দেশের এক নাম্বার নায়িকা অবনী চরিত্রে অভিনয় করেছেন বুবলী। এর আগে রাফির ‘টান’এ তাঁর অভিনয়ের দক্ষতার সাক্ষর রেখেছিলেন। এবারও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। দেশের এক নাম্বার নায়িকা হয়ে কীভাবে নির্মাতা, প্রযোজককে হাতে আনতে হয় তা তিনি বেশ সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর ডায়লগ ডেলিভারি থেকে গেটআপ সবকিছুই ছিলো চোখে পড়ার মত।

এদিকে ছবিটিতে দ্বিতীয় নায়িকা হিসেবে পাখি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা। এর আগে ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ দিয়ে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে এবার আমি বলবো তিনি ব্যর্থ হয়েছেন নিজেকে প্রমাণ করতে। গ্রাম থেকে উঠে আসা একজন মেয়ে হিসেবে গল্পে তমা মির্জাকে দেখানো হয়েছে। তাঁর পোশাক থেকে শুরু করে সবকিছুতেই সেটির ছাপ ছিলো। কিন্তু তাঁর কথাবার্তা, হুট করে তাঁর পরিবর্তন হওয়াটা একটু ধাক্কা দিয়েছে। পাশাপাশি আইটেম গানটিতেও বেশ বেমানান লাগছিলো তাঁকে।

নতুন নায়ক হিসেবে রাজ বেশ ভালোই করেছে। যদিও কিছু জায়গায় তাকে আরও একটু বেশী এগ্রেসিভ হলে ভালো লাগতো। তবে সবকিছু মিলিয়ে ভালোই করেছেন।

এই ওয়েবফিল্মটি দিয়ে অনেক দিন পর অভিনয়ে দেখা গেলো শাহরিয়ার নাজিম জয়কে। তাঁর এন্ট্রি ছিলো চোখে লাগার মত। বাংলাদেশের পুলিশের কিছু কর্মকর্তাদের চরিত্র বেশ সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। তবে একটি বিষয় আমার কাছে দর্শক হিসেবে বেশ দৃষ্টিকটু লেগেছে। তা হলো কোন অভিযুক্ত নারীকে গ্রেফতার করতে হলে মহিলা পুলিশ নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সিনেমাটিতে একজন পুরুষ পুলিশ সদস্য গায়ে হাত দিয়ে দেশের নামী একজন নায়িকাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি।

সুমন আনোয়ার নিয়ে আসলেই কিছু বলার নেই। তিনি তাঁর সাবলীল অভিনয় দিয়ে সবসময় দর্শকের প্রশংসা পান। এবারও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি।

ছবির কালার, এডিটিং, মিউজিক বেশ ভালোই ছিলো।

গল্প, স্ক্রিন প্লে, মিউজিক, কালার, এডিটিং সবকিছু মিলিয়ে ‘ফ্লোর নম্বর ৭’ নিয়ে আমার রেটিং দশে আট।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭