দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কড়া নাড়ছে দরজায়। আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জাতীয় এই সংসদ নির্বাচন। জোয়ার এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। তৎপর হয়ে উঠেছে নিজেদের দল গোছাতে। নানা ধরনের মেরুকরণের চেষ্টা চলছে রাজনীতিতে। আবার এই নিয়ে এখন থেকে সরব হয়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি সব মহল। কেউ ফায়দা লুটতে নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের, কেউবা নির্বাচনের প্রাক্কালে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে। পরিস্থিতি যাই হোক নির্বাচনের আগে নিজ নিজ দলে ঐক্য গড়ে তোলাই দলীয় নেতাকর্মীদের এখন প্রধান কর্তব্য। তবে এর মধ্যে কেউ কেউ বেশি কর্তব্যপরায়ণ হতে গিয়ে বেফাঁস কিছু মন্তব্য করতে গিয়ে দলেরই সর্বনাশ করেছেন।
এর মধ্যে নোয়াখালী জেলার রাজনীতি যেন হঠাৎ হঠাৎই সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তার ছোট ভাই নোয়াখালী জেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে নিয়ে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে রাজনীতি বারংবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীতে নিজ নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের যখন নিজ এলাকায় সফরে ঠিক তখন নিজ বাড়িতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে আবার দলটির সাধারণ সম্পাদক নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। ওবায়দুল কাদের তাঁর ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে ‘বাঘের চেয়েও বেশি ভয়’ পান বলে মন্তব্য করেন তিনি। শুধু তাই নয় আঞ্চলিক রাজনীতির নানা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অভিযোগ করেন একরামুল করিম চৌধুরী এবং এসব অভিযোগের পাশাপাশি নিজের দলপ্রীতিকে ফোকাস করেছেন তিনি। নিজ দলের নেতার বিরুদ্ধে এবং দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এভাবে প্রকাশ্যে কথা বলায় দলে একরামুল করিম চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, আমরা অতীতেও দেখেছি নিজের দলপ্রীতি ফোকাস করতে গিয়ে অনেকে অনেক ধরনের বেফাস মন্তব্য করেছেন। যার শেষ পরিণতি কারোই ভালো হয়নি। তারা বলছেন, দলের ভিতরে মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু সেগুলোর মিমাংসা করার দায়িত্বও নিজের মধ্যে পড়ে। নোয়াখালীর স্থানীয় রাজনীতির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে একরামুল করিম চৌধুরী যেভাবে প্রকাশ্যে মন্তব্য করছেন সেটা প্রত্যাশিত না। তার কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা না করে দলের নেতার বিরুদ্ধে মন্তব্য এবং অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলে তিনি দলের মধ্যে ক্ষত তৈরি করছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।