ইনসাইড থট

বিনা টিকেটে রেলভ্রমণ, অতঃপর!


প্রকাশ: 08/05/2022


Thumbnail

ঘটনাটা তিল থেকে তাল হয়েছে। রেলমন্ত্রীর স্ত্রী স্টেশন মাস্টারকে ফোন করে তার তিন ভাগ্নের জন্য তিনটে টিকেট রাখতে বলেন। স্টেশন মাস্টার বলেন, টিকেট লাগবে না। অনেক এসি কেবিন তো ফাঁকাই যায়, ওরা একটি কেবিনে বসে যেতে পারবে। এটা ছিল স্টেশন মাস্টারের অপ্রয়োজনীয় ভদ্রতা যা না দেখালেই শোভন হতো। তিনি আসলে এটা বলতে বা করতে পারেন না। এটা তার ক্ষমতার মধ্যে পড়ে না। বিনা টিকেটে ট্রেন ভ্রমণ একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 

স্টেশন মাস্টারের পরামর্শমতে ভাগ্নে তিনজন একটা এসি কেবিনে চড়ে বসেন। পথিমধ্যে রাত তিনটার দিকে টিটি টিকেট চাইলে ভাগ্নেরা টিকেট দেখাতে ব্যর্থ হন।

এরপর আমরা দুরকমের ভাষ্য পাই। টিটিই'র ভাষ্য এবং যাত্রীপক্ষের ভাষ্য দুরকমের। তবে এটা নিশ্চিত, এখানে দুই পক্ষের মধ্যে অযাচিত বাক্য বিনিময় হয়েছে, যার ফলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়েছে। 

ভাগ্নে যাত্রীদের ফোন পেয়ে মিসেস রেলমন্ত্রী অপমানিত বোধ করেন এবং স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষকে বলে টিটিইকে বরখাস্ত করান যা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে হুট করে একজন যাত্রীর চিঠি পেয়েই কাউকে এভাবে বরখাস্ত করতে পারেন না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়স্বজন তোষণের পুরোনো এই সংস্কৃতিই এখানে আমরা দেখতে পাই। 

ঘটনার সময় মাননীয় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন তার পঞ্চগড়ের গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। রাত তিনটার দিকে ঘটার কারণে তাকে তখনি এই ঘটনা জানানো হয় নি। এবং তিনি অনেক পরে এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। ততক্ষণে পুরো ঘটনাটা ডালপালা মেলে অনেক দূর গড়িয়েছে। 

তবে রেলমন্ত্রীর পরবর্তী ভূমিকাকে আমি সমর্থন করি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, তদন্ত সাপেক্ষে যদি টিটিই নির্দোষ প্রমাণিত হন তবে শাস্তির পরিবর্তে দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে পুরস্কৃত করা হবে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে এখন কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটা দেখার জন্য আমরা অপেক্ষায় রইলাম। 

সমস্ত ঘটনায় ঈশপের শিক্ষা হলো, মন্ত্রীর স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে ড্রাইভার পর্যন্ত লোকজনের যে দাপট আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি, তা পরিবর্তনের সময় এসেছে। এ ব্যাপারে সমগ্র জাতির মানসিকতার পরিবর্তন জরুরী। নইলে এসব ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, সাধারণ মানুষ বিরক্ত হয়। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এপর্যন্ত তার কর্মকাণ্ডে যথেষ্ট সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। তার স্ত্রীর ভাগ্নেদের নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা তার জন্য বিব্রতকর হয়েছে, যার জন্য তার প্রত্যক্ষ কোন দায় ছিল না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭