ইনসাইড বাংলাদেশ

বিদেশিদের কাছে কান্নাকাটি বন্ধ করে আমার কাছে আসুন: প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশ: 08/05/2022


Thumbnail

বিদেশিদের কাছে কান্নাকাটি বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রী কাছে শ্রমিক নেতাদের আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমি সেই সব শ্রমিক নেতাদের বলব যে আপনারা বিদেশের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি না করে আপনাদের যদি সমস্যা থাকে আমার কাছে আসবেন। আমি শুনব। মালিকদের কাছ থেকে যদি কিছু আদায় করতে হলে তা আদায় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার (৮ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান মে দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শ্রমিকদের জন্য এত কাজ করেছি। তারপরও আমরা দেখি কিছু কিছু শ্রমিক নেতা আছেন তারা কোনো বিদেশি বা সাদা চামড়া দেখলেই তাদের কাছে নালিশ করতে খুব পছন্দ করেন। আমি জানি না এই মানসিক দৈন্য কেন বা এর সঙ্গে কি অন্য কোনো স্বার্থ জড়িত আছে? কোনো দেনা-পাওনার ব্যবস্থা আছে? সেটা আমি জানি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আত্মমর্যাদা নিয়ে চলবে। আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। আমাদের সব উন্নয়ন প্রকল্প, যেসব উন্নয়ন প্রকল্প এক সময় বিদেশি অনুদানে বা বিদেশি সহযোগিতায় নির্ভরশীল ছিল, আজ আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৯০ ভাগ আমরা নিজেদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে— পদ্মা সেতু আমাদের নিজেদের অর্থায়নে সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের টাকায় আমরা নির্মাণ করেছি। যদি এটা করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না? আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, কারও কাছে আমাদের হাত পেতে চলতে হয় না। দেশের সমস্যা, আমরা দেশেই সমাধান করতে পারব।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কোনো সমস্যা হলে অন্তত আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে, অন্তত আমি যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি, অন্তত এই নিশ্চয়তা দিয়ে পারি— যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে পারি আমরা নিজেরাই। আর আমি এটা বিশ্বাস করি— আমাদের দেশের মালিক-শ্রমিক তারা নিজেরা বসে আলোচনা করে সমস্যা হলে সমাধান করবে। আমরা নিজের দেশের বিরুদ্ধে বা নিজের দেশের সম্পর্কে অন্যের কাছে কেন কাঁদতে যাব, বলতে যাব? আমরা তো এটা চাই না।

সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। সেই পরিকল্পনা আমি দিয়ে যাচ্ছি, ২০৪১-এ বাংলাদেশ কেমন হবে। ২১০০ সালে বাংলাদেশ কেমন উন্নত হবে, এই বদ্বীপ পরিকল্পনা নিয়ে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে আমরা তারই ভিত্তিতে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। পরবর্তীতে একের পর এক যারাই ক্ষমতায় আসুক তারা যদি এটা অনুসরণ করে এই বাংলাদেশকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা আমরা মোকাবিলা করেছি, পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা আমরা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা পারি করতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। ২১ বছর অন্ধকারে ছিলাম। আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত অন্ধকারে ছিলাম। কিন্তু ২০০৯ থেকে যে আলোর পথে যাত্রা শুরু হয়েছে, এটা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের সব শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষ— তাদের কল্যাণ হোক সেই কামনা করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শ্রমজীবী মানুষের সুরক্ষা এবং তাদের কল্যাণের জন্য যেসব আইন, নীতিমালা, বিধিমালা বা সুরক্ষা নীতিমালা— সেগুলো কিন্তু আমরা সব করে যাচ্ছি। কারখানা সুরক্ষার জন্য আমরা কিন্তু শিল্প পুলিশও গঠন করে দিয়েছি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমি মনে করি সারা পৃথিবীতে ১০টা গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি আছে। তার মধ্যে ৭টা কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে। সেটা করার জন্য যা যা দরকার ছিল— ট্যাক্স কমিয়ে দিয়ে, কোনোটা সম্পূর্ণ করমুক্ত শুল্কমুক্ত করে দিয়েই কিন্তু আমরা সব প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগটা মালিকদের জন্য করে দিয়েছিলাম। আমাদের শ্রমিকরা যেন সুন্দরভাবে-নিরাপদভাবে কাজ করতে পারে সে ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব সময় জনগণের জন্য কাজ করে, জনগণের জন্যই কাজ করবে। আমি মনে করি, আমাদের দেশকে উন্নত করতে হলে এই শ্রমিক শ্রেণির অবদানটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শ্রমিক-মালিক উভয়েই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলবেন। সেটাই আমি চাই। শ্রমিক-মালিকের মধ্যে যদি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক না থাকে তাহলে কখনো উন্নয়ন হয় না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭