ইনসাইড ইকোনমি

অর্থনীতিতে শঙ্কার কালোমেঘ


প্রকাশ: 13/05/2022


Thumbnail

বর্তমান সরকার টানা তিন মেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন স্বল্প আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক। বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসরমান দেশগুলোর তালিকায়ও বাংলাদেশ রয়েছে। এমনকি করোনার মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতিকে ভালোভাবে সামাল দিয়েছে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলংকার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে নানারকম চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে। শ্রীলংকা ইস্যু, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বের নানা দেশে অর্থনৈতিক সংকট দানা বেঁধে উঠছে এবং বিশ্ব একটি অর্থনৈতিক সংকটের গহ্বরের মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বলে কোন কোন অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছু উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং অর্থনীতিতে যে শঙ্কার কালোমেঘের জমা হচ্ছে সেগুলোকে খুব নজরে রাখতে হবে এবং এই অস্বস্তির জায়গাগুলোকে দ্রুত কাটাতে হবে বলেও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বিভিন্ন অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট বাংলাদেশেও দানা বাঁধতে পারে নানা কারণে। বাংলাদেশে গত কিছুদিন ধরে অর্থনীতিতে নানারকম ইতিবাচক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, আমদানি ব্যয় অনেক বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের আমদানি ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। তবে আশার কথা হলো যে, রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ৫ মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ৩৫ শতাংশেরও বেশি। তবে আমদানি ব্যয় এবং রপ্তানি ব্যয়ের তুলনায় বাংলাদেশে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে এবং গত বছরের তুলনায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত বছরে বাণিজ্য ঘাটতি ছিলো এক হাজার ২৩৬ কোটি ডলার, এবার তা দুই হাজার ২৩০ কোটি ডলার হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে আর সঙ্কটের জায়গা হচ্ছে প্রবাসী আয় কমেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির যে শক্ত ভিত্তি তার অন্যতম একটি কারণ ছিলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। কিন্তু গত ৫ মাসে এই রেমিটেন্স ১৬ শতাংশ কমেছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আর সবচেয়ে উদ্বেগের দিক হলো, বাংলাদেশের চলতি হিসাবে ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত অর্থবছরে ছিল ৫৫ কোটি ডলার, এ বছরে তা এক হাজার ৪০৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন যে, আমাদের এই সঙ্কটগুলোকে মোকাবেলা করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। ইতোমধ্যে সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। সামনের দিনগুলোতে সরকার আরো কিছু কৃচ্ছতা সাধনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আগামী বাজেটকে সরকার একটু সংযত এবং বস্তুনিষ্ঠ বাজেট হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। এই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সামনের দিনগুলোতে সরকার কিছু পদক্ষেপের কথা ভাবছে। অর্থনৈতিক সংকটের আঁচ ইতোমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে, ডলারের বাজার অস্থির হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সে কারণেই অর্থনীতির কালোমেঘ সরাতে সরকারকে এখনই তৎপর হতে হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭