ইনসাইড সাইন্স

চাঁদের মাটিতে জন্ম নিল গাছ


প্রকাশ: 14/05/2022


Thumbnail

চাঁদ বরাবরই মানুষের কাছে কৌতূহলের বিষয়। কখনো আবার সৌন্দর্যের উপমা। চাঁদ দিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই মানব মনে। তবে গত ৫০ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পর এই প্রথম চাঁদের মাটিতে জন্মেছে গাছ। প্রাণের স্পন্দ যেন নতুন মাত্রা যোগ করে দিয়েছে সকলের ভাবনায়। 

বিগত বছর গুলোতে চাঁদে হওয়া অভিযান যেমন, নীল আর্মস্ট্রং, বাজ অলড্রিনদের এপোলো-১১ গুলো থেকে এই মাটি পৃথিবীতে আনা হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নানা বিকিরণ ও পরিবর্তনশীল এই মাটিতে প্রথমবারের মতন উদ্ভিদ এর জন্মের তথ্য জানিয়েছেন "ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডা" এর গবেষকরা। লক্ষ্য, চাঁদের মাটিতে আগামী অভিযাত্রীদের জন্য খাদ্য উৎপাদন করা। 

‘দুই দশকের মধ্যেই চাঁদে গ্রীণ হাউজ তৈরির মাধ্যমে খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব’ এই বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা কমিউনিকেশন বায়োলজি জার্নালে। তবে এই উদ্ভিদ জন্মানোর আগে কতখানি প্রস্তুতির প্রয়োজন তা এখন অজানা, তবে অনুসন্ধান চলছে প্রতিনিয়ত। 

বিজ্ঞানীরা আরো জানান, চাঁদের মাটির নাম রিগোলায়েথ। এই মাটি খুবই শুষ্ক, রুক্ষ এবং মাটির কণাগুলো ভয়ংকর তীক্ষ্ণ৷ মাটিতে বিদ্যমান বিভিন্ন খনিজ পদার্থ আর জৈব উপাদান এতটাই ক্ষতিকর যে পৃথিবীর আবহাওয়ায় থাকা কোনো উদ্ভিদ বা অনুজীবের এই মাটিতে সরাসরি বেঁচে থাকা সম্ভব না। বয়ে আনা চাঁদের মাটিতে এত বছর যাবৎ নানাবিধ পরীক্ষা এবং প্রস্তুতির পর গাছ এই  মাটিতে জন্ম নিয়েছে।  এই মাটিতে উদ্ভিদ জন্ম দিতে যোগ করতে হয়েছে তাই প্রচুর পানি এবং আনুষঙ্গিক নিউট্রিয়েন্ট।

ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডার বিজ্ঞানী রবার্ট ফেরাল বলেন,  ‘আশা করছি,  আমরা চাঁদের মাটির সাথে  জৈব প্রক্রিয়াশীল আরো উন্নত মানের আগামীতে সিমুল্যান্ট পাব। এই গবেষণা এবং এর ফল থেকে আমরা সামনে আরো ভালো ফল পাবো বলে আশা রাখতে পারি।’

চাঁদের মাটিতে গাছ, এই যেন এক অসম্ভব সত্য। এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেও এই গবেষণার যে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে তা উল্লেখ্য করেন গবেষকরা। রুক্ষ প্রকৃতির আর নানা খনিজ পর্দাথের কারণে এই মাটিতে উদ্ভিদের বৃদ্ধি খুবই ধীর এবং এক পর্যায়ে গিয়ে বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।  

'প্রথম সপ্তাহে ল্যাবের অন্য উদ্ভিদের সাথে চাঁদের মাটির উদ্ভিদের বৃদ্ধি প্রক্রিয়াতে কোনরূপ পার্থক্য চোখে পড়েনি। এই থেকে প্রমাণ হয়, উদ্ভিদের প্রাথমিক বৃদ্ধি মাটিতে অবস্থিত বিষাক্ত উপাদান সমূহের জন্য  বাধাগ্রস্ত হয়নি। পরে সমস্যাগুলো নিবিড়ভাবে গাছের বৃদ্ধি বুঝতে আলাদা ছোট টবে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। দেরিতে হলেও সব চারাই বড় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বায়োলজিস্ট এনা লিসা পল ৷ 

বিজ্ঞানীরা চাঁদের বিভিন্ন স্থানে নতুন মাটি পাওয়ার আশা করছেন। আগ্নেয়গিরি খনন করেও মাটি পাওয়ার বিষয়েও তাঁরা বেশ আশাবাদী। তাছাড়া, বিজ্ঞানীদের জমাকৃত গবেষণা পত্রে চাঁদের আবহাওয়া প্রভাবিত করে উদ্ভিদ ও প্রাণী বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির কথাও উল্লেখ করেছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭