সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোষ্টার বয়। সবাই তাকে এক নামেই চেনে। নিজের খেলা দিয়ে সবাইকে যেনো মাত করে রাখেছেন এই অলরাউন্ডার। তার নামের পাশে রয়েছে রেকর্ডের এক বিশাল তালিকা। অনেক রেকর্ডের কথা হতো সাকিবের নিজেরও মনে নেই। তিনি গত ১৪ বছর ধরে তার জাত চিনিয়েছেন তার ভালো খেলা দিয়ে। ফলে সকিবকে নিয়ে যত প্রশ্নই থাকুক না কেনো, একজন সাকিব দলের সঙ্গে থাকা মানে দলের মনোবল বেড়ে যাওয়া। জয়ের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া।
এবার কোভিডে আক্রান্ত সাকিব কোভিড নেগেটিভ হয়ে ফেরার পর ম্যাচ খেলতে নামার আগে খুব বেশি অনুশীলনের সুযোগ পাননি। প্রথম টেস্টের জন্য সাকিবের প্রস্তুতি কেবল আধ ঘণ্টার ব্যাটিং অনুশীলন। বোলিং অনুশীলন না করলেও চট্টগ্রামের প্রথম দিনে মিতব্যয়ী বোলিং করেছেন সাকিব। প্রথম দিন দলের সেরা মিতব্যয়ী বোলারও তিনি। আর এ কারণেই এবারও সেই সাকিবেই আস্থা রাখছেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। এমন বোলিংয়ের পর রঙ্গনা হেরাথ জানিয়েছেন, সাকিব অনুশলীন না করলেও তার ওপর আস্থা রাখবেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ। সাকিবের সামর্থ্য নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হেরাথ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হেরাথ বলেন, ‘আজ খুবই ভালো বল করেছে। সে-ই সবচেয়ে ইকনমিকাল বোলার। আমি ১০০ ভাগ আত্মবিশ্বাসী তার সামর্থ্যে। কোনো অনুশীলন না করলেও তার ওপর আমার আস্থা থাকবে।’ সাকিবের মানের ক্রিকেটার খুব বেশি নেই জানিয়ে হেরাথ বলেন, ‘সাকিবের মানের ক্রিকেটার খুব বেশি নেই। সে হয়তো কোনো অনুশীলন করেনি। কিন্তু আজ তার প্রথম বলটি ছিল নিখুঁত। যা এক কথায় অসাধারণ। আমাদেরও তার ওপর অনেক আস্থা।’ ব্যাটে-বলে সাকিব বরাবরই সেরা পারফর্মার। অধিনায়ক-কোচরা সবসময় বলে থাকেন সাকিব একাদশে থাকলে দল সাজাতে সহজ হয়। কারণ সাকিব একাই একজন বোলার এবং ব্যাটারের কাজ করেন। তাতে একাদশে একজন ব্যাটার কিংবা বোলারের আধিক্যতার সুযোগ থাকে। হেরাথও মনে করিয়ে দিলেন, সাকিব থাকলে দলের মাঝে ভারসাম্য তৈরি হয়।
চট্টগ্রামের টেস্টের প্রথম দিনে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রানে থেমেছে শ্রীলঙ্কা। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস অপরাজিত আছেন ১১৪ রানে। নিঃসন্দেহে দিনটা লেখা হয়েছে লঙ্কানদের নামে। নিজেদের দিনে বাংলাদেশি স্পিনারদের প্রশংসা বন্যায় ভাসালেন সফরকারীরা। সাকিব আল হাসান ছিলেন দুর্দান্ত, সঙ্গে তাইজুল ইসলাম আর নাঈম হাসানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কুশল মেন্ডিস। হবে নাই বা কেনো। সাকিব তো আসলে তেমনই।
ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, সাকিবের ওপর চোখ বন্ধ করেই আস্থা রাখা যায়। কারণ তিনি এমনই খেলোয়াড়। তিনি দলে থাকলে দলের ভারসম্যই আলাদা হয়ে যায়। ফলে সাকিব দলে থাকা মানে জয়ের সুযোগ অনেকাংশে বেড়ে যায়। যদিও প্রথম দিনটি শ্রীলঙ্কা তাদের করে নিয়েছে কিন্তু আরও ৪ দিন এখনও বাকি। ফলে সাকিবের বোলিং জাদুর সঙ্গে ব্যটিংটাও যদি জ্বলে ওঠে তাহলে শ্রীলঙ্কাকে হারানো খুব একটা কঠিন কিছু হবে না। সেক্ষেত্রে সাকিবের ওপর আস্থা রাখাই যায়।