দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটকে ঘিরে গত কয়েক দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির পুলিশ ২৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কারফিউ ভঙ্গ, জনগণের ওপর হামলা ও সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি বিনষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে ভারতের এএনআই –এর খবরে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত ৬৮ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র নিহাল থালদুয়া বলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পশ্চিম প্রদেশের ৭১ জন, দক্ষিণ প্রদেশের ৪৩, কেন্দ্রীয় প্রদেশের ১৭, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের ৩৬, উত্তর-কেন্দ্রীয় প্রদেশের ৪৭, সাবারাগামুয়া প্রদেশের ১৩ ও উভা প্রদেশের দুজন রয়েছেন। রোববার পুলিশ বেশকিছু ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করে তাদেরকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। সংকট মোকাবিলায় সরকারের ওপর ক্ষোভ থেকে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের আগে দেশজুড়ে মাহিন্দার সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৯ জন নিহত ও ২২৫ জন আহত হন। গত সপ্তাহজুড়ে দেশটিতে কারফিউ জারি করা হয়। বিক্ষোভ প্রশমনে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দাতা দেশ ও সংস্থা গুলোর ঋণ পরিশোধে নিজের অক্ষমতা প্রকাশের পাশাপাশি শ্রীলংকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শূন্যের কোঠায়। খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ও ঔষধ সংকট ছাড়াও বিদ্যুৎহীনতার মধ্যেই কাটছে দিনের বেশিরভাগ সময়।পরিস্থিতি এমন যে, বলা হচ্ছে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এমন সংকটে দেশটি আর কখনো পড়েনি। অথচ ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসানের পর প্রাণ ফিরে এসেছিলো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে, জমজমাট হয়ে উঠছিলো পর্যটনসহ সেবা খাত।