চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার মাঝেই শ্রীলঙ্কায় পালিত হল বুদ্ধপূর্ণিমা। সংঘাত এড়াতে দেশব্যাপী জারি করা কারফিউ এদিন তুলে নেয় স্থানীয় প্রশাসন। বৌদ্ধ ধর্ম্যালম্বিদের জন্য দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় শ্রীলঙ্কায় দিনটি খুব সাদামাটা ভাবেই পালন করা হয়েছে।
রোববার (১৫ মে) শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘ভেসাক’ বা বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সরকার দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করে। সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলেও অনুষ্ঠান উদযাপনের পরিকল্পনা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।
দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও অন্যান্য সমস্যা বিবেচনায় এ বছর সরকারি আয়োজনে কুরাগালা বৌদ্ধমন্দিরে অনুষ্ঠান করা হচ্ছে না। তবে বৌদ্ধরা নিজেদের আয়োজন চালিয়ে যেতে পারেন।
এদিকে চলমান অচলাবস্থার মধ্যে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে মঙ্গলবারের পার্লামেন্ট অধিবেশনের আগে একটি ঐক্য সরকার গঠনের জন্য চেষ্টা করেন। বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা আনুষ্ঠানিকভাবে তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম কলম্বো পেজ-এর খবরে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী ও ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা বিক্রমাসিংহে সর্বদলীয় সরকার গড়তে বিরোধী দলের উদ্দেশে চিঠি লেখেন। প্রধান বিরোধী দলের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাকে লেখা চিঠিতে সর্বদলীয় সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। এর জবাবে প্রেমাদাসা বলেন, ‘রাজপাকশে থেকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবি উঠছে। তার সঙ্গে যুক্ত কোনো সরকারে আমরা যোগ দেব না।’
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। সংকট মোকাবিলায় সরকারের ওপর ক্ষোভ থেকে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের আগে দেশজুড়ে মাহিন্দার সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৯ জন নিহত ও ২২৫ জন আহত হন। গত সপ্তাহজুড়ে দেশটিতে কারফিউ জারি করা হয়। বিক্ষোভ প্রশমনে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।