ইনসাইড টক

'পলিথিনের বিষয়ে আইন আমরা সঠিকভাবে প্রতিপালন করি না'


প্রকাশ: 19/05/2022


Thumbnail

পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেছেন, পলিথিন তো একটা অপচনশীল বস্তু। এটা সহজে পঁচে না। আগে আমরা জানতাম পলিথিন ৪০০ বছরেরও পঁচে না। কিন্তু বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ তথ্যমতে, পলিথিন নাকি ১ হাজার বছরেরও পঁচে না। দ্বিতীয়ত পলিথিন আমাদের ড্রেনেজ সিস্টেমকে বন্ধ করে দেয়। নালা-নর্দমা সিস্টেমকে বন্ধ করে দেয়। বৃষ্টি হলেই একটা পলিথিন পড়ে জমে থাকে তখন নালা-নর্দমা দিয়ে বৃষ্টির পানি নেমে যেতে পারে না। তখন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এটা পরিবেশের জন্য খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

পরিবেশের ওপর পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাবসহ নানা নিয়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। পাঠকদের জন্য প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, পলিথিন যখন পানিতে চলে যায় সেটা কিন্তু খাল, নদী হয়ে সমুদ্রে যায় এবং সমুদ্রে কিন্তু বিপুল পরিমাণের পলিথিনের স্তুপ জমে যায় এবং এই পলিথিনগুলো দীর্ঘ মেয়াদী ছোট ছোট ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোণায় ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওরয়া ফলে তখন মাছ বা জলজ প্রাণী এটা খায়। এই যে এগুলো মাছ খায়, এই মাছের মাধ্যমে এবং খাদ্য চক্রের মাধ্যমে এটা আমাদের শরীরে চলে যায়। তাহেলে এটা কতটা ভয়াবহ। সম্প্রতি আামদের দেশে দেখা গেছে যে, মৎস্য গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছে, আমাদের দেশেও কিন্তু এটা পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে মোটা দাগে এগুলো হলো পলিথিনের সবচেয়ে ক্ষতিকারক দিক। এখন আমরা দেখি সারাদেশে পলিথিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এটা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটা আমরা সবাই অনুধাবন করি। কিন্তু সরকার যে আইন করছে সেই আইন কিন্তু আমরা কেউ সঠিকভাবে প্রতিপালন করি না।

তিনি আরও বলেন, এখন আইন যারা করছে তারা হয়তো বলেন অর্থাৎ পরিবেশ অধিদপ্তর বলেন যে, তাদের যে তদারকি করার কথা তারা সেটা করছেন। তারা হয়তো দুইটা কারণ দেখান। একটা হচ্ছে লোকবলের অভাব, দ্বিতীয়ত তারা একটা কারণ দেখান পলিথিনের বিকল্প কোথায়। আমি মনে করে দিতে পারি যে, ২০০০ সালে শুরুতে পথিলিন যখন নিষিদ্ধ করা হয় তখন কিন্তু বিকল্প বাজারে চলে আসে। বড় বড় বাজারগুলোতে এটা ছিল। প্রত্যেকটা বাজারে বিকল্প গিয়েছিল। আস্তে আস্তে পলিথিনের ব্যবহার কমে গিয়েছিল। এই বিকল্প কি ছিল সেগুলো হলো কাগজের ব্যাগ, কাগজের ঠোঙা, কাপড়ের ব্যাগ তারপর পাটের বিভিন্নভাবে বিভিন্ন  প্রক্রিয়ায় শিখা ছিল। কিন্তু যখন আস্তে আস্তে আইনের প্রয়োগ শীথিল হতে শুরু করলো তখন আস্তে আস্তে মানুষ এই পলিথিন ব্যবসায়ী পলিথিন উৎপাদন শুরু করলো এবং আস্তে আস্তে বাজার থেকে বিকল্প হারিয়ে গেছে। 

প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে কিন্তু মূল তো পলিথিনের কারখান ঢাকায়। যারা এটা উৎপাদন করে সেই জায়গায় আমাদের হাত দিতে হবে। আমাদের যারা হোল সেল করে তাদের হাত দিতে হবে, বাজারে যারা বিক্রি করে তাদেরকে হাত দিতে হবে। পাশাপাশি নাগরিকদেরও কিন্তু পলিথিন দেওয়া নিষিদ্ধ তাদেরকেও হাত দিতে হবে। আমরা যদি পর্যায়ক্রমে এভাবে শুরু করতে পারি তাহলে আমরা এটা বন্ধ করতে সক্ষম হবো। কিন্তু সে ধরনের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আর বাংলাদেশ কিন্তু পৃথিবীতে অনেক সুনাম অর্জন করেছিল পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করার জন্য। অথচ আমরা কিস্তু এখন সেই আগের অবস্থায় ফিরে গেছি। পৃথিবীর অনেক দেশ কিন্তু পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭