ইনসাইড গ্রাউন্ড

মুস্তাফিজ কি আদৌ টেস্ট খেলবেন?


প্রকাশ: 20/05/2022


Thumbnail

মুস্তাফিজুর রহমান। দ্যা ফিজ নামেও বেশ পরিচিত। কাটার মাষ্টার খ্যাত এই বোলারের বল অনেক বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানকেও চোখে সরশে ফুল দেখায়। মাঠের পারফরমেন্সে মুস্তাফিজের জুড়ি মেলা ভাড়। কারণ মুস্তাফিজ যে কখন কি করবে সেটা কেউ বলে দিতে পারে না আগে থেকে। আইপিএলেও মুস্তাফিজের জয়জয়কার। কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে মুস্তাফিজকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। আর সেটি হলো মুস্তাফিজের টেস্ট খেলতে অনীহার বিষয়টি। এটি এখন অনেকটাই স্পষ্ট যে, মুস্তাফিজ টেস্টে খেলতে চান না। এটা নিয়ে জলঘোলাও কম হয়নি। কিন্তু তারপরও মুস্তাফিজকে টেস্ট দলে পাওয়া নিয়ে এক রকমের সন্দেহ বা সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে যখন দলের সেরা পেস বোলার শরিফুল-তাসকিন ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে তখন মুস্তাফিজের টেস্ট খেলা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, মুস্তাফিজ কি আদৌও টেস্ট খেলবে?

মুস্তাফিজের টেস্টে খেলতে না চাওয়ার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। গত বছরও বায়োবাবল যন্ত্রণাকে কারণ দেখিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় মুস্তাফিজুর রহমান। এমনকি বিসিবির সর্বশেষ কেন্দ্রীয় চুক্তির আগেও নিজেকে সাদা পোশাক থেকে দূরে রাখেন। এমনকি বায়োবাবল যতদিন থাকবে ততদিন টেস্ট খেলবেন না বলে নিজেই বোর্ডকে জানিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। সম্প্রতি আবারও মুস্তাফিজের টেস্ট খেলতে না চাওয়াটা বিসিবিকে ভাবিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন তো মুস্তাফিজের টেস্ট খেলতে না চাওয়ার বিষয়টি ভালো চোখে দেখেন নি। 

মুস্তাফিজ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা মুশফিকুর রহিমদের মতো বয়সে পৌঁছাননি, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে সুজন বললেন, ‘পাপন ভাই বলেছিলেন খেলোয়াড়রা যে ফরম্যাট খেলতে চায় এ নিয়ে আলাপ করতে পারে। সেটা সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কথাটা বলেছেন, সবার ক্ষেত্রে না। এখন যদি জয় বলে আমি ওয়ানডে খেলব আর টেস্ট খেলব না, এটা কি ঠিক হলো নাকি? মুস্তাফিজের আসলে বয়স কত? কয়দিন ধরে খেলে? ও তো সাকিব না, তামিম না, মাশরাফি বা মুশফিক না, যারা এত বছর ধরে বাংলাদেশকে তিন ফরম্যাটে সার্ভিস দিয়েছে। দেশের জন্য খেলা জরুরী।’

খালেদ মাহমুদ সুজন আরও বলেন, ‘সাকিব-তামিমদের বয়স ৩৪-৩৫ বছর। তাদের এখন বিরতি প্রয়োজন, তারা এটার যোগ্য। কিন্তু লিটন দাস তো বিশ্রামের যোগ্য না। লিটন যদি সাকিব-তামিম হতো, বলতাম সেও বিশ্রামের যোগ্য। মুস্তাফিজের অবশ্যই টেস্ট খেলা উচিৎ। এখন তার পিক টাইম। আমরা তো বলছি না সব টেস্ট খেলো। আমি চাই ৬-৮টা টেস্ট ম্যাচ বছরে তার খেলা উচিৎ।’

এদিকে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে দুই তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম নেই, তারা থাকবেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও। এই সময়ে মুস্তাফিজকে দরকার। কিন্তু তিনি এখন ব্যস্ত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হকও বলছেন, মুস্তাফিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড। চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি না মুস্তাফিজ কয়টা টেস্ট খেলেছে, সত্যি বলতে আমাদের দেশের কোনো পেস বোলারই অভিজ্ঞ না। ২০টাও হবে কি না সব মিলিয়ে টেস্ট ম্যাচ সন্দেহ আছে। আমার কাছে মনে হয় অভিজ্ঞতাটাই ম্যাটার করছে এখানে। আর মুস্তাফিজের বিষয়টাতে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে কী করবে। ডিমান্ড বলতে যদি বোর্ড দেয় তাহলে অবশ্যই খেলবে।’ 

তিনি বলেন, ‘আপনার যেটা দেখতে হবে মুস্তাফিজ লাল বলে কতদিন খেলেছে। এখানে কিন্তু অনেক কিছু নির্ভর করে। কতদিন খেলছে, না খেলছে। আর ফিটনেসের একটা ইস্যু থাকে। এখন যদি ওকে দরকার হয় তাহলে অবশ্যই খেলবে। দেখেন আমাদের সামনের সারির দুটো পেসার নেই, শরিফুল-তাসকিন। যদি প্রয়োজন হয় তবে অবশ্যই সে খেলবে।’ এক্ষেত্রে অনেকটাই স্পষ্ট যে মুস্তাফিজকে নিয়ে বিসিবিতে একটি অস্বস্তি কাজ করছে। এই অস্বস্তি দূর করার একমাত্র মাধ্যম হলো মুস্তাফিজের টেস্টে ফেরা।

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, মুস্তাফিজুর রহমান একজন ভালো পেসার এবং কাটার মাস্টার এ বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই। কিন্তু তার এই যোগ্যতা দলের জন্য না দিতে পারলে আদতে কোনো লাভ নেই। মুস্তাফিজকে বুঝতে হবে আজকের মুস্তাফিজ তৈরি হয়েছে দলের জন্য খেলে। তাই দলকে আগে প্রাধান্য দিতে হবে। নইলে তার এই বাহিরে খেলায় কোনো লাভ হবে না। আর বিশেষ করে যখন দল বিপদের মধ্যে। দলের প্রধান পেসাররা নেই। এই অবস্থায় তার টেস্টে ফিরে দলের জন্য ভালো কিছু উপহার দেওয়া উচিৎ। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭