ইনসাইড থট

ফেইলর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস?


প্রকাশ: 20/05/2022


Thumbnail

এই কথাটি আমরা অনেক দিন অনেকভাবে শুনেছি যে, লোকে বলে 'ফেইলর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস'। এর সাথে আর একটা কথা বহুত প্রচলিত। সেটি হচ্ছে যে, 'একটি সফলতা আরেকটি সফলতাকে আনতে সাহায্য করে'। সুতরাং এক জায়গায় সফল হলে সে আরো সফল হয়। কিন্তু প্রথমে অসফল হলে সেটা যে একটা পিলার হয়, আরেকটা সফলতার জন্য এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। কারণ হচ্ছে, তাই যদি হতো তাহলে যারা একাধারে ফেল করে যায়, এদের এতো পিলার জমা হতো যে, ওই পিলারের মধ্যে দিয়েই তো আর সফলতার দিকে যাওয়া যেতো না। অসফল হওয়ার একটি মাত্র জিনিস সেটি হচ্ছে যে, কেউ অসফল হলে তার চিন্তা করতে হবে, তিনি কেন অসফল হয়েছেন। যেমন পরীক্ষার কথাই বলি। পরীক্ষায় যদি মনে করা হয় যে, পরীক্ষক ফেল করিয়েছেন, তাহলে আর তার পক্ষে পাস করা সম্ভব না। কারণ তিনি তার পরীক্ষককে পড়াবেন না। সুতরাং ফেল যে করে সে নিজেই করে। 

আমার এই কথাগুলি মনে হলো সম্প্রতিকালে দুইদিকের বক্তব্য শুনে। একটি হচ্ছে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিভিন্ন বক্তব্য। যেখানে তিনি অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। তিনি বলেন যে, পত্রিকা বা মিডিয়া কোথায় কি বললো, সেটা দেখে আপনারা ঘাবরাবেন না। আপনারা কাজটা সঠিকভাবে করছেন কিনা সেটা দেখবেন। অর্থাৎ তিনি এখানে গুরুত্ব দিচ্ছেন সফলতার দিকে। যেমন আমি নিজের উদাহরণই দিতে পারি। যদিও নিজের উদাহরণ দেওয়া ঠিক না তবুও বলি, কমিউনিটি ক্লিনিক ভালোভাবে চলছে। কিছু কিছু জায়গায় ঠিকমতো চলছে না, সেগুলো পত্রিকা বলে এবং বলার পরে আমি সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করি। অর্থাৎ এটা সফলতার দিকে যাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে পেয়েছেন তার কন্যা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং এই কমিউনিটি ক্লিনিকের ভিতরে বিভিন্ন দর্শন তিনি দিয়েছেন। এই দর্শনগুলিকে নিয়ে আমরা এনালাইসিস করেছি এবং আমার এই অ্যানালাইসিসের শিক্ষক হচ্ছেন বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে, আমি বলবো যে সত্যিকারে লেখাপড়া করে সব কাজ করেন, শিক্ষিত কলামিস্ট সৈয়দ বোরহান কবীর। তার সঙ্গে বসে আমি দেখেছি যে, কমিউনিটি ক্লিনিকটা শুধুমাত্র যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য তাই নয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে।

একইভাবে স্কুলে মেয়েরা ঠিকমতো যায়। কারণ তাদের একটা ভবিষ্যৎ আছে। পাশ করলে তারা কমিউনিটি ক্লিনিকে কাজ করতে পারবে। তারপরে কমিউনিটি ক্লিনিকের কাজ করলে তাকে বাল্যবিবাহ দিতে পারে না। তারপরে যদি কমিউনিটি ক্লিনিকের সে কাজ করে তার একটা সম্মান হয়। তার বেতনটা তার স্বামী যদি খারাপ ধরনেরও হয়, সে জোর করে নিতে পারে না। একটা সামান্য উদাহরণ দিলাম। এরকম যদি অন্যান্য ক্ষেত্রে দেখা যায় যেমন, প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, খাবারের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে দুইটাভাবে। একটি হলো আমরা খাবার অপচয় করবো না। আরেকটি হচ্ছে যাতে আমাদের খাদ্যশস্য কোনরকম ঘাটতি না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা। এটা হচ্ছে দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি। এই যে বিদেশে যাওয়া বন্ধ করলেন। এটা হচ্ছে পার্ট অফ দা মেজার। তার দর্শনের একটি অংশবিশেষ। মূল দর্শন কি? মূল দর্শন হচ্ছে একটি। সেটি হচ্ছে দেশপ্রেম। তিনি বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে ভালোবাসেন। 

আমি একটি উদাহরণ দেই। আমি তার সাথে একবার কক্সবাজার গিয়েছিলাম। কক্সবাজারের সব নেতাদের বক্তৃতা হয়ে গিয়েছে। তখন নেত্রী স্টেজে আসলেন। আমাকে কিছু বলার জন্য বললেন। ওই সময়ে সমস্ত কক্সবাজারে একটি মাত্র ছিট ছিলো আওয়ামী লীগের। আর সব বিএনপি'র। আমি বললাম যে, আপনাদের তো নেত্রী দেখে আপনাদের রেললাইনের ওপেনিং করছে, এখানে একটা এয়ারপোর্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন। একের পর এক স্থাপনা করে যাচ্ছেন। আমি হলে এর কিছুই করতাম না। নেত্রী যখন আমার পরে বক্তৃতা দিলেন, অবাক ব্যাপার তিনি সাধারণত নেতাকর্মীদের বক্তব্যের বিষয়ে সেখানে কোনো উত্তর দেন না। তিনি তার দর্শন অনুযায়ী বক্তব্য দেন। ওইখানে তিনি একটু একসেপশন করলেন। সেটা ওনার দর্শনের অংশ। তিনি বললেন, আমি হচ্ছি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আমাকে কে ভোট দিয়েছে, কে দেয়নি, আমার প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেছে কি নির্বাচিত করেনি, সেটি দেখার দায়িত্ব আমার না। আমার দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ এবং সেই জনগণের ভেতরে এই কক্সবাজারের জনগণও পরে। 

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেরকম পড়ে, যারা আজকে কোনো কিছু করতে পারে না তারাও পরে, আর যারা আঘাত টাকার মালিক তারাও আমার জনগণ। সুতরাং আমি যেটা করেছি, এটা আমার ভোট পাওয়ার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। এটি একটি পজিটিভ দিক। আর অন্যদিকে কি শুনি? বলে সাত দিনের ভিতরে আমরা সরকার ফেলে দিতে পারবো। যারা কোনো কিছুতেই পাস করতে পারে না, তারা একজন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ককে ফেলে দিবে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়, ফেলে দেওয়া তো দূরের কথা, আন্দোলনই তো করতে পারে না। তবে একটি ব্যাপার কিন্তু ঘটছে। সেটা হচ্ছে এই যে, অনেকে মনে করে যে আসলে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এতে সামান্য সন্দেহ নাই। আমরা এই ষড়যন্ত্র সঠিকভাবে অনেক সময় বুঝতে পারি না। ১৫ অগস্ট যে ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল, এখন পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে গেছে। এখন সে ধরনের ষড়যন্ত্র হয় ন। একটি ষড়যন্ত্রের উদাহরণ দেই। সেটি হচ্ছে এই যে, সূক্ষ্মভাবে ষড়যন্ত্র চলে, আর মোটাদাগেরও চলে। মোটাদাগের ষড়যন্ত্র কি? একজন বিজ্ঞ যারা দেশ পরিচালনায় অপরিহার্য, বিদেশের কাছে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করে দিলো। তাতে দুটো জিনিস হয়, সেই লোকটার কাজ করার আগ্রহ কমে যায় বা তারপরে যে আসবে সে ভয়ে অনেক কাজ ঠিকমতো করতে পারবে না। না হলে বাংলাদেশে এখন পৃথিবীর একটা এক্সাম্পল যেখানে কোনো রকম খুনোখুনি নাই, কোনো রকম জঙ্গি হামলা নাই। সমস্ত কিছু কিন্তু তিনি কন্ট্রোল করেছেন। এটা যাদের সহ্য হচ্ছে না, তারা আঘাত করছে। যারা এগুলো ঠিক করেছে তারা এখন তাদের ব্যাকবোন ভেঙে দিতে চায়। যাতে দেশে আবার একটি জঙ্গি পরিবেশ তৈরি করা যায়। 

তখন দেখা যাবে এই সন্ত্রাসীদের জন্যেই এখানে বাইরের শক্তি আসবে। তারা বিভিন্ন ইনফ্লুয়েন্স করবে। তাদের অস্ত্রপাতি বিক্রি হবে। সেটা একটা মোটাদাগের ষড়যন্ত্র। আর সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র কি? বিভিন্ন মিডিয়া খুললে দেখা যাবে, খুব কায়দা করে লিখতে চায়। তারা লিখে যে, সবই ঠিক আছে, ২০২৬ সালেই প্রবলেম হবে। উদ্দেশ্য হচ্ছে মানসিকভাবে জনগণকে দুর্বল করে দেওয়া। এই জন্যই তো তিনি দার্শনিক, রাষ্ট্রনায়কই শুধু নয়। ২০২৬ সালে তো দূরের কথা, তিনি তিনটি ভাগেই ভাগ করেন। বর্তমান পরিস্থিতি কিভাবে এর উত্তরণ করতে হবে। সেটাও তিনি ঠিকভাবে করছেন। ছয় মাস পরে কি হবে সেটাও তিনি করছেন। এর দার্শনিক ভিত্তি কি? দার্শনিক ভিত্তি তো শেখ হাসিনা। তার চিন্তা ধারায় যে কত টাইপের লোকদের দিয়ে যে তিনি কাজ আদায় করেন, চিন্তার বাইরে। অনেক লেখা দেখলে এখন বুঝবেন যে, যারা অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়েছে তারা আজকাল জ্ঞানী জ্ঞানী লেখা লেখেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল কিন্তু যেই মুহুর্তে থেকে নরমাল এক্সটেনশনের পর পদত্যাগ করার পরে তারা যখন বিজ্ঞ হয়ে গেলেন, তখন কিন্তু তারা বিজ্ঞ হওয়ার জন্য পার্টিকুলার পত্রিকাতেই লেখেন এবং সেখানে ঘুরেফিরে সরকারের বিপক্ষেই লেখেন।

অর্থাৎ এটা সূক্ষ্মভাবে চলছে। গ্রসলি বলতেছে যে, এই জায়গায় খুন হয়েছে, সেই নিউজটি হয়তো শেষ পেজে গেলে হতো, কিন্তু সেটা প্রথম পেজে আনা হচ্ছে। আরেক ধরনের ষড়যন্ত্র, পোস্ট এডিটরিয়ালে ২০২৬ সালে কি হবে সেটা এক ধরনের ষড়যন্ত্র। যে দার্শনিক এতো বড় করোনার থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারলেন জীবন এবং জীবিকা দুটোই। আমরা ঠিকানাবিহীন ছিলাম। জাতির পিতা আমাদেরকে দেশের ঠিকানা দিলেন, তারপর পৃথিবীর মানচিত্র তখনও আমরা ঠিকানাবিহীন। তিনি সেখানে মধ্যম আয়ের দেশে এনে আমাদের ঠিকানা দিলেন। সেই দার্শনিক কি এই সূক্ষ্ম লেখা কি বুঝতে পারেন না এটা হতে পারে? অর্থাৎ এখানে তার কোনো ফেইলর নেই। এখানে ফেইলর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস এটা মিথ্যা। এটা সাকসেস ব্রিংস এনাদার সাকসেস। একটি সফলতার আরেকটি সফলতা আনবে এটাই তিনি প্রমাণ করেছেন। আর যারা বড় বড় কথা বলছেন, ৭ দিনে ফেলে দিবেন, একটা ফর্মুলা এরা কিন্তু এক জায়গায় বসে সব ঠিক করে। তারপরে ঠিক করে, কে কোনটা বলবে। সাধারন পাবলিক যাতে কনফিউজড হয়। সে ভাববে যে যে আর্টিকেল লেখা হয়েছে, সেটা তারা নিজের থেকে লিখেছে। অনেকে ভাববে যে, এনালাইসিস যেটা করছো সেটা নিজে থেকে করছে।

এটা কোনোটা আলাদা না। কারণ দেশটা এখন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। একটি হচ্ছে যে, দেশপ্রেমিক দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং বিপক্ষ শক্তি সকলে এক। তার সাথে যারা আছেন তাদের ভেতরও সব লোক তাকে যে সমানভাবে সমর্থন করছেন বা তাদের কাজে এগিয়ে নিচ্ছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি না। এর ভিতরও কিছু ভেজাল আছে। কিন্তু দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের কাছে এবং তার দেশপ্রেমের কাছে এরা কেউ টিকবে না। কখন কোথায় কাকে রাখতে হবে, কখন কাকে দূরে সরিয়ে নিতে হবে সেটা তিনি ভালোভাবেই জানেন এবং এটা করতে পারবেন। সুতরাং আমি মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার একটি বিজয় আরেকটি বিজয়ের পথ শুধুমাত্র শুরু করে। একটি বিজয় আরেকটি বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। সুতরাং তার প্রতিটি স্তরে বিজয় সুনিশ্চিত। আর যারা বলেন যে, ফেইলর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস তারা শুধু পিলারই তৈরি করবেন এবং সেই জন্যই যখন বলা হয় যে, বার বার দরকার শেখ হাসিনার সরকার, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা এবং দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সেই পথেই যাচ্ছেন এবং ওই তথাকথিত ষড়যন্ত্র যত রকম ভাবেই করা হোক না কেন, এর আমি সফলতার কোনো সম্ভাবনা দেখি না। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭