ইনসাইড বাংলাদেশ

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আর না


প্রকাশ: 20/05/2022


Thumbnail

সরকার আর নতুন করে কাউকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেবে না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য তদবির ঠেকাতে অন্তত এক মাস আগে নতুন নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সচিব পর্যায়ের এক বড় ধরনের রদবদল ঘটেছে। এই রদবদলে একজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত সচিবের চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। আর দুজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাননি। তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তারা অবসরে গেছেন। জানা গেছে যে, এই দুইজনই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ব্যাপক দেনদরবার এবং তদবির করছিলেন। আর সেই দেনদরবার এবং তদবির এড়াতে আগামভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, যাতে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হয়। স্থানীয় সরকার সচিব হিসেবে এম হেলাল উদ্দিন ইতোমধ্যে অবসরে চলে গেছেন। তিনি আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ একজন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৪ এর নির্বাচনে তিনি নির্বাচন কমিশন সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। ৮৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা প্রত্যাশা করেছিলেন যে, তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আওতায় আনা হয়নি।

একই অবস্থা স্বাস্থ্যসেবা সচিব লোকমান হোসেনের। লোকমান হোসেনের চাকরি শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ জুন। কিন্তু ইতোমধ্যে তার জায়গায় নতুন সচিব নিয়োগ দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যেটি ১৪ জুন থেকে কার্যকর হবে। প্রায় একমাস আগে এভাবে বদলির আদের নজিরবিহীন বলেই জনপ্রশাসনের সূত্রগুলো বলছে। কিন্তু লোকমান হোসেন মিয়া যিনি ১৯৮৬ ব্যাচের একজন কর্মকর্তা, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ব্যাপক দেনদরবার এবং তদবির করছিলেন। আর এটিতে যেনো সরকার প্রভাবিত না হয় সেজন্যই তার মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগেই সেখানে নতুন সচিবকে পদায়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার সুস্পষ্ট একটি বার্তা দিতে চাইছে যে, আর নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হবে না। কারণ ইতোমধ্যে একাদশ ব্যাচের কর্মকর্তাদের সচিব করা হচ্ছে। দশম এবং নবম ব্যাচের বেশকিছু কর্মকর্তা এখনো সচিব হতে পারেননি এবং নবম ব্যাচের নতুন করে সচিব হওয়ার সুযোগ অনেক কম বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দশম ব্যাচের আরও কয়েকজন সচিব হতে পারেন।

আগামী ডিসেম্বর নাগাদ বেশকিছু শীর্ষ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ১৩ তম ব্যাচের কর্মকর্তারাও সচিব হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দিলেও এখনও প্রশাসনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং শীর্ষ পদগুলো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আওতায় রয়েছে। বিশেষ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে তার চুক্তির মেয়াদ আগামী ডিসেম্বরের শেষ হলে আর চুক্তি নবায়ন করা হবে না। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিব কে হবেন এ নিয়েও প্রশাসনের মধ্যে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। অর্থসচিব আব্দুর রউফ হবেন জেষ্ঠ্য। সেক্ষেত্রে তার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার একইভাবে পানি উন্নয়ন সচিব কবির বিন আনোয়ারও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের জন্য অন্যতম দাবিদার।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হচ্ছে জানুয়ারির প্রথমে। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তার স্থলে প্রধানমন্ত্রীর সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার কথাই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। তবে এই বিষয়গুলো একান্তই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এছাড়াও এখন গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব চতুর্থবারের মতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন রাষ্ট্রপতির সচিবও। সরকার যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবস্থান থেকে সরে আসছে, দেখার বিষয় এদের ক্ষেত্রে কি হয়। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, সরকার কোনো বিষয়েই চূড়ান্ত অবস্থানে নেই। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নতুন করে দেয়া হবে না এমনটি যেমন সত্য নয়, আবার ঢালাওভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও দেওয়া হবে না। এটা নির্ভর করবে একজন কর্মকর্তার প্রয়োজনীয়তা এবং দক্ষতার উপর।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭