ইনসাইড পলিটিক্স

সম্রাটের ওপর এত ক্ষোভ কেন?


প্রকাশ: 20/05/2022


Thumbnail

শেষ পর্যন্ত সম্রাটের জামিন বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন সম্রাটের জামিনের আবেদন পাওয়ার পরপরই হাইকোর্টে এই জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করেন এবং এই আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদের এবং বিচারপতি মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ সম্রাটের জামিন বাতিল করেন। সম্রাটের জামিন যখন বাতিল করা হয় তখনও তিনি বিএসএমএমইউতে আইসিইউতে অবস্থান করছেন। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জানান যে, তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং তিনি এখনো আইসিইউতে রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, ১১ মে সম্রাটকে নিম্ন আদালত জামিন দেয় এবং জামিনের পর পর ১৪ মে সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিভিউ আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্রাট কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন, তিনি মাঠ পর্যায়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরীতে সম্রাটের অবদান প্রশংসনীয় বলেই আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে বলেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় দলকে সংগঠিত রাখা, নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখা এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার পিছনে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার মানে এই নয় যে তিনি যা খুশি তা-ই করার লাইসেন্স পেয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই বলেন যে, সম্রাটের চেয়েও বড় অপরাধ করে বা সম্রাটের চেয়েও গুরুতর অপরাধ করে অনেকে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের ব্যাপারে তেমন কোনকিছু লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

যে ক্যাসিনো অভিযানে সম্রাট গ্রেফতার হয়েছিলেন সেই ক্যাসিনো অভিযানেই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক আনিসের নাম এসেছিল। আনিসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল কিন্তু আনিস দেশ ত্যাগ করেন এবং পরবর্তীতে তিনি দেশে এসে বহাল তবিয়তে অবস্থান করছেন। এছাড়াও সে সময় সম্রাটের সঙ্গে যারা অভিযুক্ত ছিল তাদের অনেকেই মুক্তি পেয়েছে এবং তারা আবার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। কিন্তু ৩১ মাস কারা অন্তরীণ থাকার পর সম্রাটকে যখন জামিন দেয়া হলো তারপর দুর্নীতি দমন কমিশন এত দ্রুত তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলো কেন, সেই প্রশ্নটি উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, সম্রাটের ব্যাপারে এত ক্ষোভ কেন?

কিছুদিন আগেই সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের দণ্ড হাইকোর্ট বহাল রেখেছে। সেই দণ্ড বহাল রাখার পরও তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাকে এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। তার সংসদ সদস্য পদ বাতিলের ব্যাপারেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে যে, শুধু কি সম্রাট অপরাধী? সম্রাটের শারীরিক অবস্থার কথা সকলেই জানেন। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও এই বিষয়টি অজানা নয়। তার জামিন প্রাপ্তিতে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু তিনি যে অসুস্থ এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি যদি সুস্থ থাকতেন তাহলে জামিন পাওয়ার তিনি হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় যেতেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। অনেকেই মনে করেন যে, আওয়ামী লীগের জন্য সম্রাটের যে অবদান সেই অবদান স্বীকার করে তার প্রতি একটু উদার হওয়া প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুঃসময়ে সম্রাটরাই থাকেন, অন্যরা আপসকামিতায় জড়িয়ে যান। আর সম্রাটের প্রতি যেটা করা হচ্ছে সেটি রাজনীতিতে মাঠের কর্মীদেরকে একটি ভুল বার্তা দিতে পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭