ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে মেঘনার জোয়ারের পানির নিচে কোটি টাকার সয়াবিন


প্রকাশ: 23/05/2022


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরে মেঘনার জোয়ারে ডুবে গেছে কৃষকের স্বপ্ন, সেই সাথে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির পানিতে সয়াবিন ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ সয়াবিন গাছ পানিতে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মাঠ থেকে সয়াবিন তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠে সয়াবিন ক্ষেত তলিয়ে আছে পানির নিচে। এতে করে সয়াবিন গাছে পচন ধরছে। কৃষক শ্রমিক নিয়ে হাঁটু সমান পানি থেকে গাছ পাকা সয়াবিন সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষক মো. আদুর রহমান চলতি বছরে দুই কানি জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছেন। এতে তার প্রায় ৮০ থেকে ৯৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সয়াবিনের ভালো ফলনও হয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে লোকসানে পড়তে হবে তাকে। বেশিরভাগ সয়াবিন পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষক আক্তার হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, আমার ৪ কানি জমিতে সয়াবিন চাষ করছি তুলনা মূলক ভাবে গত বছরের থেকে ফলন অনেক বেশি হয়েছে। কিন্তু কপাল খারাপ মেঘনা জোয়ারের পানিতে সব তলিয়ে গেছে  এখন সংসার কি ভাবে চালাবো ছেলে পেলের মুখে কি করে খাওন দিব। ছোট বেলা থেকে চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত। সরকার সবসময় কৃষকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়। কিন্তু তিনি কখনও সরকারের সহায়তা পাননি।

সয়াবিন চাষি মোহাম্মদ আলি জানান, এবছর ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১ কানি জমিতে সয়াবিনের আবাদ করি। ক্ষেতের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সয়াবিন পাকা। টানা বৃষ্টি ও জোয়ারে পানিতে ডুবে গেছে সব সয়াবিন। শ্রমিক সংকটের কারণে সয়াবিন ঘরে তুলতে হিমশিম খাচ্ছি। বেশিরভাগ শ্রমিক এ সময় পাওয়া কষ্টকর। বৃষ্টি বা জোয়ার  না হলে সয়াবিনে লাভবান হতাম।

স্থানীয় সাংবাদিক ধনু বলেন, গেছে বছরের তুলনায় এ বছর মেঘনার উপকূলে সয়াবিন চাষে মনোযোগ দেয় স্থানীয় কৃষকরা। আমার বড় ভাই আমামত উল্লা এ বছর ১ কানি জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে সয়াবিন আবাদ করেন। জোয়ারের  প্রভাবের কারণে ফসলের মাঠ পানি ডুবে গেছে। এতে করে সয়াবিন গাছগুলোয় পচন ধরেছে। এবার প্রতিটি সয়াবিন গাছে থোকায়-থোকায় ফলন এসেছে। টানা বৃষ্টি না পরে জোয়ার না হলে লাভবান হতাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১ কেজি সয়াবিনের দাম ৭৫ টাকা। ৪০ কেজি সয়াবিনের মূল্য ৩ হাজার   টাকা। বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর সয়াবিন ভালো উৎপাদন হয়।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর লক্ষ্মীপুর ৫টি উপজেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর-৩ হাজার ৩ শ হেক্টর, রায়পুর-৫ হাজার ৮ শ ৮৫ হেক্টর, রামগঞ্জ-৫০ হেক্টর, রামগতি-১৭ হাজার ৫ শ ৬৫ হেক্টর ও কমলনগর-১২ হাজার ২ শ হেক্টর।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেন জানান, টানা বৃষ্টি এবং জোয়ারের কারণে সয়াবিন চাষিদের কিছু টা ক্ষতি হয়েছে। এখনও কৃষকদের ৮০ ভাগ সয়াবিন মাঠে রয়েছে ২০ ভাগ সয়াবিন মাঠ থেকে তোলা হয়েছে। যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে কৃষকদের দ্রুত মাঠ থেকে সয়াবিন ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এখন আর সয়াবিন কাঁচা নেই। প্রতিটি গাছের সয়াবিন পাকা। যত তাড়াতাড়ি সয়াবিন সংগ্রহ করবে, তত লাভ হবে। কারণ পানি লাগলে সয়াবিন নষ্ট হয়ে যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭