ইনসাইড ইকোনমি

২৬ বছরে যা হয়নি, তা ৬ মাসে সম্ভব করেছেন বাজুস সভাপতি


প্রকাশ: 23/05/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জে গত ২৬ বছরে যা হয়নি, বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)-এর সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর তা মাত্র ৬ মাসে সম্ভব করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন নারায়ণগঞ্জে বাজুস নেতৃবৃন্দ । ব্যবসা পরিচালনায় তার বিশেষ দক্ষতা ও দূরদৃষ্টি আমাদের আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর গোল্ড ব্যবসা নীতি অনুসরণ করে বাজুস সভাপতি আনভীরের নেতৃত্বে অচিরেই বিশ্ব বাজারে স্বর্ণ ব্যবসায় প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্প বিশ্ব বাজারে মাথা ঊঁচু করে দাঁড়াবে।

সোমবার (২৩ মে) নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)-এর নতুন সদস্যদের বরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অতিথিরা। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান এম এ ওয়াদুদ খান বলেন, আমরা এসেছি আমাদের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষ থেকে আপনাদের বরণ করতে। আমার বাড়ি বরিশাল, আগে নারায়ণগঞ্জ হয়েই যেতে হতো। সেই আগের নারায়ণগঞ্জের স্মৃতি এবং আপনাদের ঐক্যে আমি অভিভূত হয়েছি। নারায়ণগঞ্জে ভালো জুয়েলারি অলঙ্কার বিক্রি হয়। এখানে যারা খারাপ মাল বিক্রি করে তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জুয়েলারির মান উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। আমরা এমন এক ব্যবসায় আছি, যা এ দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

আপনারা স্বর্ণ মেমোর মাধ্যমে নিবেন এবং এনআইডি রাখবেন। তারপরেও পুলিশ হয়রানি করতে আসলে আমরা দেখবো। আপনারা সৎ ভাবে ব্যবসায় করেন। বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর আপনাদের পাশে আছে। যে দোকানে বাজুসের লোগো নেই, সেখান থেকে কেউ জুয়েলারি কিনলে প্রতারিত হতে পারেন।

শুধু ৪০ হাজার নয়, সারা বাংলাদেশে আমাদের ৭০ থেকে ৮০ হাজার সদস্য হবে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাইরেও অনেকগুলো দোকান আছে। তাহলে কেন সদস্য হবে না। শুধু নারায়ণগঞ্জ থেকেই দুই হাজার সদস্য হবে। আমাদের এতো সদস্য যদি হয় আমরা বাজুসের নেতৃত্বে সায়েম সোবহান আনভীর আমাদের পাশে আছেন তাহলে ভয় কোথায়? আমরা সবাই সরকারকে ট্যাক্স দেবো এবং ব্যবসা করবো। আসুন আমরা বাজুসের নীতিকে অনুসরণ করি এবং সবাই সমান রেটে বিক্রি করি। আমাদের কোন সমস্যা থাকবে না। বাংলাদেশেই বছর খানেকের মধ্যে স্বর্ণ তৈরি হবে। আমাদের এ ব্যবসায় সুদিন আসবে।

আমাদের স্বর্ণের রিজার্ভ কম। একমাত্র আমরা যারা জুয়েলার্স এখানে ১০ ভরি করে হলেও কত স্বর্ণ রয়েছে। আমরা ভালো একটা রিজার্ভ গড়ে তুলতে পেরেছি, তাই আমরা সুযোগ-সুবিধা দাবি করতে পারি।

বিশেষ অতিথি বাজুস ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং স্ট্যান্ডিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, যারা বাজুসের চেয়ে কম দামে বিক্রি করে। কম দামে খারাপ মানের পণ্য পাওয়া যায়। আমরা মান ধরে রাখতে চাই। সায়েম সোবহান আনভীর ঐক্যের প্রতীক। সে কোন বিভাজন চায় না। আমি বলতে চাই এখানে নির্বাচিত কমিটি হতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন করে যাবো তারা নির্বাচনের সময় দেবেন। আপনারা সবাই মিলে একটা প্যানেল দিন। আপনারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন আর দ্বিমত থাকলে নির্বাচন করুন। আমি বাজুসের সভাপতির সাথে আসার সময় আলোচনা করে নিয়েছি। আমরা নিরপেক্ষ ও সুন্দরভাবে একটি নির্বাচন পরিচালনা করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, এইচ এম আসলাম সানি নির্বাচন কমিশনার হবেন এবং প্রবীর সাহা আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান হবেন। আপনারা নাম দিবেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে ভোটের কাজগুলো বর্তমান কমিটির সহযোগিতা নিয়ে একটি সুন্দর কমিটি হবে। বর্তমান কমিটি আগামী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত থেকেই সুন্দর ও নতুন কমিটি উপহার দেবেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, নারায়ণগঞ্জে ৪ হাজারের বেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ী আছে বলেছিলেন বাজুস সভাপতি। আমরা এতোদিন ব্যবসা করেও তা বুঝতে পারিনি। তবে যখন আমরা মাঠে নামলাম, দেখলাম ঠিক তার ধারণাই সঠিক। তার এই দূরদৃষ্টি আমাদের উৎসাহিত করে। আগামীতে বাজুসের নিবন্ধন ছাড়া কেউ বৈধভাবে স্বর্ণ ব্যবসা করতে পারবেন না। আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে-মিশে জুয়েলারি শিল্পের ইতিহাস বদলে দিতে চাই। আমাদের নতুন নেতৃত্ব দেশের আইকন সায়েম সোবহান আনভীর জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জন্য ‘গোল্ড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। তরল সোনা রিফাইন করে বিদেশে রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন। আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো।

অতিথিরা আরও বলেন, আমাদের সভাপতির মূল লক্ষ্য সৎভাবে ব্যবসা করা। যেন কোন গ্রাহক আমাদের থেকে প্রতারিত না হয়। গ্রাহক সন্তোষ্টির মাধ্যমে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবো। তার ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা, সৃষ্টিশীলতা ও দূরদর্শিতায় আগামীতে বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে। অদূর ভবিষ্যতে স্বর্ণের বারে লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। বাংলাদেশই ‘গোল্ড ব্যাংক’ হবে।

অতিথিরা বলেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে আছি। আপনারা সাহস করুন ব্যবসায় চালিয়ে যান। আমরা জুয়েলার্সের ব্যবসা করি আমাদের ভাবতে হবে এটা কিভাবে টিকিয়ে রাখবো। আমরা চাচ্ছি ইন্ডাস্ট্রি করতে হবে। আগে আমাদের দোকান ছিল পাশে কারখানা ছিল। এখন তা নেই। এ কারণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নষ্ট হচ্ছে। আমরা যদি এখানে ইন্ডাস্ট্রি করি তাহলে বেকারত্ব কমবে পাশাপাশি গ্রাহকও বৃদ্ধি পাবে।

তারা আরও বলেন, আমরা লেবার তৈরি করতে পারিনি, তাই আমাদের কষ্ট বেশি। আমরা যদি লেবার গড়ে তুলতে পারি, তাহলে আমাদের কষ্ট কমবে। ইন্ডাস্ট্রি করতে যদি কোন অসুবিধা হয় আমরা আপনাদের সহায়তা করবো। আপনাদের সঙ্গে এই যে সম্পর্ক, আমরা নারায়ণগঞ্জে এসেছি আমাদের পরিচিতি হলো, বন্ধন হলো। আপনারা সকলে চেষ্টা করবেন কোয়ালিটি মাল বিক্রি করতে এবং কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করতে।

শহরের চাষাঢ়ার গ্রান্ড হল রেস্টুরেন্টে বাজুসের নারায়ণগঞ্জের ২২০ জন নতুন সদস্যকে বরণ করে নেয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে সদস্যপত্র, বাজুস সার্টিফিকেট, ফুল, আইডি কার্ড তুলে দেন অতিথিরা। 

অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা বাজুসের সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান এনামুল হক খান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান গুলজার আহমেদ, সহ-সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য ও সদস্য সচিব রিপনুল হাসান।




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭