ইনসাইড থট

খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মাদের এখনই ধ্বংস করে দিতে পারবো


প্রকাশ: 24/05/2022


Thumbnail

আমি ঘুম থেকে উঠে সাধারণত প্রথমেই পত্রিকাগুলো পড়ি। শনিবার বাংলাদেশ প্রতিদিন পড়তে গেলে আমি সরাসরি ৪ নম্বর পৃষ্ঠায় চলে যাই। কারণ বর্তমানে বাংলা ভাষাভাষী কলামিস্টদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কলামিস্ট সৈয়দ বোরহান কবীরের লেখা সেখানে ছাপা হয় প্রতি শনিবারে। এই জন্যই আমি তার কলমটা শনিবার প্রথমেই পড়ি। আমি গত শনিবারের (২১ মে) "গ্রিনরুমে এক-এগারোর কুশীলবরা" শিরোনামের কলামটি পড়তে যেয়ে অবাক হয়ে গেলাম। কারণ অনেকেই আক্ষরিক অর্থে পড়েন, কিন্তু ইন বিটুইন লাইনস যে কথাটা বলা হয় সেটা অনেককে লক্ষ্য করেন না। আমি সেটি পড়লাম। অনেকদিন পরে আবার দ্বিতীয়বারও ওই একই আর্টিকেলটি পড়লাম। পড়ে আমার কাছে মনে হলো যে, একটি বিরাট নৌবহরের সাথে একটি ডিঙ্গি নৌকার যেন সংগ্রাম হচ্ছে। এই ডিঙ্গি নৌকাটিতে মাঝি হিসেবে আছেন সৈয়দ বোরহান কবীর। কিন্তু অনেকে বুঝতে পারেনি যে, এই ডিঙ্গি নৌকার মধ্যে টর্পেডো হিসাবে (এটা সিম্বলিক অর্থে বলছি) আছেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। কেননা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এতদিন যে দেশ পরিচালনা করছেন, এটা কিন্তু তার দর্শনের কারণেই এবং তিনি দর্শন দিয়ে ক্ষমতায় যেরকম টিকে আছেন, তেমনিভাবে দেশের মঙ্গলও করে চলেছেন।

এখন তিনি যেহেতু এমন একটি পর্যায়ে এসেছেন যে, এই দার্শনিক শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করা সম্ভব নয়। সম্ভব নয় এই কারণে যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক জানেন যে, কোথায় কোথায় কিভাবে তার যে সংগ্রাম, তার যে দেশপ্রেম, তার যে জনগণের ক্ষমতায়ন এরকম একের পর এক সবকিছু করতে হবে, তার জন্য তার একটি রোডম্যাপ আছে। সেই রোড ম্যাপটা যাতে লোকের দৃষ্টি থেকে দৃষ্টিভ্রম হয়, সেই জন্যই খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মাদের অনেকের নাম সৈয়দ বোরহান কবীর তার লেখায় লিখে দিয়েছেন এবং খুব নির্মোহভাবে লিখেছেন। সামান্যতম কন্সেশন করে লেখেননি। যার জন্য আমি ভাবলাম যে, এই অবস্থাতে অন্ততপক্ষে এই যে ডিঙ্গি নৌকার মাঝি সৈয়দ বোরহান কবীর তিনি যা লিখেছেন তার উপরে একজন পাঠক হিসেবে আমারও কিছু প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত। এটা সেইভাবে দেখলে বলা চলে যে, এটি একজন পাঠকের প্রতিক্রিয়া। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তার একটি নবীন সহকর্মী গোষ্ঠী গড়ে তুলেছেন। তারা সকলেই সমান শক্তির নয়। হাতের পাঁচটা আঙুল যেমন সমান হয় না, কিন্তু পাঁচটা আঙুল মিলে সবকিছুই ধরা সম্ভব, তারাও এরকম। 

এখানে সব নাম উল্লেখ করতে করা সম্ভব নয়, তাই আমি প্রথমে বলব যে এখানে আছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, এখানে আছেন হাছান মাহমুদ, এখানে আছেন বাহাউদ্দিন নাছিম, এখানে আছেন মির্জা আজম, এখানে জনাব আব্দুর রাজ্জাক এবং আব্দুর রহমান, জুনিয়রদের মধ্যে এস এম কামাল এরকম অনেক নাম উল্লেখ করা চলে। এই টিমের বাইরে দুই-একজন সাইডলাইনে কেন বসে আছে, নাকি বাসিয়ে রাখা হচ্ছে, এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। যখন আমি লিখেছি যে, আমি প্রতিহত করবো। আমি বলতে এই যে আমি যে নাম উল্লেখ করলাম এরা সহ এই সমগ্র শক্তি। এখানে সিম্বলিক অর্থে আমি। 

আমি মনে করি যে, নেত্রীর যে কর্মীবাহিনী, সেই কর্মীবাহিনীর ভিতরে অধিকাংশ কর্মীবাহিনীর ভিতরে নেত্রীর বিষয়ে তাদের জীবন দিতে কোনরূপ দ্বিধাদ্বন্দ্ব নাই। এর মধ্যে ২-১ জন খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মা এদিকে-ওদিকে ঢুকে নাই এইটা আমি হলফ করে বলতে পারি না। এটা সম্ভব। কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভিতরে আবার খন্দকার মোশতাকের মতো লোক নাই। অর্থাৎ শতকরা দেশের ৮০ ভাগ লোক দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পক্ষে জীবন দিতেই প্রস্তুত। শুধু সংগ্রাম করতে নয়। আমি আবার পুনরাবৃত্তি করে বলছি, জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি এটি নিজে দেখেছি। সুতরাং এইখানে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের সাথে ওই বজরা নিয়েই আসুক, আর খন্দকার মোশতাকের দলবলরা (যারা পেতাত্মা) তারা নতুন কোনো দোকান খুলে বসুক, কোনো লাভ হবে না। ১৯৭৫ আর ২০২২ এবং ২৩ একসময় নয়। আমি ১৭ মে আমার একটি লেখায় লিখেছিলাম যে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক কিভাবে তিনি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠলেন।

গত শনিবার (২১ মে) সৈয়দ বোরহান কবীর নাম দিয়ে আরও পরিষ্কার করে লিখেছেন। তবে যে সাহসের সাথে তিনি এই কলমটা লিখেছেন, আমি মনে করি এরকম সাহস নিয়ে নাম নিয়ে লেখার লোক আমার জানামতে কেউ নাই। এটি একমাত্র সৈয়দ বোরহান কবীরের পক্ষেই সম্ভব। তিনি সেই দায়িত্বটাই পালন করেছেন। মনে হচ্ছে যে, নেত্রী এতো মিডিয়া দিলেন, সব মিডিয়াগুলো কি ব্যবসায় চলে গেল? পত্রিকা খুললেই, মিডিয়া খুললে কোথাও তো দেখা যায় না যে, দেশের এতো উন্নতি হচ্ছে, এতো কিছু হচ্ছে। অথচ এরা একপেশে সব লেখা লিখছে। অর্থাৎ জনগণের দৃষ্টিকে আসলে এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার থেকে দূরে নিচ্ছে। আমি এই প্রসঙ্গে উদাহরণের কারণে একটা ঘটনা বলি। যখন ১/১১ হয়, আমার নেত্রীর কাছে যেতে কোনো অ্যাপোয়েন্টমেন্ট কখনোই লাগেনা। তিনি তখন ধানমন্ডি পাঁচ নম্বর থাকেন। আমি গিয়েছি তার বাসায়। তখনই তিনি উপর থেকে নিচে নামবেন। আমাকে দেখে কুশলাদি বিনিময় করে সেখানে উপস্থিত তোফায়েল আহমেদসহ আরও ২ জন নেতাকে বললেন, এই ১/১১ এর যারা, এরা কিন্তু রাজনীতিবিদদের অবশ্যই এইবার শেষ করে দিয়ে এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর নামে যারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে না, তারা ক্ষমতায় আসার একটি পায়তারা করবে।

তখন আমার মনে আছে, তখন নেতারা বললেন, আরও কিছু দিন দেখে। কারণ এখন জনগণ আমাদের পক্ষে নাও থাকতে পারে। কিন্তু তখন নেত্রী খুব রেগে গেলেন। বললেন যে না আমাদের এখনই লড়তে হবে। এর কয়েক দিন পরে তিনি আমার চেম্বারে আসেন এবং তখন মিডিয়া তার কথা জন্য শোনার জন্য পাগল। আমাকে তিনি বললেন, শুধু চোখ দেখাতে যাবো। কোন মিডিয়া না। আমি বললাম যে, ঠিক আছে। এদিকে আমি সমস্ত মিডিয়াকে বললাম যে, নেত্রী আসবেন, চলে আসুন। তিনি আমার চেম্বার থেকে যখন বের হবেন, তখন তিনি দেখেন তার ফিজিক্যালি নামার উপায় নাই, এতো মিডিয়া। তখন ইতোমধ্যে তার সাধারণ সম্পাদককে এরেস্ট করা হয়েছে। শেখ সেলিমকে এরেস্ট করা হয়েছে। তিনি তখন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা শুরু করলেন। তিনি খুব কঠিনভাবে একটা সময়ে এসে আস্তে আস্তে গলার স্বর বাড়াতে শুরু করলেন এবং তার যে মেসেজ সেটাও খুব কঠিনভাবে দেওয়া শুরু করলেন। তিনি বললেন যে, এদের রুখে দিতে হবে। গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। তার আবার চার-পাঁচ দিন পরে তিনি হাসপাতালে দেখতে গেলেন গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিনকে।

তারপর আবার মিডিয়ার জিজ্ঞেস করলো। এইবার আরও কঠিনভাবে তিনি যারা অসাংবিধানিক পথে এসেছে তাদেরকে বললেন এবং তখন সবাই বললো যে এখন দুই-একদিনের মধ্যেই তিনি এরেস্ট হবেন। তার তিন-চার দিন পরেই তাকে এরেস্ট করা হয়। কিন্তু যে সত্যিকারে বাঘের বাচ্চা তাকে কোনোদিন খাঁচায় ভরে রাখা যায় না। দ্বিতীয়ত, যার রক্তের ভিতরে দার্শনিক চিন্তা-ভাবনা আছে, তিনি ঠিকই জানেন কিভাবে কি করতে হবে। তিনি মুক্তও হলেন এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসে পর্যন্ত জনগণের ম্যান্ডেটই তিনি আছেন। কিন্তু পিছনের দরজা দিয়ে না। সুতরাং এখন বিরোধীরা ক্ষমতায় আসতে পাগল হয়ে গেছে। আসলে এই মুস্তাকের প্রেতাত্মারা এখন পাগল। এই পাগলরা সংগ্রাম করতে চাচ্ছে বা ক্ষমতা থেকে সরাতে চাচ্ছে একজন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ককে। এটা কোনদিনও সম্ভব না। বিশ্বের ইতিহাস এ কথা বলে না। সুতরাং আমি সৈয়দ বোরহান কবীরকে আবারো ধন্যবাদ দিয়ে বলতে চাই যে, তুমি আমার ছোট ভাই, তুমি আজকে যেই মেসেজটা দিলা জনগণকে, এই মেসেজটা জনগণ পেয়ে গেল এবং সবাই সজাগ হয়ে গেল এবং এর ফলে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাত আরও শক্তিশালী হলো।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭