ইনসাইড বাংলাদেশ

শিল্পী সমিতি কেন উপহার দেবে, প্রশ্ন ইলিয়াস কাঞ্চনের


প্রকাশ: 24/05/2022


Thumbnail

আগে যারা সমিতিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা সমিতির ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। যে অভিযোগগুলো শিল্পীরা করেছে এটি কী শিল্পী সমিতির কাজ? কারো সমস্যা থাকলে তারা সমিতিতে এসে যোগাযোগ করে সমস্যার কথা বলবে। তার সমস্যা তাকেই এসে বলতে হবে। আমরা কী পাঁচশো শিল্পীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেব নাকি। এটা সম্ভব না। এ রকম সিস্টেমও নেই।

শিল্পী সমিতি কেন উপহার দেবে? আমি নতুন নয়, এর আগেও সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। সেসময় তো আমি এ ধরনের নিয়ম দেখিনি। এগুলো করেছে (জায়েদ-মিশা) শুধুই তারা ভোটের কারণে। শিল্পী সমিতি শিল্পীদের সম্মানের জায়গা। সেই জায়গাটি নষ্ট করে ফেলেছে। এ ধরনের অনিয়ম, সম্মানহানিকর বিষয় অত্যন্ত আমি করতে দেব না। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সদস্যদের কিছু অভিযোগ প্রসঙ্গে একান্ত আলাপে এভাবেই বললেন সমিতির ২০২২-২০২৪ মেয়াদের সভাপতি বরেণ্য অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।

শিল্পী সমিতির কার্যক্রম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আমরা তিনটি মিটিং করেছি। তবে জায়েদ খান ছলনার আশ্রয় নেয়ার কারণে একটি মিটিং বৈধ নয়। কিন্তু নিপুণকে সঙ্গে নিয়ে করা বাকি দুটি মিটিং বৈধ। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনকে সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করছি। সবাই আমাদের সঙ্গে আছে। যা পূর্বে ছিল না। উভয়ই একে অন্যের সমিতি এড়িয়ে চলত। কিন্তু সেসব এখন আর নেই। শিগগিরই তৃতীয় মিটিংয়ে অংশ নিয়ে নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দেয়া কাজগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।

চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হলেও গত তিন মাসেও সমিতির পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেননি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’খ্যাত এই নায়ক। এ কারণে সমিতির স্বার্থে কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এই অভিনেতা।

গত দুই মিটিংয়ে জায়েদ-মিশা প্যানেলের পাশ করা অনেকেরই মিটিংয়ে অংশ না নেওয়ার কথা জানা গেছে। তৃতীয় মিটিংয়েও অংশ না নিলে সে ব্যাপারে সমিতির অবস্থান কী থাকবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। অন্য প্যানেল থেকে যারা পাশ করেছেন তারা কেন আসেনি আমি বুঝতে পারছি না। তারা কেন একটি পোস্ট কেন্দ্রিক? যেখানে ইলিয়াস কাঞ্চন সভাপতি সেখানে তারা আসতে পারে, তাদের মতামত দিতে পারে। যারা পাশ করেছেন তাদের উদ্দেশ্য ছিল শিল্পীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা।

প্রশ্ন রেখে অভিনেতা বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে নেতৃত্ব দিতে যারা দাঁড়িয়েছে ও পাস করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য ছিল শিল্পীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। এখন যদি তারা (নির্বাচিত সদস্যরা) না আসেন, কাজ না করেন তাহলে দাঁড়ালেন কেন? সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে একটা সমাধান আসবে সেটার জন্য বসে থাকার কি আছে? কাজ হচ্ছে না এই যে, সময় চলে যাচ্ছে এটা তো ঠিক হচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী তিন মিটিংয়ে কেউ অংশ না নিলে তার সদস্যপদ থাকে না। তারপরও কিছু শর্ত থাকে, কিছু ভদ্রতার বিষয় থাকে। পরবর্তী মিটিংয়ে না আসলে হয়ত  তাদের চিঠি দেয়া হবে। উত্তর না দিলে কিংবা ব্যাখ্যা নিয়ে চতুর্থ মিটিংয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে তার উপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চলচ্চিত্রের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন জানিয়ে এ সময় তিনি উল্লেখ করে আরও বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে মিটিং করেছি। নতুন সিনেমার প্রমোট করছি। যেটা আগে কল্পনাও করা যেত না। অনেক অনিয়মই আমরা নিয়মে আনার জন্য চেষ্টা করছি। এসব ব্যাপার অব্যাহত আছে।

জেনেছি, এবারের ঈদুল ফিতরের সিনেমা ভালো চলছে। দীর্ঘদিন পর দর্শকও প্রেক্ষাগৃহ মুখী হয়েছে। এটা আমাদের জন্য স্বস্তির খবর। চলচ্চিত্রের কথা ভেবে আমারও প্রডাকশনে হাত দিতে হবে। কথায় নয়, আমি কাজে বিশ্বাসী। অন্যেরে উপদেশ দেব নিজে কিছু করব না তা হয় না। আমি নিজেও শিগগিরই সিনেমা পরিচালনায় আসছি। বর্তমানে গল্প ঘষা-মাজার কাজ চলছে। এছাড়া গল্প পছন্দ হলে সিনেমায় কাজ শুরু করব। নিজে না করে অন্যকে বলব এটা নেতার কাজ না। যদিও আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা এটা করছে। তারা মানুষকে মুখে বলে নিজেরা করে না। -বললেন ইলিয়াস কাঞ্চন।

এদিকে, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সম্প্রতি কলকাতায় নায়করাজ রাজ্জাক নামাঙ্কিত আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। তিন দশকের বেশি লম্বা ক্যারিয়ারে সাড়ে তিন শর বেশি সিনেমা ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের জন্য তাকে এই সম্মান দিয়েছে দেশটির বেঙ্গল ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন চেম্বার অব কমার্স (বিএফটিসি)।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭