ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের মূল শক্তি জনগণ ও সংগঠন: হানিফ


প্রকাশ: 24/05/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, আওয়ামী লীগের শক্তি ক্ষমতা নয়, আমাদের মূল শক্তি জনগণ ও সংগঠন। এই দু’টির কোনো একটিও যদি আমাদের ক্ষতি হয় বা ভাটা পড়ে তাহলে আমাদের বিপর্যয় নেমে আসবে। যদি সংগঠন দুর্বলতা হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের বিপর্যয় নেমে আসবে। আবার যদি জনগণের সমর্থনের বিপর্যয় হয় তাহলে দলের বড় ক্ষতি হবে।

মঙ্গলবার (২৪ মে) রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, এ কারণে আওয়ামী লীগে নেতা-কর্মীদের মাথায় রাখতে হবে, আমাদের মূল শক্তি এদেশের জনগণ। জনগণের আস্থা ও সংগঠন যদি আমরা শক্তিশালী করতে পারি তাহলে আওয়ামী লীগকে কেউ কখনও পরাজিত করতে পারবে না। সে শক্তি বাংলাদেশে নাই। টানা ১২ বছরের বেশি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এই সময় দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির মাধ্যমে দেশকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি।

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি সারাক্ষণ বলে বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা হবে? তারা এসব বলে কারণ তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। তারা সব সময় প্রার্থনা করে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো ধংস হয়ে যাক। তাদের প্রভু পাকিস্তান। পাকিস্তানের অর্থনীতি ধীরে ধীরে অধঃপতনের দিকে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের সকল দিক থেকে এগিয়ে আছে এটা বিএনপির পছন্দ হয় না। বিএনপি নেতারা আজ কাল মাঠে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আর বাংলাদেশের অর্থনীতি এক নয় উল্লেখ করে হানিফ বলেন, শ্রীলঙ্কার ভিত্তি ছিল দু’টি। পর্যটন আর কৃষি। বিগত দুই বছর বিশ্ব করোনা মহামারিতে বিপর্যস্থ ছিল। এই সময় সারাবিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এতো পর্যটন খাতে ধস নামে। আর এতে করে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা বিদায়ী সরকার হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা অর্গনিক ফুড উৎপাদন করবে। এতে দেখা গেছে, এক বিঘা জমিতে যেখানে ২০ মণ ধান হতো সেখানে সার না দেয়ার কারণে ৪ থেকে ৫ মণ ধান হয়েছে। এই যে খাদ্য ঘটাতি হয়েছে। এসব কারণে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। আর খাদ্য আমদানিও অনেক ব্যয়বহুল। এই দুটি কারণে তাদের অর্থনীতি বিরাট ধস নেমে যায়।

হানিফ বলেন, বাংলাদেশে অর্থনীতি মূল ভিত্তি হলো কৃষি, গার্মেন্টস ও ফরেন রেমিটেন্স। এই করোনার সময়েও আমার আমাদের কৃষি খাত সচল রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমাদের কৃষকরা দুর্যোগের সময়েও সার পেয়েছে, কীটনাশক পেয়েছে তাদের ফসল উৎপাদন হয়েছে। এমনকি দুর্যোগের সময়ে যখন কৃষকরা ধান কাটতে পারছে না তখন আমাদের নেতা-কর্মীরা তাদের ধান কেটে দিছে। যার কারণে আমাদের যে খাদ্য ঘাটতি হওয়ার শঙ্কা ছিলো সেটা কিন্ত হয়নি।

আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেছিলাম তখন ৪০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য ঘাটতি ছিলো। আমরা সাড়ে ৩ বছরের মধ্যেই কিন্ত খাদ্য ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। পোশাক শিল্প আমাদের মূল রফতানির আয়ের জায়গা। প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমরা এক্সপোর্ট করি। করোনাকালীন সময় পুরো বিশ্বে শিল্প খাতে একটা বড় ধাক্কা লাগে। আমরাও ভাবছিলাম গার্মেন্টস খাতে বড় ধাক্কা লাগে কি-না। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আল্লাহর রহমতে আছে। কারণ তিনি মনে প্রাণে এই দেশটাকে ভালোবাসেন। সকাল থেকে সারাদিন এই দেশের উন্নয়নের জন্য জনগণের জন্য অনেক কাজ করেন বলে আল্লাহ তাকে অনেক সহায়তা করেন। আমরা পোশাক শিল্প খাতে আমাদের ধাক্কাটা তেমন লাগেনি। যে ধাক্কাটা লেগেছিলো তা আমরা এই এক বছরে পুষিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। এখনো আমাদের গার্মেন্টস শিল্প খাত অনেক চাঙ্গা। এই খাতে আমাদের কোনো সমস্যা নাই।

তিনি বলেন, ফরেন রেমিটেন্সে আমাদের কিছুটা ঘাটতি দেখা দিযেছিল। কারণ করোনার সময় মধ্যপ্রাচ্যেসহ অনেক দেশেই কর্মচারী ছাঁটাই করেছে। অনেকে শঙ্কা করেছিল রেমিটেন্স বোধ হয় আমাদের একটা বড় ধাক্কা আসবে। আল্লাহর রহমতে এই রেমিটেন্স ধাক্কাটা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। আমরা রেমিটেন্স নিয়ে মোটামোটি একটা সন্তোষজনক অবস্থায় আছি। এই তিনটা খাতে প্রমাণিত বাংলাদেশে অর্থনীতিক খাতে মন্দা বা শঙ্কা হওয়ার মতো কোনো কিছু নেই। বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না। বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যথেষ্ট শক্তিশালী সেটা প্রমাণিত হয়েছে।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খানম এমপি ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭