গরমে নাকাল সারা দেশের মানুষ। মাঝে মাঝে কিছুটা বৃষ্টি হলেও, আবার কিছুক্ষণ যাওয়ার পরে অবস্থা আবার আগের স্থানে পৌঁছে। ফলে এবার দেশের মানুষ গরমের প্রভাব খুব ভালোভাবেই বুঝতে পাচ্ছে। মূলত আবহাওয়ার তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহের তাপমাত্রাও বাড়তে থাকে। তাই এ সময় কেউ যদি নিজের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার কৌশল আয়ত্ত করতে পারেন তাহলেই অসুস্থতার হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। তাহলে আজ দেখে নিন এই গরমে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখবেন যেভাবে।
দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার কৌশল:
১. আয়ুর্বেদ বলে, গরমকালে মানুষের পিত্ত তীব্র হয়ে ওঠে। তাই শরীরে শীতলভাব বজায় রাখতে চাইলে সবার আগে পিত্তবর্ধক খাবারগুলিকে বাদ দিতে হবে। শীতের দিনের সবজি গাজর, ফুলকপি, বিট, বাঁধাকপি বাদ দিন গ্রীষ্মের খাদ্যতালিকা থেকে। বদলে রাখুন শসা, ঝিঙা, পটল, কুমড়া, এঁচোড়ের মতো সবজি ও তরমুজ, ফুটি, বেল, আপেল ইত্যাদি ফল। আম উঠতে শুুরু করেছে, আমও খেতে পারেন নিশ্চিন্তে। প্রতিটি ফল ও সবজিতেই পানির পরিমাণ বেশি, তা শরীর শীতল রাখবে। সেই সঙ্গে দইয়ের ঘোল, ডাবের পানি ইত্যাদি খেতেও ভুলবেন না। চিজ, তেল-মশলা, ভাজাভুজি, বেশি মরিচ, কমলালেবু ইত্যাদি যতটা কম খাবেন, ততই ভালো।
২. খাওয়ার মাঝে খুব বেশিক্ষণের গ্যাপ দেবেন না। খালি পেটে অ্যাসিড, পিত্ত সব কিছুরই বাড়াবাড়ি ঘটে। দিনের মাঝখানে (অর্থাৎ লাঞ্চ ব্রেকে) সবচেয়ে ভারী খাবার খান, রাতের দিকে হালকা খেলেও চলবে। বেশি করে সালাদ আর ফলমূল খাওয়া উচিত এ সময়ে।
৩. মাথায় আর গায়ে খাঁটি নারকেল তেল মেখে গোসল করুন, আপনার ত্বকে হিট র্যাশ বেরনোর মাত্রা নিশ্চিতভাবেই কমবে। নারকেল তেল সানস্ক্রিন হিসেবেও কাজ করে, তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে তার বহুল ব্যবহার দেখা যায়।
৪. গরমের দিনে এমনিতেই চা-কফি খেতে ইচ্ছে করে না। ঘরের তাপমাত্রায় শরবত খান। বরফ-ঠান্ডা পানীয় থেকেও দূরে থাকুন, তাতেও শরীর গরম হয়।
৫. দুঃসহ গরমে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় প্রচুর পরিমাণ পানি। সেই পানি পূরণ করতে আপনাকে বাড়তি পানি পান করতে হবে। শরীরের কোষগুলো সজীব রাখতে হলে চাই পানি।
৬. বিভিন্ন মাংস, ডিম ও চর্বিজাতীয় খাবারের কথা ভুলে যান। তরল খাবার, ডাবের পানি, তরমুজ খান বেশি করে।
৭. এ গরমে পোশাক পরুন হালকা রংয়ের। গাঢ় রংয়ের পোশাক রোদ শোষণ করে বলে গরম অনুভূত হয় বেশি। সবচেয়ে ভালো হয় সাদা রংয়ের পোশাক হলে। গরমে সিনথেটিক পোশাক পরবেন না। সবসময় সুতি ও ঢিলা পোশাক পরার চেষ্টা করুন।
৮. চেষ্টা করুন ছায়ার মধ্য দিয়ে চলতে। রোদে গেলে মাথায় রাখুন চওড়া ক্যাপ, স্কার্ফ অথবা ছাতা। রিকশায় চড়লে হুড উঠিয়ে চলুন। ত্বকে মাখুন সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন।
৯. খুব ভোরে বা সন্ধে নামার পর যখন প্রকৃতি শীতল হয়েছে, তখনই একমাত্র ভারী ব্যায়াম করুন। রোদের মধ্যে ভারী ব্যায়াম করলে মাসলে ক্র্যাম্প ধরা থেকে আরম্ভ করে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
১০. সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন। ধূমপানে শরীর আরও গরম হয়ে যায়।